সুজন কৈরী: [২] শনিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ সুমনের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সরকার জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান হিসাবে পরিচিত ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেন, বলধা গার্ডেন, কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ইকোপার্ক ও ময়মনসিংহ মধুটিলা ইকোপার্কে প্রবেশ মূল্য এক লাফে ৫ গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে (২০ থেকে ১০০ টাকা)।
[৩] পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বন অধিশাখা-১ এর জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন ধ্বংসাত্মক, জনবিরোধী ও নিন্দনীয়।
[৪] এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে পবা বলেছে, সারাদেশে সর্বসাধারণের ব্যবহার উপযোগী নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জনসমাগমস্থল (পাবলিক প্লেস) সীমিত। সেখানে বিভিন্ন লেক, পার্ক, উদ্যান কিংবা খেলার মাঠ ক্রমশ সাধারণের প্রবেশ বিভিন্ন উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
[৫] এতে নানাভাবে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব সমাজে পড়ছে। বিশেষ করে, নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও অবারিত শারীরিক এবং মানসিক স্বস্তির স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার ক্রমশ সংকুচিত হয়ে পড়ায় সামাজিক বন্ধন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
[৬] শিশু-কিশোরসহ সকল প্রকার সাধারণ মানুষ একাকী হয়ে পড়ছে। যা জনসাধারণের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। এসব কারণে মোবাইল আসক্তি, নেশাগ্রস্ত হওয়া, মুটিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। সুস্থ শারীরিক ও মানসিক বিনোদনের অভাবে শিশু-কিশোররা ‘কিশোর গ্যাং’ এর মতো ধ্বংসাত্মক কাজেও জড়িয়ে পড়ছে।
[৭] পবা মনে করে, যেখানে ঢাকাসহ দেশের মানুষকে উদ্যান ও পার্কমুখী করা প্রয়োজন, শরীর চর্চা ও বিনোদনের সুযোগ অবারিত রাখা প্রয়োজন, সেখানে প্রবেশ ফি আরোপ ও বৃদ্ধির মতো বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ ও দরিদ্র জনগণকে উদ্যানবিমুখ করে তুলবে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫(গ) অনুচ্ছেদে বলা হযেছে, রাষ্ট্র অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে নাগরিকের যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার নিশ্চিত করবে।
[৮] আগামী প্রজন্মের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য সব মাঠ, পার্ক, লেক ও উদ্যানের প্রবেশমূল্য উঠিয়ে বিনা ফিতে প্রবেশের ব্যবস্থা রাষ্ট্রের একটি উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ হতে পারে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
আপনার মতামত লিখুন :