বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেওয়া সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন করতে সাহায্য করার জন্য ‘যাই হোক না কেন’ অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এছাড়া দেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর অবস্থান ও সংসদ নির্বাচনের বিষয়েও জানিয়েছেন তিনি।
আজ (২৪ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার প্রকাশিত বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান একথা বলেন। রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎকারে অংশ নেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
সাক্ষাৎকারে চলমান সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমি তার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) পাশে থাকব। যাই হোক না কেন। যাতে তিনি তার মিশন সম্পন্ন করতে পারেন। সংস্কারের পর গণতন্ত্রে উত্তরণ এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে করা উচিত। আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব এই সময়সীমার (১৮ মাস) মধ্যেই আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করা উচিত।’
তিনি জানান, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস প্রতি সপ্তাহে বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন এবং আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক আছে। অশান্তির পর দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আমি নিশ্চিত, আমরা যদি একসাথে কাজ করি তবে আমাদের ব্যর্থ হওয়ার কোন কারণ নেই।’
সেনাবাহিনী রাজনৈতিতে হস্তক্ষেপ করবে না জানিয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমি এমন কিছু করব না যা সেনাবাহিনীর জন্য ক্ষতিকর। আমি একজন পেশাদার সৈনিক। আমি আমার সেনাবাহিনীকে পেশাদার রাখতে চাই। বর্তমান সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, সেনা সদস্যদের অন্যায়ের অভিযোগগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ইতিমধ্যে কিছু সৈন্যকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে।’
দেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর যুক্ত হবার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন,’সেনাবাহিনীকে অবশ্যই আর কখনও রাজনীতিতে ব্যবহার হতে দেয়া উচিত না, আর একজন সৈনিকের কোনো রাজনৈতিক আকাঙ্খা থাকাও উচিত না।’
বাংলাদেশের পুলিশের প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার সদস্য এখনও বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী।