শিরোনাম
◈ বক্তব্য প্রত্যাহার করেছেন নুরুল হক নুর ◈ ১৫ বছরের শাসনকে কয়েক সপ্তাহে মোকাবিলা করা সহজ নয়: আসিফ নজরুল ◈ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার? ◈ ফেসবুকে ‘হারপিক’ নিয়ে তোলপাড়, জানা গেল কারণ ◈ উপদেষ্টা মাহফুজের গ্রেপ্তারের ভুয়া তথ্য নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করলেন জয় ◈ ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে যা বললেন বিদ্যা সিনহা মিম ◈ বাবার মারধরে মৃত্যু, ২৫টি হাড় ভাঙা ছিল ফুটফুটে শিশুটির ◈ মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান কী ছিল, যা বললেন আমির (ভিডিও) ◈ কাকরাইলে বড় জমায়েতে সাদপন্থিদের জুমা আদায়   ◈ বেলজিয়ামকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি, ইসরায়েলে হোঁচট খেলো ফ্রান্স

প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৩:১১ দুপুর
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ০৫:০৭ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাকরাইলে বড় জমায়েতে সাদপন্থিদের জুমা আদায়  

বড় জমায়েত নিয়ে কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করলেন তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদপন্থিরা। মসজিদ পূর্ণ হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ছাড়িয়ে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত চলে যায় মুসল্লিদের ভিড়।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নামাজ শুরু হয়ে তা শেষ হয় সাড়ে ১২টায়। পরে মোনাজাতের মাধ্যমে ১২টা ৫০ মিনিটে সড়ক ছাড়েন সাদপন্থিরা।

কাকরাইল এলাকায় দেখা যায়, সকাল থেকেই সাদপন্থিরা মসজিদ এলাকায় আসতে শুরু করেন। আস্তে আস্তে তাদের জমায়েত অনেক বড় হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ভিআইপি সড়কসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। যে লাইন কাকরাইলের আইডিবি ভবন ছাড়িয়ে নয়াপল্টন পর্যন্ত চলে যায়।

জানা গেছে, তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে অনেকটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। পূর্ব ঘোষণা মতোই আজ শুক্রবার সকালে কাকরাইলের মারকাজ মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থান নেন সাদপন্থীরা। এ জন্য ভোর থেকে ওই স্থানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

জানা যায়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্য রূপ নেয়। সেদিন কাকরাইলে দু’দল কর্মীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। চরম বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় গত ৭ বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদের এক অংশে জুবায়েরপন্থিরা ৪ সপ্তাহ ও সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে মসজিদের অপর অংশ জুবায়েরপন্থিরা ১২ মাসই নিজেদের দখলে রাখেন। সাদপন্থিদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে হেফাজত সমর্থিত জুবায়েরপন্থিরা বেশি সুবিধা ভোগ করে আসছেন। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়েও দুই পক্ষের বিরোধ দিনে দিনে তীব্র হচ্ছে।

গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা দুই দফায় আয়োজিত হবে। প্রথম দফার ইজতেমা শুরু হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফায় শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।

তবে গত ১২ নভেম্বর ঢাকার কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে জুবায়েরপন্থীরা। এক সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী বলেন, ‘সাদপন্থীরা হাদিসের অপব্যখ্যাকারী। তাদের দাওয়াত ও তাবলিগে অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই।’

পরের দিন ১৩ নভেম্বর পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থীরা জানান, কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে এমনিতেই জুবায়েরপন্থীরা সারা বছর মাদরাসার নামে আলাদা অবস্থান নিয়ে থাকেন। কিন্তু হেফাজতপন্থী আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থীরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেয়ায় ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।

সাদপন্থীরা আরও জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে উভয় পক্ষের দ্বন্দ্ব নিরসন দরকার। আলেম-ওলামারা এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে পূর্বের মতো কাকরাইল মসজিদ, বিশ্ব ইজতেমা ও সারাদেশে আলাদা আলাদা কার্যক্রম পরিচালনা করলে সংঘাত হবে না।

এছাড়া, কাকরাইল মার্কাজ (তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়) সম্পূর্ণভাবে নিজামুদ্দীনের অনুসারীদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়াসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা।

কিন্তু ১৩ নভেম্বর রাতে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘কাকরাইল মসজিদ ও তাবলিগ বিষয়ে জরুরি বিবৃতি’তে জানানো হয়, ১২ নভেম্বর বর্তমান সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের নেতাদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টার পক্ষ থেকে যৌথভাবে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে তাবলিগের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

ফলে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের বিষয়ে পূর্বের নিয়ম মেনে নিয়ে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ ও কাকরাইলের পক্ষ থেকে সবাই একমত পোষণ করেন।

জানা গেছে, মতাদর্শগত মিল না হওয়ায় যখন তাবলিগ জামাত প্রকাশ্য দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে, তখন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দুই পক্ষকে আলাদা আলাদাভাবে কাকরাইলের মারকাজে থাকার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে তখন বলা হয়েছিল, জুবায়েরপন্থীরা থাকবে একমাস; বিপরীতে সাদপন্থীরা অবস্থান করবে ১৪ দিন।

সাদপন্থীদের ভাষ্য, সমঝোতা ও ঝামেলা এড়াতে বৈষম্য হলেও তারা সেই প্রস্তাব মেনে মসজিদে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে জুবায়েরপন্থীরা সারা বছরই মসজিদে অবস্থান শুরু করে। সাদপন্থীদের জন্য নির্ধারিত ১৪ দিনের সময় তাদের ছেড়ে দেয়া হতো মসজিদের একটি কর্নার। অনেক চেষ্টা চালিয়েও ১৪ দিনের পুরোটা সময় তাদের সাথীরা মসজিদজুড়ে থাকতে পারেনি। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়