হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরের শুরুতে এটি চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুইঁয়া।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার কুর্মিটোলায় বেবিচকের সদর দপ্তরে সংস্থাটির বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি এবং তৃতীয় টার্মিনালের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা আছে এ বছরের মধ্যে টার্মিনালটা উদ্বোধন করার।
সেটা যেকোনো মূল্য। কারণ এখানে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখানে ২.১ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে, যা জাইকা থেকে ঋণ নিয়েছি এবং সরকারও কিছু টাকা দিয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে অক্টোবরে শুরু করব।
অক্টোবরে না পারলে নভেম্বরে যেকোনো মূল্যে অপারেশনে যাব।’
তিনি বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের কার পার্কিং ঠিক জায়গায় রাখা হয়নি। ফলে সেটি সামনে রাখা হয়েছে। এটি সামনে না হলে ভবনের সৌন্দর্য আরো বাড়ত।
কিন্তু জায়গা ছিল না হয়তো এ কারণে করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘শুধু ভিআইপি ও ভিভিআইপি টার্মিনালের কাজ একটু বাকি আছে। এ ছাড়া পুরো টার্মিনালের কাজ আমরা প্রায় শেষ করে ফেলেছি। আগামী সপ্তাহে টার্মিনালের কিছু অংশ পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হবে।’
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ আমরা আইএলএস-২ ক্যাটাগরির সুবিধা পাব।
বিমান ওঠা-নামার যে লাইট ফিজিবিলিটি, তারও পুরোপুরি সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এখন বিশ্বমানের যাত্রী সেবা দেওয়া হচ্ছে। সব সংস্থাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সেবার মান বাড়িয়েছে। দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় এই সেবার কোনো ঘাটতি হবে না।’
বিমানবাহিনীর দায়িত্ব পালন বিষয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে তারা এসেছেন, প্রয়োজন শেষ হলে আবার তারা ফিরে যাবেন বাহিনীতে।’
তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দর শুধু সিভিল এভিয়েশনের নয়, এ সম্পদ দেশের সবার। সুতরাং এর সুনাম এবং রক্ষা করার দায়িত্ব দেশের সব নাগরিকের। অতএব আন্তর্জাতিক মহলে এর সুনাম ক্ষুণ্ন হলে হলে দেশেরই ক্ষতি হবে।’
সিলেট, কক্সবাজার, যশোর, বগুড়া, সৈয়দপুর বিমানবন্দরের উন্নয়ন নিয়েও কথা বলেন বেবিচক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বগুড়া বিমানবন্দর উন্নয়ন করে সেখানে বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান, এয়ার ট্রান্সপোর্ট ও ম্যানেজমেন্ট (এটিএম) এয়ার কমোডর কে এম জিয়াউল হক, সদস্য (নিরাপত্তা) এয়ার কমোডর মো. নাইমুজ্জামান খান, এস এম লাভলুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
এ সময় যাত্রী এবং তাদের স্বজনদেরও আইন মানার বিষয়টিও বারবার স্মরণ করিয়ে দেন বেবিচক চেয়ারম্যান। মঞ্জুর কবীর ভুইঁয়া বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এখন বিশ্বমানের যাত্রীসেবা দেওয়া হচ্ছে। সব সংস্থাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সেবার মান বাড়িয়েছে। দুই-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় এ সেবার কোনো ঘাটতি হবে না। তবে যাত্রী ও স্বজনদের আইন মানার বিষয়টি তিনি বার বার স্মরণ করিয়ে দেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান দেশের কয়েকটি বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এ কাজগুলো আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছি। এ উন্নয়ন কাজগুলোর অধিকাংশ এ বছর শেষ হবে।
এসময় তিনি সিলেট, কক্সবাজার, যশোর, বগুড়া, সৈয়দপুর এয়ারপোর্টের টার্মিনাল নিয়েও কথা বলেন। চলমান সব প্রকল্পের কাজ এ বছরই শেষ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়।
আপনার মতামত লিখুন :