সালেহ্ বিপ্লব: [২] ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, কানাডার মুলধারায় বাংলাদেশিদের অবস্থান সুসংহত করতে রাজনীতিতে বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের প্রতিনিধিত্বের বিকল্প নাই।
[৩] কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় ‘শওগাত আলী সাগর লাইভের আলোচনায় তারা এই আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন সিনিয়র সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম বিশ্লেষক সৈকত রুশদী, প্রোগ্রেসিভ একশন ফর কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট এর নির্বাহী পরিচালক ইমামুল হক। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
[৪] বক্তারা বলেন, প্রধান রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রার্থীরা ইতিমধ্যে তাদের যোগ্যতার সাক্ষর রেখেছেন। আমাদের উচিৎ এই যোগ্য প্রার্থীদের বিজয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা।
[৫] আগামী ২ জুন অনুষ্ঠেয় অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল নির্বাচনে এনডিপির মনোনয়নে স্কারবোরো সাউথওয়েষ্ট আসনে ডলি বেগম এবং ইটোবিকো-লেকশোর আসনে ফারহিন আলিম এবং লিবারেল পার্টির মনোনয়নে ওকভিল নর্থ – বারলিংটন থেকে কানিজ মৌলী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। কানাডায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রথম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ডলি বেগম দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন।
[৬] আলোচনায় অংশ নিয়ে গণমাধ্যম বিশ্লেষক সৈকত রুশদী মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের বেশি বেশি অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্কারবোরোর প্রায় প্রতিটি রাইডিং এ শ্রীলংকান কানাডীয়ানদের প্রার্থী আছে। অথচ পুরো প্রভিন্সে বাংলাদেশি কমিউনিটির মাত্র তিনজন প্রার্থী।
[৭] তিনি বলেন, কেবল প্রার্থী হওয়াটাই বড় কথা নয়, নিজেদের যোগ্য করে তুলে নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে। আর যোগ্য হয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুতি দরকার, কাজ করা দরকার। স্কুল, কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করে নিজেদের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য করে তুলতে হবে।
[৮] আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে প্রয়োজনীয় ভুমিকা রাখতে কমিউনিটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে সৈকত রুশদী বলেন, যারা অন্য নির্বাচনী এলাকায় বসবাস করেন তারাও বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রার্থীদের পক্ষে ভূমিকা রাখতে পারেন। বাংলাদেশি কমিউনিটির স্বার্থেই প্রভিন্সিয়াল সংসদে বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রতিনিধি থাকা দরকার বলে তিনি মত দেন।
[৯] কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট সংগঠক ইমামুল হক ২০১৫ সালে পরিচালিত তাদের সংস্থার একটি সমীক্ষার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সেই সময় মূলধারার রাজনীতির ব্যাপারে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যায়নি। তবে ডলি বেগম প্রথম বারের মতো নির্বাচিত হবার পর বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের মধ্যে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতি এবং নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ অনেক বেড়েছে। এবারের নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি কানাডীয়ান তরুন তরুনীদের ভলান্টিয়ার হিসেবে হিসেবে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।
[১০] তিনি বলেন, নির্বাচনে বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কমিউনিটির ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা কেন প্রয়োজন- সেটা পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে। সমাজে অনগ্রসর গোষ্ঠীকে ইন্নয়ন সমধারায় নিয়ে আসতে বাড়তি পদক্ষেপ, নীতিমালার দরকার হয়। কানাডার মূলধারার রাজনীতি, প্রশাসনে বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের তুলে আনার স্বার্থেই বাংলাদেশি কানাডীয়ান প্রার্থীদের ভোট দিতে হবে। এই মুহুর্তে কে কোন দলের মনোনয়ন পেয়েছে তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হওয়া দরকার বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সংসদে আমাদের কথা বলার অন্তত একজন মানুষ যাতে থাকে।
[১১] ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, এবারের নির্বাচনে অংশ নেয়া বাংলাদেশি কানাডীয়ান তিন প্রার্থীই যোগ্য এবং দক্ষ। এমপিপি হিসেবে ডলি বেগমের কর্তৎপরতা কানাডার মূলধারার মিডিয়ায় সবসময়ই দৃশ্যমান ছিলো। প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টে তিনি নিজেকে ইমগ্র্যান্ট’স ভয়েস’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
[১২] তিনি বলেন, অপরদিকে কানিজ মৌলী রাজনীতিক ও ব্যুরোক্র্যাট হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন করেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কুইন্স ইউনির্ভাসিটির লিবারেল প্রেসিডেন্ট এবং প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট এবং প্রভিন্সের একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। আর ফারহিন আলীম একজন হাই স্কুল শিক্ষক। তিনি বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের ভোট দিতে যাওয়ার এবং বাংলাদেশি প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :