সালেহ্ বিপ্লব: [২.১] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বন্যা হতে পারে, পূর্বাভাস সেরকম পাওয়া যাচ্ছে। কাজেই আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি বাজেট বাস্তবায়ন বাড়াতে অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। 

[২.২] মঙ্গলবার সকালে জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম (অব.)। 

[৩] পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্প পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, এক প্রকল্পের জন্য যেন একজন প্রকল্প পরিচালকই নিয়োগ দেওয়া হয়। 

[৪] ঢাকা অঞ্চলের আশেপাশে যেখানে যেখানে জমি আছে সেগুলোতে চাষ ত্বরান্বিত করার নিদের্শনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জমি অধিকাংশ চলে যাচ্ছে আবাসন প্রকল্পের জন্য। তবে যেসব জমি এখনও আছে সেগুলো যাতে ফাঁকা পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব এলাকায় তিন ফসলী বা দো ফসলী জমিতে  ফসল ভাল হয় সেই সব এলাকায় প্রকল্প নেওয়া যাবে না। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে। 

[৫] পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ৪১ এর বাস্তবায়ন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সদ্যসমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ সময়ে যেসব প্রকল্পের অনুকুলে অর্থবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেই টাকা কিভাবে খরচ হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে সারা দেশের যেসব থানা জরাজীর্ণ, সেগুলো সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।  

[৬.১] প্রধানমন্ত্রী চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে প্রকল্পের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, যেহেতু বৃষ্টির কারণে মাঠে প্রকল্পের কাজ করা যায় না; সেজন্য কাগুজে প্রস্তুতি শেষ করতে হবে।

[৬.২] পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কাজের মান নিশ্চিত করতে সবারই দায়িত্ব আছে। আগামী ৪ জুলাই সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। যাতে প্রকল্পের কাজ দ্রুত হয়। এ বিষয় গুলো লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের দিকে উন্নয়নশীল দেশে চলে আসবো আমরা। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। 

[৭] মন্ত্রী জানান, মঙ্গলবারের বৈঠকে ঢাকা অঞ্চলের কৃষি উন্নয়নসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৫ হাজার ২১৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা , বৈদেশিক ঋণ সহতায় থেকে ১৪০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে  ১০৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। 

[৮] একনেকে অনুমোদিত প্রকল্প গুলো হচ্ছে-  ঢাকা অঞ্চলের কৃষির উন্নয়ন প্রকল্প। বরগুনা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।  রায়পুরা ১২০ মেগাওয়াট এসি পিক গ্রিড টাইড সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প। বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী (২য় সংশোধিত) প্রকল্প। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র কিশোরগঞ্জ, জয়পুরহাট ও চট্টগ্রাম স্থাপন প্রকল্প। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। কুমিল্লা-সালদা ও কসবা (সৈয়দাবাদ) সড়কে (এন১১৪) জাতীয় মহাসড়ক মানে উন্নীত করা প্রকল্প। নগরাঞ্চলের ভবন সুরক্ষা প্রকল্প। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর তীর ভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়)(দ্বিতীয় সংশোধিত)  প্রকল্প। দেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের  থানার প্রশাসনিক কাম ব্যারাক ভবন নির্মাণ প্রকল্প।

[৯] প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জমান সরকার, পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. এমদাদউল্লাহ মিয়ান, কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য  আব্দুল বাকী এবং তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। এটি ছিলো নতুন অর্থবছরে একনেকের প্রথম বৈঠক।