শিরোনাম
◈ দিল্লিতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার রুপিতে ! ◈ খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা-সংঘর্ষ, গুলি (ভিডিও) ◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া

প্রকাশিত : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৭ দুপুর
আপডেট : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০৪:৫৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাংবাদিকদের আইনি হয়রানি বন্ধে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের আহ্বান

জাতিসংঘ

তরিকুল ইসলাম: সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি হয়রানি বন্ধে এবং প্রলম্বিত আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার চর্চা বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সেইসঙ্গে অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জেনেভায় ২০ ফেব্রুয়ারি এক বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানান। এমনকি এসব বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন এই বিশেষজ্ঞরা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশকে আহ্বান জানানো জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা হলেন- মক প্রকাশ ও প্রচারের অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান, মানবাধিকারকর্মীদের অবস্থা বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার মেরি ললর, নারী ও নারী শিশুদের প্রতি সহিংসতার কারন ও পরিণতি বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার রিম আলসেলাম এবং বিচারক ও আইনজীবীদের স্বাধীনতা বিষয়ক স্পেশাল র‌্যাপোর্টিয়ার মার্গারেট স্যাটাধুয়েট।

সরকারের প্রতি পরামর্শ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘সরকারের উচিৎ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক আইনি কার্যক্রম পুনর্বিবেচনা করা, একইসঙ্গে, ঔপনিবেশিক আমলের দাপ্তরিক গোপনীয়তার আইন এবং সাম্প্রতিককালের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটিও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন'। 

'সরকারের উচিত দেশের আইন এবং তার প্রয়োগকে মানবাধিকার রক্ষায় দেশটির আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা।'

বিশেষজ্ঞরা বলেন, 'অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থামিয়ে দিতে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করতে এবং সেলফ-সেন্সরশিপের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করতে বিচার ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ নয়'।

তারা বলেন, ‘আমরা এ বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিপ্ন যে, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা এবং তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা দৃশ্যত তাঁর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সাথে প্রত্যক্ষাভাবে সম্পর্কিত’ বাংলাদেশের বৃহত্তম দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলোতে কর্মরত রোজিনা ইসলাম ২০২১ সালে কোভিড-১৯ অতিমারীর সময়ে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি ও অব্যবস্থা এবং জরুরি চিকিৎসা উপকরণ সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে প্রতিবেদন করেন।

২০২১ সালের ১৭ মে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে রোজিনা ইসলাম স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রণালয়ের যান। সেখানে অবস্থানকালে বিনা অনুমতিতে কোভিড-১৯ এর টিকা ক্রয় সম্পর্কিত সরকারি নথিপত্রের ছবি সেলফোন ব্যবহার করে তোলার দায়ে তাঁকে অভিযুক্ত ও আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেসি আইন এবং দণ্ডবিধির আওতায় মামলা দায়ের করা হয়।

৩ জুলাই ২০২২ তারিখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করে। যেখানে বলা হয় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাত মাস পরে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই একই আদালত পুলিশকে অধিকতর তদন্ত চালাতে নির্দেশ দেয়। পরবর্তী শুনানিটি ২৪ ফেব্রুয়ারি হবার কথা'।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন,  ‘বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনার- যা প্রায়শই ভিত্তিহীন এবং পরে সেই সব মামলার মীমাংসা না করে ঝুলিয়ে রাখার বিপদজনক প্রবণতাটিরই প্রতিফলন রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় এই দীর্ঘসূত্রিতার বৈশিষ্ট্যটি। তাঁদেরকে হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো, হয়রানি করা এবং তাদেরকে চুপ করিয়ে দেয়ার উপায় হিসেবে এটা ব্যবহার করা হয়'।

স্বাধীন, সেন্সরশিপবিহীন এবং অবাধ গণমাধ্যমকে গণতন্ত্রের অন্যতম ভিন্তি হিসেবে উল্লেখ করে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে এবং সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে ঝুলিয়ে রাখা সব মামলা তুলে নিতে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতিআস্থান জানান।

বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন যে, প্রায়শই জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য, হয়রানি এবং সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয় বলে নারী সাংবাদিকেরা দ্বিগুণ ঝুঁকিতে থাকেন। তাঁরা আরো বলেন, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে যে কোনো কারিগরি পরামর্শ এবং সহযোগিতা দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত।

টিআই/এইচএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়