শিরোনাম
◈ দিল্লিতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার রুপিতে ! ◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১১:২৮ রাত
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:৫০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারে ৪ জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের অনুরোধ

নিউজ ডেস্ক: সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের চার বিশেষজ্ঞ। সেই সঙ্গে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আইনিপ্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার চর্চা বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। প্রথম আলো

আজ বুধবার এক বিবৃতিতে এসব আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতি প্রদানকারী এ চার বিশেষজ্ঞ হলেন মতপ্রকাশ ও প্রচারের অধিকার সংরক্ষণ এবং উন্নয়নবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান, মানবাধিকারকর্মীদের অবস্থাবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার মেরি ললর, নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি সহিংসতার কারণ এবং পরিণতিবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার রিম আলসেলাম এবং বিচারক ও আইনজীবীদের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার মার্গারেট স্যাটাথুয়েট।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ও তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা দৃশ্যত তাঁর অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বৃহত্তম সংবাদপত্র প্রথম আলোতে কর্মরত রোজিনা ইসলাম ২০২১ সালে কোভিড-১৯ অতিমারির সময় স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এবং জরুরি চিকিৎসা উপকরণ সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে প্রতিবেদন করেন। ২০২১ সালের ১৭ মে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বিনা অনুমতিতে কোভিড-১৯-এর টিকা ক্রয়সম্পর্কিত সরকারি নথিপত্রের ছবি মুঠোফোন ব্যবহার করে তোলার দায়ে তাঁকে অভিযুক্ত ও আটক করা হয়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেসি আইন ও দণ্ডবিধির আওতায় মামলা করা হয়।

২০২২ সালের ৩ জুলাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে বলা হয়, রোজিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সাত মাস পর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই আদালত পুলিশকে অভিযোগ অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তী শুনানি ২৪ ফেব্রুয়ারি হওয়ার কথা।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা, যা প্রায়ই ভিত্তিহীন এবং পরে সেসব মামলার মীমাংসা না করে ঝুলিয়ে রাখার বিপজ্জনক প্রবণতারই প্রতিফলন রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলার দীর্ঘসূত্রতার বৈশিষ্ট্য। তাঁদের হুমকি দেওয়া, ভয় দেখানো, হয়রানি করা ও চুপ করিয়ে দেওয়ার উপায় হিসেবে এটা ব্যবহার করা হয়।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থামিয়ে দিতে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করতে ও সেলফ সেন্সরশিপের (স্ব আরোপিত বিধিনিষেধ) সংস্কৃতি উৎসাহিত করতে বিচারব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞরা।

সরকারের প্রতি পরামর্শ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সরকারের উচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক আইনি কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা। একই সঙ্গে প্রয়োজন ঔপনিবেশিক আমলের দাপ্তরিক গোপনীয়তার আইন ও সাম্প্রতিককালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করা। এ ছাড়া সরকারের উচিত, দেশের আইন ও এর প্রয়োগকে মানবাধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা।

স্বাধীন, সেন্সরশিপবিহীন ও অবাধ গণমাধ্যমকে গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে এবং সাংবাদিক ও সম্পাদকদের বিরুদ্ধে ঝুলিয়ে রাখা সব মামলা তুলে নিতে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেন, প্রায়ই জেন্ডারভিত্তিক বৈষম্য, হয়রানি ও সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয় বলে নারী সাংবাদিকেরা দ্বিগুণ ঝুঁকিতে থাকেন। সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ সরকারকে যেকোনো কারিগরি পরামর্শ ও সহযোগিতা দিতে সব সময় প্রস্তুত আছেন জানিয়ে এই বিশেষজ্ঞরা বলেন, উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়