শিরোনাম
◈ আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি ২৬ জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি ◈ ঈদের চাঁদ দেখা যাবে কবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে : সিপিডি ◈ শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ◈ প্রবল বৃষ্টিতে রক্তের মতো লাল সমুদ্র সৈকত, ভিডিও ভাইরাল ◈ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিব ◈ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ ◈ জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির ◈ কী ঘটেছিল সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে, জানালেন সারজিস ◈ গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০৫:০৯ বিকাল
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কী ঘটেছিল সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে, জানালেন সারজিস

ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া গত বৃহস্পতিবার মারা যাওয়ার পর তার জানাজা পড়তে মাগুরায় যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সেখানে মোবাইলে নোটিফিকেশন চেক করেন সারজিস, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

শনিবার দুপুরে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। পোস্টটি পাঠকদের হুবহু তুলে ধরা হলো...

সারজিস আলম তার পোস্টে লিখেন, চলেন সোজাসাপ্টা কিছু আলাপ করি। ওই যে- যেটা নিয়ে আপনারা আলাপ করছেন সেই ফুটেজ নিয়ে। বোন আছিয়ার সঙ্গে নৃশংস একটা ঘটনা ঘটলো। আমি আমার জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে জানালাম দ্রুত আসামি গ্রেফতার করার কথা।

‘আবার- হাইকোর্ট থেকে ঘোষণা আসলো ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমার মতামত জানালাম। ১৮০ দিন অনেক বেশি হয়ে যায়। এটা ১-২ মাসের মধ্যে করা উচিত। নাহলে মানুষের মাথা থেকে ঘটনাটা অনেকটাই মুছে যায় এবং সেই অপরাধের শাস্তি আদতে সমাজে অপরাধ দমনে তেমন প্রভাব রাখতে পারে না।’

তিনি বলেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে আমি একাই জানিয়েছি কিংবা আমার জানানোর জন্যই গ্রেফতার হয়েছে বা আইন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার জায়গা থেকে মনে হয়েছে এটা আমার করা উচিত তাই আমি করেছি। তবে সে বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি।

‘এরপর আছিয়াকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হলো। আমিও ঢাকা মেডিকেলে গেলাম। যখন জানলাম ICUতে আছে তখন আর ICUতে দেখতে যাইনি। কারণ বাইরে থেকে ICUতে দেখতে গেলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। মেডিকেলের বাইরে থেকে খোঁজখবর নিয়ে চলে এসেছি। ছবি পোস্ট করিনি।’

সারজিস আলম বলেন, এরপর যখন জরুরি অবস্থায় CMH নেওয়া হলো তখন সেদিনই সন্ধ্যায় নাগরিক পার্টির কয়েকজন সহ CMH গিয়েছি। সেখানেও ICUতে ছিল আছিয়া। দেখতে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল বলে CMH এর সামনে থেকে ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে কথা বলে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে বাসায় ফিরেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর CMH এ থাকা আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের থেকে খোঁজ নিয়েছি।

এনসিপির এই নেতা বলেন, সবশেষে যখন শুনলাম আছিয়া আর নেই তখন সিএমএইচে ছুটে গিয়েছি। সেনাবাহিনী, র্যাব থেকে পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত হেলিকপ্টারে যখনই একাধিক সিট খালি থাকার কথা শুনেছি তখনই মাগুরায় গিয়ে আছিয়ার জানাযায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি এবং জানাযা পড়ে আবার ঢাকায় ব্যাক করেছি।

‘এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেয়া অংশটুকু কে ‘সামগ্রিক’ মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো ।’

তিনি আরও লেখেন, তার মানে আমরা যতটুকু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করি ততটুকুই হচ্ছে বলে আপনারা মনে করেন এবং সেটাকে পুরো ঘটনা ধরে জাজমেন্ট শুরু করে। অর্থাৎ আপনারাও আসলে ফুটেজের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। আবার যদি কোনো কিছু না দেই তখন মনে করেন কিছুই করা হয়নি! কি অদ্ভুত!

উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, দিলে বলেন ফুটেজমুখী আর না দিলে বলেন কিছুই করেনি। আপনাদের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কবে একটা সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হবে?

আবার আরেকটা ঘটনা লক্ষ্য করেন। আছিয়ার জানাজা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। আমরা পৌঁছেছি সাড়ে পাঁচটায়। এই দেড় ঘন্টা একটা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করেছি। তার মধ্যে কয়েক মিনিট হয়তো ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। ঠিক ওই সময়ে কেউ ছবি তুললো এবং কালের কন্ঠ একাধিক বারের মতো এবারও অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের অনলাইন পোস্টারে সেটা প্রকাশ করলো। পাশাপাশি এমনভাবে দেখালো যে আমরা মনে হয় পুরো সময় বসে শুধু ফোনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চাইলেই কিন্তু তারা ওখানে বসে থাকার অন্য সময়ের নরমাল কোন ছবি ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু কিছু রিয়াকশন বেশি পাওয়ার আশায় সেটা তারা করেনি।

আচ্ছা নিজের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন- দেড় ঘণ্টা কোথাও বসে থাকলে অন্তত কয়েক মিনিট আপনারা ফোনের নোটিফিকেশন চেক করতেন কিনা? যদি করেন তাহলে আপনাদের এই ভিউখোর মনোভাব বন্ধ হবে কবে? কবে পেশাদারিত্বের পরিচয় দেওয়া শুরু করবেন? যোগ করেন সারজিস।

‘শুনেন, ঘরে বসে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাজমেন্টের বড় বড় এনালাইসিস কপচানো যায়। কিন্তু যাদেরকে আপনারা সুযোগ পেলেই নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করেন- যেকোনো ফরমেটে, যেকোনো সীমাবদ্ধতা নিয়েই হোক না কেন; দিনশেষে তারাই মাঠে দৌড়ায়।’

‘এরপর থেকে অনলাইনে এসব এনালাইসিস দেওয়ার আগে অফলাইনে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করে কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। আমরা আপনার ভালো কাজগুলো অনুসরণ করার অপেক্ষায় থাকবো।’

সবশেষ তিনি লেখেন-Take care.

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়