শিরোনাম

প্রকাশিত : ৩১ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৪০ রাত
আপডেট : ০১ আগস্ট, ২০২৪, ১১:১৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ড. ইউনূসকে তারেক রহমানের কথায় না চলার অনুরোধ ভারতীয় সাংবাদিকের

ফাইল ছবি

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] সম্প্রতি প্যারিসে ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সাহায্যে বাংলাদেশে নতুন নির্বাচন চেয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তর্জাতিক মহলের পাশাপাশি সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাহায্যও চেয়েছেন তিনি।

[৩] সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস দাবি করেছেন, বাংলাদেশে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক চর্চা নেই। তিনি সাক্ষাৎকারটি এমন সময় দিয়েছেন, যখন দেশে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র একটি সংকটময় পরিস্থিতি চলছিলো। ঠিক সেই সময়ে এমন মন্তব্যকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

[৪] ড. ইউনূস মনে করেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই এবং এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারতসহ সার্কভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশের দিকে নজর দিতে হবে। তবে এখানেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ভারতের বর্ষীয়ান সাংবাদিক ও বিশ্লেষক মহল।

[৫] ভারতের এই বিশ্লেষকরা জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা কেবল তাদের দেশের মানুষকে নিয়েই সমাধান করতে হবে। আর এই সমাধানে বিদেশি রাষ্ট্রের ভূমিকা চাওয়া মানেই নিজের দেশকে অসম্মান করা। তাদের মতে, ভারতের কোনো সুশীল সমাজ, কোনো নাগরিক এমনকি বিরোধীদলের নেতাও বিদেশে গিয়ে নিজ দেশের বিষয়ে নেতিবাচক প্রচার করেন না। সূত্র: সময় টিভি ফেসবুক পেজ

[৬] এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় প্রেসক্লাব, নয়াদিল্লীর সভাপতি গৌতম লাহিড়ী বলেন, ‘কোনো রাষ্ট্রে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে সেই সমস্যা সমাধানের জন্য দায়িত্বশীল নাগরিক বা সুশীল সমাজ আছে; তারা নিজ দেশের সাধারণ মানুষদের মধ্যে অভাব-অভিযোগ নিয়ে আন্দোলন করবেন। শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন-এগুলো সম্পূর্ণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যদি করতে নাও পারেন, তাহলে চেষ্টা করতে পারেন, অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু বিদেশের ভূমিকায় কোনো সরকারকে, নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার দাবি জানানো অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক।’

[৭] তিনি আরো বলেন, ‘যদি কোনো দায়িত্বশীল নাগরিক নিজের দেশের বিষয়ে অন্য দেশ কিংবা আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন, তবে তা কোনো দেশ প্রেমিক নাগরিকের সিদ্ধান্ত নয় এবং এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে আত্মঘাতি।’

[৮] দেশটির জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির মতের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন আনন্দবাজার পত্রিকার সাবেক বর্ষীয়ান সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুখরঞ্জন দাশগুপ্তও। তিনি বলেন, ‘একটি মহল নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে এবং তারাই বহির্বিশ্বে নিজেদের দেশকে নিয়ে আজেবাজে বলে বেড়াচ্ছেন।’

[৯] সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘মো. ইউনূস বিদেশের কাছে আহ্বান করছে যে, আপনারা আমাদের বাঁচান, আমাদের দেশে গণতন্ত্র নাই। দশ মাস আগে নির্বাচন হয়েছে। হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বিপুল ভোটে। এখন এই সরকার ছেড়ে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন হবে? সেই নির্বাচনে ইউনূসকে প্রধান করা হবে। রাজাকার আর জামায়াত, সন্ত্রাসবাদী দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে। ভারত সরকার পরিষ্কার বলে দিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো নাক গলাবার অধিকার নেই।’

[১০] বর্ষীয়ান এই সাংবাদিক আরো বলেন, ‘অধ্যাপক ড. ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন, তার জন্য নানা প্রস্তুতি ছিলো। আমি তাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। তিনি এখন বিদেশে, আবার তারেক রহমানও বিদেশে। তারা বিদেশ থেকে একটার পর একটা বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’

[১১] সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘ইউনূস সাহেবের সঙ্গে আমার দু’একবার দেখা হয়েছে। আমার অনুরোধ, আপনি এই বয়সে এসে তারেকের কথা মতো  চলবেন না। বাংলাদেশকে ধ্বংস করবেন না।’ পাশাপাশি নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের বয়স হয়েছে উল্লেখ করে তাকে দেশ গড়ার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব

একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়