বহুল সমালোচিত সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সম্প্রতি ভারতের কলকাতার ইকো পার্কে দেখা গেছে। বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্যামেরায় দেখা মিলেছে তার। এমন খবর আসার পর পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক এই মন্ত্রী অবৈধভাবে দেশত্যাগ করেছেন। শুধু সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই নয়, আরও অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গেছেন ভারতে। এরপর প্রশ্ন ওঠে, সীমান্ত দিয়ে কীভাবে অবৈধভাবে পালালেন তারা?
এমন প্রেক্ষাপটে বিজিবি বলছে, এর দায় শুধু বিজিবির কেন? অবশ্যই এ নিয়ে তদন্ত হবে, তদন্ত হচ্ছে। কোন বিওপির আওতাভুক্ত সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা পালিয়েছেন, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বিজিবি সদর দপ্তরের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, দেশ থেকে পালানোর ঘটনায় বিজিবির দায় আছে। তবে শুধু কি বিজিবিই দায়বদ্ধ? কোন সীমান্ত দিয়ে কে পালিয়ে গেছেন, তা অবশ্যই তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
ডিজি বলেন, গত ৬ আগস্ট থেকে স্ক্রল দেখেছেন, সীমান্তপথে পালানো রোধে বিজিবিকে সহায়তা করুন। এই নির্দেশনা কেউ বিজিবিকে দেয়নি। নিজ উদ্যোগে করেছি। তখন থেকে আমরা চেষ্টা করছি। তথ্য দেওয়ার যে সব সংস্থা আছে, তারাও যদি তথ্য দেন তাহলে কাজটা সহজ হয়।
মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী আরও বলেন, সবাই কি পালিয়ে গেছে? আমার মনে হয় না। জনবহুল এই দেশে কেউ কেউ আত্মগোপনে আছেন। মাদক ব্যবসায়ী বদিকে ধরার জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি। শোনা গেল তিনি ট্রলারে করে মিয়ানমার গেছেন। কিন্তু গ্রেপ্তার হলেন শীতাকুণ্ড থেকে। একদিকে যাওয়ার আওয়াজ দিয়ে অন্যদিক থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন অনেকে।
ডিজি সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনাদের কাছেও তথ্য থাকে, বিজিবিকে জানান, আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা পালানো রোধে বদ্ধপরিকর।
এ পর্যন্ত তার বাহিনী বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ২২ জনকে আটক করেছে বলেও জানান মেজর জেনারেল সিদ্দিকী।
প্রবল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর কি সীমান্তে ভারতের মনোভাব বদলেছে?
এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ডিজি আশরাফুজ্জামান বলেন, যেসব মাইনোরটি আছে, তারা চলে যেতে পারে- প্রথম থেকে এ ধরনের একটি অপপ্রচার ছিল।
তখন আমরা দেখতে পেয়েছি- বিএসএফ তাদের ক্যাম্পগুলোতে জনবল বাড়িয়েছে, তারা অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনী আসার কথা নয়, দূরে থাকার কথা- সেসব জায়গায় সেনাবাহিনীর মুভমেন্ট আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ওই সময়গুলোতে।
এসব বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের জানিয়েছে, এ তথ্য সঠিক নয়। তবে পরবর্তীতে ডিজি পর্যায়ে যে মিটিং হবে, বিষয়টি আবারো তোলা হবে।
সার্বিকভাবে দেখতে পাচ্ছি তারা তাদের প্রহরা বা নিরাপত্তার ব্যবস্থা অনেক বাড়িয়েছে। আমাদের এদিকে অনেক কিছু খেয়াল করার চেষ্টা করছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, এর মধ্যে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে- যারা আমাদের দেশের অপরাধী চক্র; কিছু তথ্য পাচার করছে বিএসএফের কাছে। এসব অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করার কাজ চলছে। উৎস: বাংলাদেশ জার্নাল
আপনার মতামত লিখুন :