শিরোনাম
◈ দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের, ইনজুরি টাইমে ভারতের কাছে হেরে গেলো ◈ লিটন দাস আউট হওয়ায় তামিমের কাছে ব্যাখ্যা চাইলেন হার্শা ভোগলে ও কার্তিক ◈ ঢাবিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজনই ছাত্রলীগের আটক ছয়জনের মধ্যে ! ◈ ভারতের মণিপুরে প্রতিবেশী দেশ থেকে ঢুকে পড়েছে ৯০০ যোদ্ধা, জানালেন কুলদীপ সিং ◈ ভারতে ‘উদ্বাস্তু’ শেখ হাসিনা, হস্তান্তর নিয়ে নানা মত ! ◈ শাহজালাল বিমানবন্দরসহ আশপাশ হর্ন মুক্ত ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা ◈ ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যার দায় স্বীকার ৬ শিক্ষার্থীর ◈ জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বাগাথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস ◈ ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশে মডেল আভা লুইস পরনের টপ তুলে বক্ষযুগল প্রদর্শন ! ◈ ১৪৯ রানে গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস, ৩০৮ রানে এগিয়ে ভারত

প্রকাশিত : ১৩ জুলাই, ২০২৪, ০৮:৩৯ রাত
আপডেট : ১৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:৪৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাটছেই না গ্যাস সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

মনজুর এ আজিজ: [২] পাইপলাইন মেরামতের পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি এক্সিলারেটের এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও বর্তমানে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যাপক ঘাটতি থাকায় জ্বলছে না চুলা, চলছে না কারখানা। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। যদিও সামিটের ক্ষতিগ্রস্ত এলএনজি টার্মিনালটি সিঙ্গাপুরে মেরামতের পর মহেশখালীতে এসে পৌঁছেছে। তবে এই টার্মিনাল থেকে গ্যাস পেতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট সূত্র। 

[৩] এদিকে বেশ কিছুদিন ধরেই বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক এবং আবাসিকে স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। সবখানে বেড়েই চলেছে গ্যাস সংকট। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্টদের হিসাব বলছে, দেশে প্রতিদিন ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ২৪৯৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ফলে প্রতিদিন ঘাটতি থাকছে ১৫০৪ মিলিয়ন ঘনফুট। 

[৪] সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিশাল এই ঘাটতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরমধ্যে আবার দেশের সবগুলো গ্যাস কোম্পানির উৎপাদন গত কয়েক বছর ধরে কমেই চলেছে। এর বিপরীতে এলএনজি আমদানি করে চাহিদা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে ডলার সংকট ও স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেশি পড়ায় তা আমদানিতে গড়িমসি করা হচ্ছে। ফলে গ্যাস সংকট দিন দিন বাড়ছে। 

[৫] একাধিক দায়িত্বশীল বলেছে, সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস নিয়ে দুটো বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছে সরকার। প্রথমত, সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রেমালে মহেশখালীতে অবস্থিত বেসরকারি সামিট কোম্পানির ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ও বিকল হয়ে যায়। সেটিকে মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। অপরদিকে ডলার এবং আর্থিক সংকটের কারণে ঠিক মতো এলএনজি আমদানি করা যাচ্ছে না। ফলে দেশে গ্যাস সংকট দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

[৬] সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, প্রতিদিন এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ৮০০ থেকে ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার কথা থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ হচ্ছে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সামিট এলএনজির টার্মিনালটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দৈনিক ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট কম সরবরাহ হচ্ছে। এছাড়া দেশের গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির উত্তোলন ক্ষমতা রয়েছে ৮১৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে উত্তোলন করা হচ্ছে ৫৫৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এরমধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির ১৪৯ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার মধ্যে ১১৬, আর বাপেক্সের ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুটের মধ্যে ১১৬ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলন করা যাচ্ছে।

[৭] সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে শেভরনের ১৫১২ মিলিয়ন ঘনফুটের বিপরীতে উত্তোলন করা হচ্ছে ১১৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। এরমধ্যে বিবিয়ানা প্রতিদিন ১২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতো, এখন যা কমে  ৯৯৭ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে। আর তাল্লোর ১০৩ মিলিয়ন ঘনফুটের মধ্যে ৩৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে।

[৮] এদিকে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্যাস সংকটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি কিছু এলাকায় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিংও করা হচ্ছে। শহরাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও দেশের গ্রামাঞ্চলে তীব্র বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে দৈনিক ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ করা হচ্ছে ৯৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে গ্যাসচালিত বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রর উৎপাদন সীমিত রাখা হয়েছে। 

[৯] এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, এলএনজি সরবরাহের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। শুক্রবার মেরামতের পর কমিশনিং করা হয়েছে। সামিটের ক্ষতিগ্রস্ত এলএনজি টার্মিনালটি সিঙ্গাপুরে মেরামতের পর মহেশখালীতে এসে পৌঁছেছে। তবে কাজে আসতে সময় লাগবে। তিনি বলেন, আমরা আগে দিচ্ছিলাম ৩১০০ মিলিয়ন ঘনফুট, এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ২৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল চালু হলে আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাবো। এতে গ্যাসের ঘাটতি কমে আসবে। 

[১০] বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, চলমান গ্যাস সংকট কাটবে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তিনি জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ বা ১৬ জুলাই সামিটের টার্মিনালটি দেশে আসবে। এরপর গ্যাস সরবরাহ শুরু করলে সংকট কেটে যাবে। সম্পাদনা: সর চক্রবর্তী

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়