আনিস তপন: শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা: দেশীয় পশুতে কোরবানি, খামারিদের সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত খামারীদের এই আশ্বাস দিয়েছেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
মন্ত্রী বলেন, ক্রান্তিকালে খামারিরা যাতে টিকে থাকতে পারে সেজন্য রাষ্ট্র পদক্ষেপ নেবে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকার প্রণোদনা দিয়েছে।
এবারো শতাব্দীর ভয়াবহ বন্যায় বৃহত্তর সিলেট ও ঢাকার একটি অংশে প্রাণিসম্পদ খাতে যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রণোদনা দিয়ে খামারিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে এবং এ খাত যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সহায়তায় সেমিনারের আয়োজন করে ফিশারিজ এন্ড লাইভস্টক জার্নালিস্টস ফোরাম (এফএলজেএফ)।
গবাদিপশুর খাদ্যের উচ্চমূল্য প্রসঙ্গে খামারিরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, পশু খাদ্য তৈরির অন্যতম উপাদান প্রোটিন বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ আমদানিতে উৎসে করসহ অন্যান্য কর সরকার শিথিল করে দিয়েছে। দেশে পশু খাদ্য উৎপাদনের জন্য সরকার এ কর অব্যাহতি দিয়েছে।
সেমিনারে পাবনার খামারী ও চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ, সিলেটের মো. আনোয়ার হোসেন, বরিশালের ফেরদৌস জানান, এবারের বন্যায় সিলেটসহ ১৫ জেলায় ৬ হাজার ৬৬২টি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আর্থিক মূূল্য ৩৩১ কোটি ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৫৫৯০টি খামার। ফলে ঈদুল আজহাকে ঘিরে এবার এখনো জমে ওঠেনি পশুর হাট। বন্যায় আক্রান্ত জেলাগুলোতে গবাদিপশু নিয়ে বিপদে পড়েছেন খামারিরা। বেড়ে গেছে পশুখাদ্যের দামও। ফলে কোরবানির ঈদে গবাদি পশুর দাম বাড়তে পারে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, গত বছর (২০২১) দেশে কোরবানী যোগ্য গরু, ছাগল, মহিষসহ অন্যান্য পশু প্রস্তুত ছিল এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। গতবার কোরবানী হয়েছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। অর্থাৎ ২৮ হাজারেরও বেশি কোরবানীর পশু অবিক্রিতই থেকে যায়। যেহেতু করোনা পরিস্থিতি গত বছরের চেয়ে উন্নত, তাই এবার বেশি কোরবানী হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ধরা হয়েছে ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ২৩৫টি। চাহিদার বিপরীতে দেশের আট বিভাগে মোট এক কোটি ২১ লাখ ৩৮৯টি কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু মজুদ আছে। কোরবানির চাহিদা ও প্রাপ্যতার হিসাব করলে দেখা যায়, এ বছর প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ গবাদিপশু অবিক্রীতই থেকে যাবে।
মূল্য প্রবন্ধে আরো বলা হয়, দেশে কোরবানী যোগ্য গবাদিপশুর অভাব নেই। কিন্তু অঞ্চলভেদে কোরবানির পশুর প্রাপ্যতা ও চাহিদার মধ্যে ফারাক রয়েছে। অতিরিক্ত মজুদ থাকা অঞ্চল থেকে ঘাটতিতে থাকা অঞ্চলের হাটে গবাদিপশু নিয়ে যাওয়া সহজ করতে হবে। এ জন্য সড়ক যানজট ও চাঁদাবাজমুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :