সালেহ্ বিপ্লব: [২] সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের (অব.) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ফরেন অপারেশনস এবং রিলেটেড পোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট এর ৭০৩১ (সি) ধারায় এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে সাবেক সেনাপ্রধান ও তার পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাবেন না।
[৩] এর প্রতিক্রিয়ায় সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ (অব.)একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে বলেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি যে শাস্তি পেতে হবে। তারা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছে তার কোনো প্রমাণ থাকলে আমাকে দিক। যে দুই কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার কি কোনো ভিত্তি আছে?
[৪] পদ-পদবির অপব্যবহার করে নিজের ভাইকে সহযোগিতা করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার সেই ভাই আমি জেনারেল হওয়ার অনেক আগেই বিদেশে গেছে। সে নিশ্চয়ই বৈধ পাসপোর্ট নিয়েই বিদেশে গেছে। তার চলে যাওয়া বা দেশের প্রচলিত আইন ফাঁকি দেয়ার ব্যাপারে আমি আমার পদ-পদবি ব্যবহার করেছি-এই অভিযোগটা আমি মেনে নিচ্ছি না। মেনে নিতে পারি না, এটা সঠিক নয়।
[৫] ভাইদেরকে সামরিক কন্ট্রাক্ট দিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি চার বছর বিজিবি মহাপরিচালক থাকাকালীন এবং তিন বছর সেনাপ্রধান থাকাকালীন কেউ যদি একটা প্রমাণ দিতে পারে যে, আমি আমার কোনো ভাইকে বা কোনো আত্মীয়কে বিজিবি বা সেনাবাহিনীতে কোনো কন্ট্রাক্ট দিয়েছি, তাহলে আমি যেকোনো সাজা মেনে নিতে প্রস্তুত আছি।
[৬] তিনি আরও বলেন, আমার কোনো ভাইয়ের সেনাবাহিনী বা বিজিবিতে ঠিকাদারি করার জন্য কোনো ধরনের লাইসেন্স আছে কিনা আপনারা খুঁজে বের করুন। আমি যে আমার ভাইদের কন্ট্রাক্ট দিয়েছি, তার প্রমাণ তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দিক। আমি মেনে নেব। তথ্য প্রমাণ ছাড়া তো এটা প্রমাণিত না। আমি জোর দিয়ে বলছি, আমি তাদের কোনো কন্ট্রাক্ট দিইনি।
[৭] জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি নিশ্চিত, এটা লোকজন বুঝবে।
[৮] কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করা হয়। তথ্যচিত্রটি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এবং তাঁর ভাইদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ছিল।
[৮.১] এ বিষয়ে আজিজ আহমেদ দৈনিক প্রথম আলোকে বলেন, আল-জাজিরার এই তথ্যচিত্র ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা একই সূত্রে গাঁথা। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি যদিও ব্যক্তিগত, তবে বর্তমান সরকারের সময়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই ঘটনাটি সরকারকেও কিছুটা হেয় করে।
[৯] আজিজ আহমেদ সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন ২০১৮ সালের ২৫ জুন। ২০২১ সালের ২৩ জুন পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক ছিলেন। তার আগে কুমিল্লার ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :