সালেহ্ বিপ্লব: [২] এটি জেলার দ্বিতীয় পণ্য হিসেবে জি.আই স্বীকৃতি অর্জন করলো। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের বরাত দিয়েছে এ খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)। এরআগে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জি.আই স্বীকৃতি লাভ করেছিলো।
[৩.১] জেলা প্রশাসক বলেন, বৃহস্পতিবার ভৌগোলিক নির্দেশক (জি.আই) পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা নিবন্ধনের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১২ অনুসারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর কর্তৃক জার্নালে প্রকাশ করা হয়।
[৩.২] ডিসি বলেন, এই স্বীকৃতির ফলে জেলার মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া ব্রোঞ্জের গহনা তৈরির সাথে সম্পৃক্ত কারিগরদের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলেও আমরা বিশ্বাস করি। ব্রোঞ্জ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে। এলাকার আর্থসামজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে ।
[৪] গত ১২ মার্চ জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোতে আবেদন করা হয়।
[৫.১] ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও জলিরপাড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর সুভাষ বৈদ্য বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে প্রায় ১শ’ বছর আগে গড়ে ওঠেছে ব্রোঞ্জের গহনা তৈরীর পল্লী। পরে এটি সারা জলিরপাড় ইউনিয়নের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ পল্লীকে কেন্দ্র করে এখানে ব্রোঞ্জ মার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনা সুখ্যাতি সারদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ক্রমে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি বিদেশের বাজারে ছড়িয়ে যায় ।
[৫.২] তিনি বলেন, কিন্তু এ শিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। তাই সম্প্রতিকালে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্রোঞ্জের গহনা আমাদের বাজারের প্রায় ৫০ ভাগ দখল করে নিয়েছে। তারপরও জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনা শতাধিক পরিবার টিকিয়ে রেখেছে। জলিরপাড় ব্রোঞ্জ মার্কেটে এখনো ৪৫টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে এখনো ব্রোঞ্জের গহনা বিক্রয় করা হয়।
[৬.১] ব্রোঞ্জ গহনা প্রস্তুত কারক জলিরপাড় গ্রামের জগদীশ শীল বলেন, তামা, দস্তা ও পিতলের দাম বেড়েছে। সহজ প্রাপ্যতা কমেছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ব্রোঞ্জ গহনার রং খুব চকচকে। আমাদের গহনার রং তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। সুদৃশ্য, মনোহর ও সৌখিন দামী গহনার বাজার ভারত ও চীনের দখলে চলে গেছে। তাই কানের দুল, হাতের বয়লাসহ যেসব গহনার চাহিদা রয়েছে এমন সব গহনা আমরা তৈরী করি। [৬.২] তিনি বলেন, সরকার এ শিল্পকে অধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সবধরনের সহযোগিতা করলে আমরা ব্রোঞ্জ গহনার শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারব। এখানে এখানো মান সম্পন্ন কারিগর রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে তাদের কাজে লাগিয়ে আমরাও দামী গহনা তৈরী করতে পারি । এতে শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা আরো বেশী উপার্জন করতে পারবেন । এ শিল্প দেশের অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধ ও গতিশীল করবে।
এসবি/আইএফ
আপনার মতামত লিখুন :