প্রচার সংখ্যা কারচুপি ও অসত্য তথ্য দেওয়ায় দৈনিক ভোরের কাগজের সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিল করেছে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি)।
গত ২৪ মার্চ ডিএফপি থেকে পত্রিকাটির সম্পাদক/প্রকাশকের কাছে মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিল করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও এটি প্রকাশ হয়েছে বুধবার (১৬ এপ্রিল)।
চিঠিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক ২০ জানুয়ারি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের কাগজের অফিস ও প্রেস চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের তিন সদস্যের একটি পরিদর্শন টিম পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে সংবাদপত্রের অফিস গেটে সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষ শ্রম আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্তের নোটিশ দেখা যায় এবং অফিস বন্ধ পাওয়া গেছে।
আরও বলা হয়, সংবাদপত্র অফিস বন্ধ পাওয়া গেছে বলে আন্দোলনরত কর্মচারীদের অভিযোগের বিষয়ে ডিএফপি থেকে অধিকতর তদন্ত করা হয়। প্রিন্টার্স লাইন অনুযায়ী হামরাই প্রিন্টিং প্রেস পরিদর্শন করে দেখা যায় সংবাদপত্রটি বন্ধ। এরপর সংবাদপত্রটি কোথায় ছাপানো হয় তা ডিএফপিকে জানানো হয়নি। দীর্ঘ তিন মাস পর সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষ ১১ মার্চ পুনরায় হামরাই প্রিন্টিং প্রেসে নতুন করে ছাপা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ মার্চ এ অধিদপ্তরের দুই সদস্যের পরিদর্শন টিম সংবাদপত্রটির প্রিন্টার্স লাইন অনুযায়ী সংবাদপত্রের অফিস কর্ণফুলি মিডিয়া পয়েন্ট ও হামরাই প্রিন্টিং প্রেসে সর্বশেষ পরিদর্শন করে। এ সময় অফিস বন্ধ পাওয়া যায় এবং প্রেসে ছাপা বন্ধ দেখা যায়। কোনো প্রিন্ট অর্ডার নেই। কয়েকটি সংবাদপত্র প্রেসে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে।
‘প্রেস ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, সংবাদপত্র ছাপানো শেষ। কত কপি ছাপানো হয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন ২০০-৩০০ কপি সংবাদপত্র ছাপা হয়। প্রেসে বিলের কথা বলা হলে তিনি বলেন হাতে হাতে অথবা বিকাশের মাধ্যমে সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করেন। কোনো তথ্য-প্রমাণ প্রেস কর্তৃপক্ষ এবং সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি, যা, ‘সংবাদপত্র ও সাময়িকীর মিডিয়া তালিকাভুক্তি এবং নিরীক্ষা নীতিমালা, ২০২২’ এবং ‘ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন, ১৯৭৩’ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
‘সংবাদপত্র ও সাময়িকীর মিডিয়া তালিকাভুক্তি এবং নিরীক্ষা নীতিমালা, ২০২২’ মিডিয়া তালিকাভুক্তি বাতিলের শর্তাবলি অনুযায়ী প্রচার সংখ্যা কারচুপি ও অসত্য তথ্য দেওয়ায় দৈনিক ‘ভোরের কাগজ’ সংবাদপত্রের সরকারি মিডিয়া তালিকাভুক্তি নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এখন থেকে দৈনিক ‘ভোরের কাগজ’ সংবাদপত্রটি সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সরকার নিয়ন্ত্রিত পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি এবং জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ অন্যান্য স্থানীয় প্রশাসনের বিজ্ঞাপন এবং নিউজপ্রিন্ট কোটা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।