মনিরুল ইসলাম : নির্বাচনের তারিখ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করবেন। আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিষয়ে উচ্চ আদালত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
তারা বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্য তাদের ব্যক্তিগত।
রোববার রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সরকারের আপিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তুলে ধরে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, আমরা আশা করি এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাবো।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হওয়া ঘিরে চলা ঘটনাকে সমন্বয়হীনতা বলে মনে করেন কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি এখন আদালতে আছে। সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান চায়।
অপরদিকে, ‘লন্ডনে একজন উপদেষ্টা বলেছেন, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে’, বিষয়টি উল্লেখ করে নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, এখন পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টা বা তার দফতর থেকে নির্বাচনের তারিখ দেওয়া হয়নি। নির্বাচনের প্রকৃত তারিখ প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করবেন। ওনার পক্ষে থেকে দেওয়া হবে। বাকি যারা বলেছেন, তারা হয়তো নিজেদের মতামত দিয়েছেন, তবে সেটা কংক্রিট না।
এক প্রশ্নের জবাবে আজাদ মজুমদার বলেন, গুম কমিশন এখনও কোনও সুপারিশ সরকারকে দেয়নি। আগামী (ডিসেম্বর) মাসের মাঝামাঝি সরকারকে একটি প্রতিবেদন তারা দেবে। সেই প্রতিবেদনের মাধ্যমে কোনও সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলে সরকার নেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আজাদ মজুমদার বলেন, জনপ্রশাসনে বদলি-পদোন্নতি স্বাভাবিক বিষয়। যেহেতু দেশে একটা পটপরিবর্তন হয়েছে, এ কারণে জনপ্রশাসনের রদবদল জনদাবি। সরকারও মনে করেছে, কাজে গতিশীলতা আনার জন্য প্রশাসনে কিছু অবশ্যম্ভাবী রদবদল করতে হবে। সরকার সেই অনুযায়ী কাজ করছে। শূন্যপদে উপযুক্ত কাউকে মনে করা হলে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। প্রশাসনে গতিশীলতা আনার জন্য নিয়মিত করে যাবে।
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজাদ মজুমদার বলেন, আপনারা দেখেছেন এর আগের সরকার কীভাবে ভিন্নমত দমন করেছে। ভিন্নমতাবলম্বীদের নানাভাবে হয়রানি করেছে। বিদেশে আসা-যাওয়া থামাতে সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মীসহ ভিন্নমতাবলম্বীদের বিশাল তালিকা ইমিগ্রেশনে দেওয়া হয়েছিল। সরকার চেষ্টা করছে তালিকাটা হালনাগাদ করতে। সেখানে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ বা প্রমাণ থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগ না থাকলে সবাই স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারবে। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় এ বিষয়ে সরকার সচেতন আছে। নিউএজ পত্রিকার সম্পাদকের বিষয়ে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে, অন্য কোনও বিষয়ে সরকারের নজরে আনা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সরকার এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করবে। সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা কথা বলে একটি নীতিমালার আলোকে অবশ্যই সেখানে ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিকদের নাম থাকবে না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে বলা হয়—কাউকে বিদেশগমনে বাধা দিতে হবে বা কোর্টের অর্ডার থাকে। পুরো বিষয়টি যাতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মধ্যে থাকে, দেশের সব মানুষের বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকে, এগুলো স্পষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে আসবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজাদ মজুমদার বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যু কমে আসবে সেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :