মনজুর এ আজিজ (জাতিসংঘ সদর দপ্তর নিউইয়র্ক থেকে) : অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে ও নতুনভাবে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বিদেশি বন্ধুদের সহযোগিতা চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিউইয়র্ক সময় মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ সহযোগিতা চান তিনি। জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার ৫০তম বছর উদযাপন উপলক্ষে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে বলেন, যুবসমাজের জীবন উৎসর্গ এবং অদম্য নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে। একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে তারা জীবন দিয়েছেন। তরুণদের আত্মত্যাগ আমাদের সামনে বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আমরা এ সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। তবে এটি বাস্তবায়নে আপনাদের সবার সমর্থন প্রয়োজন।
শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল আমরা তাদের হতাশ করতে চাই না। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি নতুন নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার সরকার কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, যুবসমাজের সামনে কোন স্বপ্ন ছিল না। স্বৈরাচার তাদের স্বপ্ন ও ভব্যিষতকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তাই তারা স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে বুলেটের সামনে দাঁড়াতে পিছপা হয়নি।
নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা যে সাহস ও প্রত্যয় দেখিয়েছে, তা আমাদেরকে অভিভূত করেছে। বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা পঙ্গুত্ব বরণ করতে পিছপা হয়নি। তাই তরুণদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়তে আমরা আপনাদের পাশে চাই।
নিউইয়র্ক সফররত প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি বৈঠক ও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলম শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাগুলো নিয়ে লেখা দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :