শিরোনাম
◈ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে যা বললেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ◈ নির্বাচনের আগে শর্ত দিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ হাজারীবাগের গণকটুলি সিটি কলোনী এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান: আটক ১৫ ◈ নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ বিদেশে পাচার হওয়া ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সহায়তা দেবে ◈ অভিযুক্ত যতই শক্তিশালী হোক, যে বাহিনীরই হোক তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই : প্রধান উপদেষ্টা ◈ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফারুকীর সাক্ষাৎ ◈ অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় সময়ের একটি দিনও বেশি থাকতে চাই না :মৎস্য উপদেষ্টা ◈ লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে সরে নিউইয়র্কে যেতে পারে অলিম্পিক ক্রিকেট ◈ ১৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৫ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০৪:২০ দুপুর
আপডেট : ১৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রেলপথের অসমাপ্ত কাজ নিয়ে বিপাকে রেল পালিয়েছে তমা কন্সট্রাকশন

এম আর আমিন, চট্টগ্রাম : আওয়ামী সরকারের আমলে বাজেটে সব থেকে বেশি বরাদ্দ পেত পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাত। নতুন রেলপথ, সড়ক, সেতু নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। আর এসব অবকাঠামোগত কাজগুলো করানো হতো তৎকালীন সরকারের পছন্দের কিছু ঠিকাদারদের দিয়ে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন ও ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এই দুই প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে রেলের সব মেগা প্রজেক্টগুলো নিয়ে।
 
বাংলাদেশ রেলওয়েতে কাজ করা স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। লাকসাম-চিনকি আস্তানা, কাশিয়ানি-গোপালগঞ্জ রেলপথসহ রেলওয়ের একাধিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে রেলের চলমান দুটি প্রকল্পের কাজ করছে ম্যাক্স। এর মধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে চীনের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে ৩ হাজার ৫০২ কোটি টাকার। আর আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ প্রকল্পে চীন ও বাংলাদেশের দুই প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকার কাজ করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড।
 
রেলের আরেক শীর্ষ ঠিকাদার তমা কনস্ট্রাকশন। দোহাজারী-কক্সবাজার ও আখাউড়া-লাকসাম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে ৬ হাজার ১৬১ কোটি টাকার কাজ করছে তমা।
 
 
সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের লাইন নির্মাণ মেরামতের কাজ অসমাপ্ত রেখে পালিয়েছে তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এসব অসমাপ্ত কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অফিসিয়ালি নোটিশ দিয়ে তাদের কাছ থেকে কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কয়েকটি কাজের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা।
 
জানা যায়, ২০২১ সালে টেন্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীনে ময়মনসিংহ এলাকায় রেল লাইনের ১৫ কোটি টাকার একটি কাজ বাগিয়ে নেয় তমা কন্সট্রাকশন লিমিটেড। যেটি ২০২৩ সালে শেষ করে কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের জুন অক্রিম হলেও সেই কাজের মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। জুলাই থেকে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতন ও সরকার প্রধানসহ মন্ত্রী এমপিরা পালিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই এই প্রষ্ঠিানের মালিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা কর্মচারিরাও পালিয়ে যায়। ফলে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা বা যোগাযোগ করার জন্য কাউকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান রেলের কর্মকর্তারা। ফলে টেন্ডার সিকিউরিটির (জামানত) ৭০ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই কাজটির পুনরায় এপিপি অনুমোদ করা হয়েছে। আবার টেন্ডারের  মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
 
২০২১ সালে শায়েস্তগঞ্জে ৫ কোটি টাকার আরেকটি কাজ বাগিয়ে নেয়। ২ দফা সময় বাড়ানো হলেও তারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি। রেলের পক্ষ থেকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়ে কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ফলে এটির চুক্তিও বাতিল করা হবে।
 
২০২৩ সালে নোয়াখালীতে ৫ কোটি টাকার আরো একটি কাজ বাগিয়ে নেয় তমা কন্সট্রাকশন। এই কাজটি শুরুই করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।ফলে এটিও বাতিল করে আবার টেন্ডারের অপেক্ষায় আছে।  
 
এসব বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলী জানান, তমা কন্সট্রাকশনের মালিক স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন। অবৈধ ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে টেন্ডার হাতিয়ে নিয়েছে। অনেক কাজ করেছে আবার সরকার পতনের সাথে সাথে এরা সবাই পালিয়ে গেছে। যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে এগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছে রেল। এগুলো পুনরায় এপিপি অন্তর্ভুক্ত করে টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। ফলে রুটিন কাজের বাইরে এটা একটা ঝামেলা। আবার কিছু কাজ থেকে অল্প কাজ করে অতিরিক্ত টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগও ওঠেছে। এসব কারনে তমা’র বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে জানতে চাইলে বলেন, তাদেও সার্টিফিকেট দেয়া হবে না। পরবর্তীতে কোন সময় টেন্ডারে অংশ নিতে চাইলে এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়