রাজধানীর ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী সড়ক এলাকায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৬ প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিজিবি সদর দপ্তর থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ডেমরা ও যাত্রাবাড়ী সড়ক এলাকায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ পরিস্থিতি আরও শান্ত করতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকার পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে শুরু করে। বিকেল ৩টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও উৎসুক জনতা অবস্থান নিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনী, র্যাব, এপিবিএন ও পুলিশের কয়েকশ সদস্য রয়েছেন। এ সময় সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা আশপাশে ছিল না।
মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ভেতরে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের বেশ কিছু শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে বলে জানা যায়। তাদের উদ্ধারে বিকেল সোয়া ৩টায় যৌথবাহিনী মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে কলেজটির শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়ে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ভেতরে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা আটকে আছে।
বিকেল চারটার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথাও জানিয়েছিলেন ডিসি ছালেহ উদ্দিন।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের সামনে ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মুহূর্তেই যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে লাঠিসোঁটা হাতে সোহরাওয়ার্দী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে জড়ো হন। পরে তারা মিছিল নিয়ে কবি নজরুল কলেজের সামনে আসেন। এ সময় নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ মাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানালে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডেমরা সড়ক সংলগ্ন মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান। এ সময় মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল। পূর্বঘোষিত সেই ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির মধ্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ও পাশের সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালান মোল্লা কলেজসহ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ কেন্দ্রে অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ওই হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আপনার মতামত লিখুন :