খুররম জামান: [২] বুধবার রাজধানীতে এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রাকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চীনের সাথে স্মার্টভাবে জড়িত থাকার মাধ্যমে বাণিজ্য, সংযোগ এবং আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর থেকে লাভের অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন।
[৩] তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় চীনের প্রয়োজন কেন এবং বাংলাদেশ কীভাবে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাকে ভূ-রাজনৈতিক সহযোগিতায় রূপান্তরিত করার সুবিধা নিতে পারে সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
[৪] সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, শুল্কমুক্ত বাজারে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে যে সুবিধা পাচ্ছে তা হল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কারণে যা দুই দেশ উপভোগ করছে যদিও এটি ডব্লিউটিওর নির্দেশিকা বজায় রেখে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ডব্লিউটিওর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশ শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দেয় না।
[৫] তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ বাণিজ্য সুবিধার জন্য প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চাইতে পারে এবং সে লক্ষ্যে একটি ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ার চেষ্টা করা হবে।
[৬] রোহিঙ্গা ইস্যুতে শাহরিয়ার বলেন, তিনি একমত যে চীনকে আরও শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।
[৭] শ্রমিক ইস্যুতে বলেন, চীন আগামীতে বিদেশী কর্মীদের আমন্ত্রণ জানাবে কারণ তাদের জনসংখ্যার গতি পরিবর্তন দ্রুত হচ্ছে।
[৮] শাহরিয়ার বলেন, বাংলাদেশের দ্রুত শিল্পায়নের জন্য চীনের প্রয়োজন এবং গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ করে যোগাযোগ খাতে চীন যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে তা অনস্বীকার্য।
[৯] গত এক দশকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক গভীর হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিল্পায়িত বাংলাদেশের চীন দরকার।
[১০] সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, চীনের উচিত পারস্পরিকভাবে পাঁচ থেকে দশ বছরের ভিসা দেওয়া, ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করা।
[১১] তিনি বলেন, দ্বন্দ্বের ভূ-রাজনীতিকে সহযোগিতার ভূ-রাজনীতিতে রূপান্তর করার সময় এসেছে। ভারত ও চীনের মধ্যে অনেক ফ্রন্টে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। তিস্তা নদী নিয়ে ভারত ও চীনের একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে এবং এটি ব্যাপক ব্যবস্থাপনার চিন্তা শুরু করার সময় এসেছে।
[১২] জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, ডিফারেল পেমেন্ট এবং নরম ঋণের মতো বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
[১৩] তিনি বলেন, জ্বালানি আমদানির পরিবর্তে চীনের সঙ্গে শক্তি উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে যা সর্বোচ্চ করা দরকার।
[১৪] অধ্যাপক শাহাব আরো বলেন, বাংলাদেশের চীনের প্রয়োজন কিন্তু চীনেরও বাংলাদেশ প্রয়োজন।
[১৫] বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ (বিএফআরএস) আয়োজিত আলোচনায় সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ।বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)-এর গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির আলোচনার শুরুতে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিএফআরএস চেয়ারম্যান এএসএম শামসুল আরেফিন।
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :