শিরোনাম
◈ এবার গোপন কক্ষের বিষয়ে মুখ খুললেন ভাইরাল হওয়া মালা খান ◈ ২৮ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে এক হালি ইলিশের দাম  ◈ আমেরিকার ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তির প্রসঙ্গ ◈ লস অ্যাঞ্জেলসের হয়ে খেলবেন সাকিব, তামিম টেক্সাসে ◈ সিরাজগঞ্জে যুবকের লাশ উদ্ধার ◈ বাড্ডায় নারীর রহস্যজনক মৃত্যু, হাসপাতালে রেখে পালালেন স্বামী ◈ ভাষানটেক থানার হত্যা মামলায় ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ৭ দিনের রিমান্ডে ◈ বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ইউরো দেবে জার্মানি: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ◈ ২৬ তারিখ নিয়ে এত আলোচনা কেন? কী ঘটবে ◈ বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতে ৪ দিনের বৈঠক বসছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডাররা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০১:২৬ দুপুর
আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৪৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক, নানা মত

এম এইচ বাচ্চু : বাংলাদেশেও জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। অনকে আগেও জাতীয় সঙ্গীত আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নতুন জাতীয় সংগীত রচনার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী। 
আমান আযমী বলেন, '১৯০৫-এ বঙ্গভঙ্গ-রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। এই জাতীয় সংগীত দুই বাংলা এক করার জন্য জাতীয় সংগীত। আমরা কি দুই বাংলা এক হতে চাচ্ছি? আমরা কি স্বাধীন বাংলাদেশ রাখতে চাই, নাকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অঙ্গীভূত রাজ্য হতে চাই?

তিনি দাবি করেছেন, জাতীয় সংগীত দুই বাংলার একত্রিতকরণের উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছে। তাই এটা পাল্টানো দরকার।  এরপর থেকে আলোচনায় আসে জাতীয় সঙ্গীত পাল্টানোর। 

জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীর বক্তব্য তার ব্যক্তিগত কথা। এর ব্যাখ্যার দায় জামায়াতে ইসলামীর নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ৮ সেপ্টেম্বর ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সহানুভূতি বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। 

তিনি বলেন, আব্দুল্লাহিল আমান আযমী জামায়াতে ইসলামীর সদস্য নন। সুতরাং তিনি জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে যা বলেছেন তা তার একান্ত ব্যক্তিগত মন্তব্য। এর ব্যাখ্যার দায় জামায়াতে ইসলামীর নয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় সংগীতসহ জনসাধারণের আবেগ ও অনুভূতিকে কটাক্ষ করে একটি গোষ্ঠী নানামুখী অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। এসব ঔদ্ধত্য ও হীন তৎপরতার প্রতিবাদ জানিয়ে দেশের ৪৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ওই বিবৃতি সংবাদমাধ্যমকে পাঠান।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেন, ‘আমরা উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি যে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধানসহ জনরায়ে প্রতিষ্ঠিত বিষয়গুলো, এমনকি জাতীয় সংগীত নিয়ে প্রশ্ন তোলার ধৃষ্টতা দেখানো শুরু করেছে। কয়েক দিন আগে জামায়াতে ইসলামীর আমির জাতিকে অতীতের সবকিছু ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অনুমান করা যায়, অতীত বলতে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সেই সময়ে তার দলের ভূমিকা ইত্যাদির কথাই বুঝিয়েছেন। সেটা আরও পরিষ্কার হলো গত ৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা থেকে।

বাংলাদেশে সম্প্রতি জাতীয় সংগীত পরিবর্তনে সমর্থন দিয়েছেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। তিনি বলেন,  বর্তমান জাতীয় সংগীত ৩ কারণে গ্রহণযোগ্য নয়। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মগবাজারে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
 
অলি আহমেদ বলেন, ৩টি কারণে এই জাতীয় সংগীত গ্রহণযোগ্য না। সেগুলো হলো: বাংলাদেশ নিয়ে এই গান রচিত নয়, রচয়িতা বাংলাদেশের নাগরিক নয় এবং সুর নকল করা।
 
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে ভাবা হচ্ছে না। বিতর্ক সৃষ্টি করে- এমন কিছু অন্তর্বর্তী সরকার করবে না। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহীর ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিদর্শন ও সুধী সমাবেশে যোগদান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

খালিদ হোসেন বলেন, মসজিদ মন্দির মাজারে হামলা গর্হিত কাজ। ধর্মীয় উপাসনালয়ে যারা হামলা চালায় তারা মানবতার শত্রু। তারা অপরাধী। প্রচলিত আইনে তাদের বিচার করা হবে।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের দাবি এবং জাতীয় সঙ্গীত সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্যের প্রতিবাদে কানাডার টরেন্টোর সাংস্কৃতিক কর্মী, লেখক, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের নাগরিকরা শতকণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে এর প্রতিবাদ করেছেন।
এ সময় পুরো ডেনটনিয়া পার্কে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ডেনটনিয়া পার্কে টরেন্টোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কানাডিয়ান সমবেত হয়ে এই কর্মসূচী পালন করেন। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি দেলওয়ার এলাহী এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক ম্যাক আজাদ।

রহমান মৃধা নামে একজন লিখেছেন, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত একটি অনন্য সৃষ্টি, যা আমাদের মাতৃভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করে। তবে, এই গানটি যখন বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তখন এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনও যুক্ত হয়ে থাকে। ‘বাংলা’ বলতে শুধু বাংলাদেশকেই বোঝায় না; এর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গও জড়িত। এ কারণে, এটি আমাদের জাতীয় পরিচয়ের পুরোপুরি প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না।

উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, ‘আমরা দায়বদ্ধ মানুষের প্রতি। আমাদের অর্জন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যখনই কোনো আঘাত আসবে, আমরা তার প্রতিবাদ করব। আমাদের জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা কারো দানে পাওয়া নয়। লাখো শহীদের রক্তে পাওয়া এ আমাদের অর্জন। এই অর্জনকে কোনোভাবেই কলঙ্কিত করা যাবে না। যখনই কেউ মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতে আঘাত করবে। আমরা তার প্রতিবাদ করবই।’

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘প্রগতিশীল সব আন্দোলন-সংগ্রামে উদীচী সামনে থেকেছে। যখনই দেশের ওপর, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ওপর আঘাত এসেছে আমরা প্রতিবাদ করেছি। এবারও জাতীয় সংগীত গেয়ে এই কর্মসূচি, সেই ধারাবাহিক প্রতিবাদেরই অংশ।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়