বাংলাদেশকে দুর্বল, নতজানু ও শক্তিহীন ভাবার কোনও অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, “সবার উপরে দেশ— এটা থেকে আমরা কখনও বিচ্যুত হব না। বাংলাদেশকে দুর্বল, নতজানু ও শক্তিহীন ভাবার কোনও অবকাশ নেই।”
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চলছে। হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা— এসবের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ভারতের এই সমস্ত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার যে আত্মমর্যাদাশীল সাহসী ভূমিকা নিয়েছে, তার প্রশংসা করা হয়েছে এবং সরকারের সঙ্গে সলিডারিটি প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, একইসঙ্গে ভারতের এইসব প্রচারণার বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালীভাবে এবং আরও বেগবানভাবে মোকাবিলার কথা বলা হয়েছে। এজন্য আমাদের যারা প্রবাসী, বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা এবং বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদের যোগাযোগ দক্ষতা এবং আইনি দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে, সেটা প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে। রামপালসহ বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি রয়েছে, সেগুলো বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যে অর্থনৈতিক নিপীড়ন, সাংস্কৃতিক আধিপত্য, অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা, সেটার নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল এবং সৎ প্রতিবেশী আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশবিরোধী যে অপ্রচারণা চালাচ্ছে ভারত, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। একইসঙ্গে যেকোনও উস্কানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, সবাই একটা কথা বলেছেন- আমাদের আর শক্তিহীন, দুর্বল, নতজানু ভাবার কোনওরকম অবকাশ নেই। যেকোনও ধরনের অপপ্রচারণ এবং উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। আমরা সজাগ থাকব, ভবিষ্যতে যেকোনো প্রচারণা এলে, উসকানি এলে আমরা আমাদের ঐক্যকে আরও বেগবান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।
তিনি বলেন, প্রস্তাব আকারে এসেছে, গোটা জাতি ভারতের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে যে ঐক্যবদ্ধ আছে— সবাই মিলে একটা সমাবেশ করতে পারে কি না, সবাই মিলে পলিটিক্যাল একটা কাউন্সিল করতে পারে কি না, নিরাপত্তা কাউন্সিল করতে পারে কি না, এজন্য প্রস্তাবনা হয়েছে। এছাড়াও একটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে- সেটা হচ্ছে, আমাদের মধ্যে মত-পথ-আদর্শের ভিন্নতা থাকবে, আমাদের রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবে, অবস্থার ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু দেশ ও সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক। বিডি-প্রতিদিন ও জাগোনিউজ২৪
আপনার মতামত লিখুন :