শিরোনাম
◈ আমি উপদেষ্ট হতে চাই না, উপদেষ্টা হওয়ার মতো দুইটা জিনিস আমার নাই: হিরো আলম ◈ রাজধানীর পল্লবীতে ২ ছেলেকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা ◈ পুলিশ থেকে প্রত্যাহার হলো আনসার ◈ ২১ শে নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসে যান চলাচল সীমিত থাকবে ◈ জুলাই আন্দোলনের আড়ালে দেশ ধ্বংসের নীলনকশা, আত্মগোপনে থেকে নানকের বিবৃতি ◈ ঢাবি ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ নেতাদের পদ পাওয়ার অভিযোগ ◈ ভারতের মিডিয়ার বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচার, সতর্ক থাকার আহ্বান  ◈ রাতে মালদ্বীপের বিরুদ্ধে বছরের শেষ ম্যাচ খেলবে  বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কা টি-টেন ক্রিকেটে সৌম্য-সাকিবদের সূচি চূড়ান্ত  ◈ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াড ঘোষণা, নেই হোল্ডার

প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:০৮ দুপুর
আপডেট : ১৬ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতের মিডিয়ার বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা প্রচার, সতর্ক থাকার আহ্বান 

মহসিন কবির: ভারতীয় মিডিয়ার প্রতিদিন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মিথ্যা রিপোর্ট প্রচার করছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে অপপ্রচারের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য জনগণকে সতর্ক থাকার অহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। 

ডেমোক্রেটিক দলীয় সাবেক এমপি এবং পরে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দান কারি তুলসী গ্যাবার্ডের মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করা পুরানো একটি প্রস্তাব নিয়ে এবার বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণায় মেতে উঠেছে ভারতীয় মিডিয়া।

বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রস্তাবটি আনা হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই। শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে ভারতীয় কিছু মিডিয়ায় পুরনো এই রেজুলেশনটি নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে। এটি এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে যেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ হয়েছে বা হিন্দুদের উপর নির্যাতনের এই অভিযোগ সম্প্রতি আনা হয়েছে। অথচ এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয় তৎকালীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের শাসনামলে।

আওয়ামী লীগ শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের উপর যে কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।‌ এমনকি আসামের একটি পত্রিকায় আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে ‘হিন্দুরা থাকলে ভোট পাই, আর চলে গেলে জমি পায়’ শিরোনামে সে সময় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় যা দুদেশে তোলপাড় ফেলে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত সরকার ও ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বরাবরই মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে।‌ অথচ সে দেশে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। যা নিয়ে মার্কিন সরকার বিভিন্ন সময় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে আনা এই প্রস্তাবকে‌ বর্তমান ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা কেবলই হাস্যকর।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের ভিডিও চ্যানেল মিন্ট-এ তুলসী গ্যাবার্ডের পুরনো ভিডিওটি প্রচার করা হয়। যা নিয়ে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভারতীয় মিডিয়ায় এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যেন তুলসী গ্যাবার্ডে একজন আন্তর্জাতিক ইন্টেলিজেন্স। অথচ তাকে একজন অভ্যন্তরীণ ইন্টেলিজেন্স হিসেবে জানে সবাই ‌

‘বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আহ্বান’ শিরোনামে সেই প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন কংগ্রেস সদস্য তুলসী বলেন, বাংলাদেশে ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়ের কারণে নির্যাতন ভোগ করে চলেছে এই জনগোষ্ঠীগুলো।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নির্যাতনের সূচনা ঘটে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে হিন্দু শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম আক্রমণ চালায়, যেখানে প্রথম রাতেই ৫-১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই অভিযান ১০ মাস ধরে চলে, যার ফলে দুই থেকে তিন মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু এবং ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। মার্কিন সিনেটর টেড কেনেডি সেসময় বাংলাদেশি শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করে এ পরিস্থিতিকে ‘সন্ত্রাসের সুনির্দিষ্ট অভিযান এবং গণহত্যার ফলাফল হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও ইসলামি চরমপন্থীদের দ্বারা হিন্দু, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও মুক্তচিন্তকদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনায়, শতাধিক চরমপন্থী দল বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির আক্রমণ, ট্রেন ধ্বংস, সরকারি ভবন, প্রেস ক্লাব এবং গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ করেছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অন্যান্য দেশেও দেখা গেছে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের মতে, এই পরিস্থিতি রুখতে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।    

আওয়ামী লীগের একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’। রোববার (১০ নভেম্বর) তারা এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্প্রচার করেছে। সংবাদে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্র্যাক্স ডাউন অন ট্রাম্প সাপোর্টার্স আফটার হি ডিক্রাইস এন্টি-মায়নোরিটি অ্যাটাকস (সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার নিন্দা জানানোর পর বাংলাদেশে ট্রাম্পের সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে)।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত এই পরিকল্পনাটি ছিল দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি সম্প্রতি তার নেতাকর্মীদের এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভারত থেকে শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের নতুন একটি বিক্ষোভের নির্দেশনা দেওয়ার কল রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। এতে তিনি নেতাকর্মীদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবিসহ প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করতে বলেন। যদি তারা বাধাপ্রাপ্ত হয় সেগুলোর ছবি-ভিডিও তুলে তাকে পাঠাতে বলেছেন। তিনি সেটা ট্রাম্পকে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করবেন। নির্দেশনা মেনে আওয়ামী লীগের কর্মীরা শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে মিছিলের প্রস্তুতি নেয়। এসময় মোট ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তবে বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশন করেছে ইন্ডিয়া টুডে। সংবাদ মাধ্যমটি দাবি করেছে, শুক্রবার রাত থেকেই বাংলাদেশে ট্রাম্প সমর্থকদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। তাদের ধরতে যৌথবাহিনী বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছে।

ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের হিন্দু সমাজের ওপর হামলা নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামাণিক। মঙ্গলবার (০৬ আগস্ট) বাংলা আউটলুককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট গোবিন্দ প্রামাণিক বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরে এদেশের হিন্দু সমাজ মনে করেছিল যে তাদের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটবে। কিন্তু গতকাল বিকালে জামায়াত ও বিএনপির নেতারা তাদের সব নেতাকর্মীদের হিন্দুদের বাড়িতে হামলা-লুটপাট যাতে না হয় এবং মন্দিরে যেন পাহারার ব্যবস্থা করা হয় সেই নির্দেশ দেয়। গতকাল থেকে দেখেছি তারা পাহারা দিয়েছেন।  

তিনি আরও বলেছেন, যে কারণে সাধারণভাবে হিন্দুদের ওপর কোনো ধরনের হামলা হয়নি বা কোনো মন্দিরে ভাঙচুর হয়নি৷ কিছু আওয়ামী লীগ হিন্দু নেতা রয়েছেন যারা বিভিন্ন সময়ে লম্ফঝম্প করেছিলেন, তাদের বাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ হয়েছে। একই সাথে মুসলমান আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে গুটি কয়েক সুযোগ সন্ধানী লোক মন্দিরে হামলা করেছে। সেটা তেমন কোনো বিষয় না।  

দেশে সংখ্যালঘুরা হামলার শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ধর্মীয় কারণে নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন তারা। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার যেসব ছবি এবং ভিডিও দেশটির বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে, তার বেশির ভাগই ভুয়া।

শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের এক কর্মসূচিতে ছাত্র হত্যার বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। অথচ ভারতীয়রা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে ‘সাহায্যপ্রার্থী হিন্দু নারী’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করছে।

ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে বাঁধন ও সালমান মুক্তাদির কথা বলেছেন। এবার এ প্রসঙ্গে সরব হলেন জনপ্রিয় নির্মাতা বর্তমানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। গত ১৩ আগস্ট একটি পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্টও দিয়েছেন তিনি।

পোস্টে ফারুকী লিখেছেন, হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিল বাঁধন, অথচ একটি এক্স আইডিতে তাকে সাহায্যপ্রার্থী হিন্দু নারী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সার্কাস। আপনাদের পরিস্থিতি আরেকটু ভালোভাবে বোঝানোর জন্য বলছি, বাঁধনের পেছনে চশমা পরা যে লোকটি দাঁড়িয়ে আছেন, পিপলি আর খান নামে সে ব্যক্তি হাসিনাকে নিয়ে একটি সিনেমাও বানিয়েছিলেন। আন্দোলনে তিনিও শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি আরও লেখেন, প্রথম দিন থেকেই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবং (ভারতের) সামাজিকমাধ্যমের একটি অংশ জনতার বিপ্লবকে ইসলামপন্থীদের আন্দোলন হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে, এটা স্রেফ মিথ্যাচার।

এই নির্মাতা লিখেছেন, দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন, সে (শেখ হাসিনা) একজন অত্যাচারী। শশী থারুর ঠিক বলেছেন যে, তার সময় শেষ হয়ে গেছে। তার হাত রক্তে রঞ্জিত। এই সুযোগে ভারতের উচিত ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে সেতুবন্ধন তৈরি করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তারা এখনও সে চেষ্টা করেনি।

ভারত থেকে পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল রিপাবলিকে 'চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ করার উস্কানী দিয়ে' ভারতীয় উপস্থাপকের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এ বিষয় নিয়ে ১৪ নভেম্বর এক বিবৃতি দিয়েছেন তিনি।

বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, 'ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেল রিপাবলিক টিভির উপস্থাপক চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ করার উস্কানী দিয়ে বলেছেন যে, চট্টগ্রাম ১৯৪৭ সালে ভারতের হাত ছাড়া হয়ে যায়। এখন কৌশলগতভাবে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হয়ে গেলে বঙ্গোপসাগর দখল করা যুক্তরাষ্ট্র বা বিশ্বের কোনো পরাশক্তির পক্ষে সম্ভব নয় বলে উপস্থাপক বলেছেন। আমি ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেল রিপাবলিক টিভির উপস্থাপকের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলতে চাই, ভারতীয়দের ওই ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল।'

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, 'ওই উপস্থাপক আরও মন্তব্য করে বলেছেন 'বাংলাদেশে নাকি হিন্দু নিধন করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী চট্টগ্রামের হিন্দুদের ঘরে ঘরে ঢুকছে।' উপস্থাপকের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, অবান্তর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য আমি ভারতীয় ইউটিউব চ্যানেল রিপাবলিক টিভির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে ভারতীয়দের এ ধরনের অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানানোর ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।'

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘ভারতীয় গণমাধ্যম আমাদের ব্যাপারে নিয়মিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা মিথ্যা রিপোর্ট ডেইলি দিয়ে যাচ্ছে, তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’ বরিশালে ১৩ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয়রা মিথ্যা রিপোর্ট দেয়, সেটা সবাই জানে। এখন তারা সত্যি রিপোর্টও দিলে সেটাও সবাই মিথ্যা ভাববে। তাই আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমে এর প্রতিবাদ করুন এবং এ ব্যাপারে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে পাশে থাকুন।’ তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি, যেন আপনারা সত্য রিপোর্ট দেন। আমরা যদি কোনো ভুল করি, তা রেক্টিফাই করতে বলুন, কিন্তু মিথ্যা রিপোর্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।’

ভারতের সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যাচার বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ১৩ নভেম্বর বিবিসি হিন্দিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা আমাদের নাগরিক। তাদের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে ভারতের কিছু বলার দরকার নেই। বরং ভারতের উচিত ছিল, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া গণহত্যা সম্পর্কে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করা।’

অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করলেও ভারত করেনি। গণহত্যায় অভিযুক্ত হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত হয়ে ভারতে পালিয়েছে, তাদের বিচার করতে ভারতের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সব খবর রাখছি। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারত। তবে আমাদের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে বড় ধরনের কোনও সহিংস ঘটনা হয়নি। যেমন, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়