শিরোনাম

প্রকাশিত : ১৯ জুন, ২০২২, ০৮:০৪ রাত
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২২, ০৮:৫০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের বন্যা

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম

মিনহাজুল আবেদীন: ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, স্কাই নিউজ, কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা, বার্তা সংস্থা রয়টার্স, এএফপি, ভারতের এনডিটিভিসহ আন্তর্জাতিক প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যমে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যার খবর বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটি সংবাদমাধ্যমেই বন্যা পরিস্থিতিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, সেনাবাহিনীর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা এবং বন্যায় অন্তত ২৫ জনের প্রাণহানির কথা বলা হয়েছে। 

শনিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় বাংলাদেশের বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং বন্যাকবলিতদের উদ্ধার এবং ত্রাণ তৎপরতা চালানোর জন্য দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। বন্যায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আরও বৃষ্টি হবে। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো সিলেট এবং এই এলাকায় বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। 

শনিবার দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশি প্রতিবেদনে কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং লাখ লাখ বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। 

ভারতের আসামে বন্যা এবং ভূমিধসে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। আর শুক্রবার বিকেলের পর থেকে বাংলাদেশে বজ্রপাতে অন্তত ২১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এদের মধ্যে ময়মনসিংহের নান্দাইলের ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী তিন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ভূমিধসে চার জনের প্রাণহানি হয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে আরও বৃষ্টির শঙ্কার কথা বলা হয়েছে, তাই দুটি দেশেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। দুটি দেশই বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্ধার কাজ এবং ত্রাণ তৎপরতা চালাতে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামিয়েছে। 

স্কাই নিউজের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং প্রায় ৬০ লাখ মানুষ আটকা পড়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামনে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলেও প্রতিবেতনে উল্লেখ করা হয়। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, ভারি বৃষ্টিপাতে ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় বাংলাদেশে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৬০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে। শুক্রবারের পর থেকে নিহত এই ব্যক্তিদের মধ্যে আট জেলায় বজ্রপাতে অন্তত ১৫ জন এবং ভূমিধসে চার জনের প্রাণহানি হয়। 

সরকারি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০৪ সালের বন্যার পর এই বন্যায় সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। উজানে ভারতের পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে উঠে। শনিবারও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল এবং আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দু’দিন আরও অধিক বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে প্রকাশিত শনিবারের প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে বন্যায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যুর খবর এবং ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের নিচু অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের কাছে বন্যা নিয়মিত একটি বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বলা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এই বিপদের শঙ্কা এবং ভয়াবহতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং অপ্রত্যাশিত করে তুলেছে। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারি বর্ষণে ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬০ লাখ মানুষ আটকা পড়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের বিশেষজ্ঞরা এই বন্যাকে গত প্রায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করেছেন। সমকাল  

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়