শাখাওয়াত মুকুল: উদিচি ফ্রান্স সংসদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে পঞ্চকবির স্মরণ সন্ধ্যা। ১৫ জানুয়ারি (রোববার) ফ্রান্সের উবারভিলিয়ে শহরের স্পেস রনদি মিলনায়তনে সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা ও নাটকের সমন্বয়ে এই স্মরণ সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলা সাহিত্যের পঞ্চকবি নামে পরিচিত, যারা কবিতা লেখার পাশাপাশি একই সাথে গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, রজনীকান্ত সেন, অতুল প্রসাদ সেন এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সৃস্টিকর্ম নিয়ে তারাই হল এই পঞ্চকবি।
অনুষ্ঠানে উবারভিলিয়ে শহরের সহকারি মেয়র সন্দ্রিন ডেইজি, ভাষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি এবং মেরির ভি এসোসিয়েটিভ এর সাবেক পরিচালক কার্লোস সামেদু, বিশিষ্ট কবি ও সংগঠক আবু জুবায়ের সহ বিপুল সংখ্যক সংস্কৃতিপ্রেমী প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ফ্রান্স সংসদের সভাপতি কিরন্ময় মন্ডল ও হাসনাত জাহানের সূচনা কথনের মধ্যে দিয়ে পঞ্চকবির পরিচিতি তুলে ধরেন শম্পা বড়ুয়া, সাইফুল ইসলাম ও জাইমা নাহিয়ান।
শুরুতেই রজনী কান্ত সেনের ‘তুমি নির্মল কর মঙ্গল ‘সঙ্গীতের সাথে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করা হয়। নৃত্য পরিবেশন করেন জি এম শরিফুল ইসলাম এবং দেবশ্রী চট্রপাধ্যায়। পরে একে একে পঞ্চকবির পরিচিতির সাথে কবিদের বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কর্মকান্ডের সাথে সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা ও নাটক পরিবেশিত হয়।
সংগঠনের সহ সভাপতি রোজী মজুমদারের সংগীত পরিচালনায় বড়দের গানের অংশে - ‘আমার আপনার চেয়ে আপন’ নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করে রাখী পিউরিফিকেশন। নজরুল ইসলামের "মেঘের ডমরু ঘন বাজে" এবং অতুল প্রসাদ সেনের -"কে আবার বাজায় বাঁশি" এই দুটি গান পরিবেশন করে রোজী মজুমদার। নজরুল ইসলামের ‘জনম জনম তব তরে কাঁদিব’ লুবনা ইয়াসমিন এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের "ওই মহাসিন্ধুর ওপার থেকে" সাগর বড়ুয়া একক কন্ঠে পরিবেশন করে। রবীন্দ্রনাথের তোমার খোলা হাওয়া, পরিবেশন করে চয়ন বড়ুয়া।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আমরা সবাই রাজা " গানের সাথে ছোটদের একটি সমবেত সংগীত পরিবেশিত হয় । শিশুশিল্পীরা হলো জয়ন্ত বড়ুয়া, দীপান্বিতা বড়ুয়া, ইশা খান চৌধুরী, সৌমিক সিংহ, অভীক সিংহ, ঈশ্বরী পালমা, অন্তরা বড়ুয়া ও অর্ণব বড়ুয়া।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ‘ আজি এসেছি বধু হে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "বিশ্বসাথে যোগে যেথায়" নজরুল ইসলামের " জয় হোক জয় হোক" সমবেত কন্ঠে পরিবেশিত হয়।
নৃত্য সম্পাদক জি এম শরিফুল ইসলামের পরিকল্পনায় রবীন্দ্রনাথের ‘হা-রে-রে-র’ গানের সাথে শিশুরা একটি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে। শিশু শিল্পীরা হলো- প্রিয়ন্তী দেব, সুমিত্রা দেব, বৃন্দা দে, প্রমি চন্দ, অনন্যা বড়ুয়া, অমৃতা রায় ও ছোঁয়া দাস।
এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের" বিপুল তরঙ্গ রে গানের সাথে জি এম শরিফুল ইসলামের এবং কাজী নজরুল ইসলামের ‘পরদেশী মেঘ- গানের সাথে দেবশ্রী চট্রপাধ্যায় একটি করে একক নৃত্য পরিবেশন করে।
স্মরণ সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পুরাতন ভৃত্য’ এবং কাজী নজরুল ইসলামের ‘মানুষ’ কবিতা অবলম্বে দু’টি ছোট্ট নাটিকা পরিবেশিত হয়। দীপক গমেজ এবং শম্পা বড়ুয়ার যৌথ নির্দেশনায় নাটক দুটিতে অভিনয় শিল্পী হিসেবে ছিলেন দীপক গমেজ, শফিকুল ইসলাম রায়হান, রুমানা আফরোজ, আহাম্মেদ আলী দুলাল, এলান খাঁন চৌধুরী এবং খালেদুর রহমান সাগর।
অনুষ্টানে অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন সাইফুল ইসলাম, ছুটি বিশ্বাস, ঊর্মি বড়ুয়া, কথকলি বড়ুয়া, কবিতা শর্মা দেব, শংকর ডেভিড ক্রুজ প্রমুখ। তবলায় ছিলেন,প্লাসিড শিপন রেবেরিও ও অনুভব চ্যাটার্জি এবং পারকিউশনে রবি রোজারিও ও তপন দাশ।
পুরো অনুষ্ঠান ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করেন হাসানাত জাহান। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আলী দুলাল।
এসএইচএম/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :