সালেহ্ বিপ্লব, এম এম লিংকন: [২] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে বহুবার নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে জনগণ, দলের নেতা-কর্মী ও অগণিত সমর্থকদের কারণে তা সফল হয়নি।
[৩.১] রোববার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর বারবার আঘাত এসেছিলো। খুব বেশি দিনের কথা নয়।
[৩.২] ২০০৭ সালে চেষ্টা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে কিংস পার্টি গড়ে তুলতে। সেটাও সফল হয়নি। তার কারণ, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি হচ্ছে দেশের জনগণ, তৃণমূলের মানুষ, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মী, মুজিব আদর্শের সৈনিক। এই সৈনিকেরা কখনো পরাজয় মানে না, মাথা নত করে না।
[৪] আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাওয়া নেতাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, হয়তো কখনো কখনো কোনো নেতা ভুল করেছেন। কেউ মনে করেছেন, আওয়ামী লীগে থাকলে তারাই বড় নেতা; দলের চেয়েও নিজেকে বড় মনে করে দল ছেড়েছেন, অন্য দল করেছেন। কিন্তু তারা ভুল করেছেন। কেন? আপনারা দেখেন, আকাশে মিটিমিটি তারা জ্বলে। তারা আলোকিত হয় সূর্যের দ্বারা। যেসব নেতা ভুল করেছিলেন, তারা ভুলে গিয়েছিলেন, তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন বলেই আলোকিত ছিলেন। এখান থেকে চলে যাওয়ার পর ওই তারা আর জ্বলেননি। আস্তে আস্তে মিটমিটে হয়ে গেছেন।
[৫] আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, কেউ ভুল বুঝে হয়তো ফেরত এসেছেন, আমরা নিয়েছি। আবার কেউ এখনো বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সরকার পতন ও ধ্বংসসহ নানা জল্পনাকল্পনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। তা আমরা প্রমাণ করেছি। পঁচাত্তরের পর বারবার ক্ষমতা বদল হয়েছিল। সেটা হয়েছে অস্ত্রের মাধ্যমে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। জনগণের অধিকার ছিল না। তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেনি।
[৬] দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দলকে সংগঠিত করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলব, আপনারা একবার চিন্তা করে দেখেন, এই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কত কষ্ট করেছেন। বারবার আঘাত এসেছে। পরিবারগুলো কষ্ট করেছে। কিন্তু এই সংগঠন ধরে রেখেছেন। কাজেই যেমন সংগঠন করতে হবে। সেইভাবে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস, যেটা আমাদের মূল শক্তি, সেই আস্থা-বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে।
[৭] ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ ও ২১০০ সালের ডেলটাপ্ল্যানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেক বয়স হয়েছে, তত দিন হয়তো বেঁচে থাকব না। কিন্তু আজকে যারা নবীন, যারা আমার স্মার্ট বাংলাদেশের মূল সৈনিক হবে। আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠী গড়ে তুলব, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তুলব; এই বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবে- প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্লাটিনাম জুবিলিতে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
[৮] এ সময় শেখ হাসিনা উপস্থিত নেতা-কর্মীদেরও প্রতিজ্ঞা করার আহ্বান জানান। তাঁরাও হাত উঁচিয়ে, চিৎকার করে সাড়া দেন।
[৯] মৃত্যুকে পরোয়া করেন না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু যেকোনো সময় সবার হতে পারে। যেকোনো সময় মৃত্যু আসতে পারে। তার জন্য আমি কোনো দিন ভীত নই। কখনো ভয় পাইনি, পাব না। কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমার বাবার যে চিন্তাচেতনা, তা বাস্তবায়ন করে এ দেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেব, এটাই আমাদের লক্ষ্য।
[১০] বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও দলের প্রতিষ্ঠাতাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হারানো এবং বিদেশে শরণার্থী হিসেবে থাকার কথা উল্লেখ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :