ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: [২] যুক্তরাষ্ট্রে নিহত এক বাংলাদেশির পরিবারকে ৫২ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করেছেন পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়া শহরে সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অব ফিলাডেলফিয়া। বিটিএসপির সদস্য এবং কমিউনিটির অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ফয়সল আহমেদ সোহেল, যিনি গত বছর বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুকালীন টাকা (২টি অংশের একটি অংশ) তার মেয়ে সোমাইয়া এফ বেগম এবং ছেলে আদনান ইউ আহমেদকে গত ২৮ জানুয়ারি প্রদান করা হয় এবং বাকি অংশ খুব দ্রুত বাংলাদেশে ওনার পরিবারের কাছে পৌঁছানো হবে।
[৩] বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অব ফিলাডেলফিয়া সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে সংগঠনটি বর্তমানে আমেরিকায় একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্যসংখ্যা পাঁচ শতাধিক এবং সংগঠনটির সম্পদ হিসেবে একটি বাড়ি এবং প্রতি সদস্যের মাসিক ১০ ডলার করে চাঁদা। সদস্যদের মাসিক চাঁদা বর্তমানে ব্যাংকে সংরক্ষিত ২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের কাছাকাছি।
[৪] বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অব ফিলাডেলফিয়ার সংবিধান অনুযায়ী (অনুচ্ছেদ-৪ ধারা ৩ এবং ৯) কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গেই সংগঠনের তহবিল থেকে ৩ হাজার ডলার এবং প্রত্যেকটি সক্রিয় সদস্যকে ১০০ ডলার করে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে দিতে হবে, অন্যথায় সদস্য পদ হারাবেন।
[৫] বর্তমানে এই সংগঠনের ৪৩৩ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। এই ৪৩৩ জন সদস্যের প্রত্যেকেই ১০০ ডলার করে পরিশোধ করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বমোট (৪৩ হাজার ৩০০ ডলার) বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেলের পরিবারের কাছে যথাসময়ে হস্তান্তর করেছেন সংগঠনের কর্মকর্তারা। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিটিএসপির প্রত্যেকটি সদস্যের মধ্যে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে যে দায়িত্ব এবং আগ্রহ তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
[৬] প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেলের দেশের বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে, অনেক বন্ধু ও আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
[৭] গত তিন-চার বছরে প্রয়াত ফয়সল আহমেদ সোহেলসহ সর্বমোট ৭ জন বিটিএসপির সদস্য ইন্তেকাল করেছেন। এর পূর্বেও প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন (চট্টগ্রাম), প্রয়াত জামাজ্জল হোসেন (রংপুর), প্রয়াত তোজাম্মেল হক (দিনাজপুর), প্রয়াত ডা. মো এ এইচ তালুকদারের (ঢাকা) প্রত্যকের পরিবারকেও মৃত্যুকালীন (৪২-৪৩ হাজার ডলার) প্রদান করা হয়েছিল। এছাড়াও বর্তমানে আরো দুই জন মরহুম মো. ওয়াসিম শাহরিয়ার পল্লব (ভেড়ামারা) যিনি বাংলাদেশে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (নড়াইল) যিনি দুর্বৃত্তের গুলিতে আপারডার্বি মদিনা মসজিদের পার্কিং লটে নিহত হন। তাদের টাকাও সদস্যদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। মৃতদের পরিবারের জন্য, যা আমেরিকায় বাংলাদেশিদের কোনো সামাজিক সংগঠনের জন্য মাইলফলক হিসেবে থাকবে। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা বিটিএসপির সদস্যদের। যারা প্রত্যেকে করোনাকালীন মহামারির সময়ে এবং পরবর্তী সময়ে অনুদানের অর্থ সহায়তা করে প্রয়াত সদস্য ফয়সাল আহমেদ সোহেল, ডা. মো. এ এইচ তালুকদার, তোজাম্মেল হক, জামাজ্জল হোসেন এবং মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং বাকি দুই জন সদস্যের অনুদানের অর্থ দ্রুত প্রদান করার মাধ্যমে মৃতদের পরিবারের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন।
প্রতিনিধি/এইচএ
আপনার মতামত লিখুন :