আজকের পত্রিকা : দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর ‘নির্বাচন নিয়ে সরকারের বক্তব্যে সন্দেহ তারেকের’। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ বিষয়ে সরকারের কাছে আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান সফলকারী জনগণের সামনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করেছে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য সময় নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন রকম বক্তব্য এসেছে। এমন একটি কাঙ্ক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সরকারের বক্তব্যের গরমিল জনগণের মনে নানা ধরনের সন্দেহ-সংশয়ের উদ্রেক করে।’
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়।
সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আরও দায়িত্বশীল, গণমুখী এবং কার্যকর দেখতে চায়। কারণ, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং জনগণের সরাসরি ভোটে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণ বর্তমান সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের নিঃশর্ত সমর্থনের প্রতি নিঃশর্ত মূল্য দেওয়া এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব।’
সরকারের সংস্কার উদ্যোগ প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্র ও রাজনীতি সঠিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সংস্কার কার্যক্রম অবশ্যই একটি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বরাবরই সংস্কারের পক্ষে। তবে সংস্কার একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। কখনো কখনো এটি সময়সাপেক্ষ। তবে যেকোনো সংস্কারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশীদারত্ব সৃষ্টি না হলে সেই সংস্কার শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ফল আনে না।’
তারেক রহমান বলেন, ‘গণহত্যাকারী পলাতক স্বৈরাচারের রেখে যাওয়া ১৫ বছরের জঞ্জাল দূর করে রাষ্ট্রকে জনগণের প্রত্যাশিত গণতন্ত্রের পথে ফেরাতে একটি সরকারের জন্য আড়াই মাস হয়তো যথেষ্ট সময় নয়। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করণীয় নির্ধারণে এবং অগ্রাধিকার ইস্যু ঠিক করার জন্য হয়তো আড়াই মাস কম সময়ও নয়। আমি আগেও বলেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অ্যাজেন্ডা সেটিংয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থ হলে সেটি প্রত্যাশিত গণতন্ত্র উত্তরণের পথে অনাকাঙ্ক্ষিত বাধার কারণ হয়ে উঠতে পারে।’
প্রথম আলো : দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ১৪১৬ ইউপি চেয়ারম্যান ‘পলাতক’, অপসারণ নিয়ে টানাপোড়েন। প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্তানের জন্মনিবন্ধন করাতে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন কৃষক মো. আক্তারুজ্জামান। এই ইউপিতে চেয়ারম্যান নেই। একজন শিক্ষা কর্মকর্তা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে এক বেলা বসে থেকেও তাঁর দেখা পেলেন না আক্তারুজ্জামান।
একই দিন ওই ইউপিতে নাগরিকত্বের সনদ নিতে গিয়েছিলেন নাজিম উদ্দিন। তাঁকেও সেদিন সনদ ছাড়াই ফিরতে হয়েছে। তরগাঁও ইউপিতে প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়া সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ফাতেমা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানালেন, স্কুল পরিদর্শনের কাজে সকাল থেকে ব্যস্ত তিনি। ইউপিতে যাওয়ার সময় পাচ্ছেন না।
নাগরিক সেবা নিয়ে এমন দুর্ভোগ শুধু তরগাঁও ইউপিতেই নয়, কাপাসিয়া উপজেলার বাকি ইউনিয়নগুলোতেও প্রায় একই চিত্র। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ওই উপজেলার ১১টি ইউপির চেয়ারম্যানরা নিজ কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। তাঁরা সবাই পলাতক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ৫ আগস্টের পর থেকে সারা দেশে ১ হাজার ৪১৬ জন ইউপি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে অনুপস্থিত, যা মোট ইউনিয়ন পরিষদের এক-তৃতীয়াংশ। তাঁদের বেশির ভাগের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। তাঁরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। আবার কেউ কেউ নিজেদের ওপর হামলা হবে, এমন আশঙ্কা থেকে কার্যালয়ে যাচ্ছেন না।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে এখন ইউনিয়ন পরিষদ আছে ৪ হাজার ৫৮০টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৬৪ জন চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করছেন। তবে কত সংখ্যক ইউপি সদস্য বা মেম্বার অনুপস্থিত, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এমন বাস্তবতায় শুধু দেড় হাজার নয়, সাড়ে ৪ হাজার ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকেই অপসারণের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এ নিয়ে দোটানায় রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তৃণমূলের এসব জনপ্রতিনিধিকে অপসারণ করার পর সেখানে বিপুলসংখ্যক প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে। এত কর্মকর্তা কোথায় পাওয়া যাবে কিংবা সেই প্রশাসকেরা আদৌ কাজ করতে পারবেন কি না, এ নিয়ে আলোচনা চলছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
অবশ্য স্থানীয় সরকারবিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে না দিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান দিয়ে পরিষদ পরিচালনা করলে সেটি বেশি কার্যকর হবে।
যুগান্তর : ‘মূল্যস্ফীতি রোধে ৪ পদক্ষেপ’ এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান সংবাদ। খবরে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার চার পদক্ষেপ বাস্তবায়নে তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে এগুলো বাস্তবায়নে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অসহযোগিতা। সুযোগ বুঝে অসাধু ব্যবসায়ীদের বেশি মুনাফার প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। বিভিন্ন স্তরে চাঁদাবাজি হচ্ছে। এসব কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে।
এসব সমস্যা বিগত সরকারের তৈরি। কিন্তু সেগুলো এখন মোকাবিলা করতে হচ্ছে বর্তমান সরকারকে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার, টাকার প্রবাহ হ্রাস, শুল্ক কমানো, সুদের হার বৃদ্ধি এবং বাজার তদারকি জোরদারের মতো চার পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোসহ প্রয়োজনীয় আরও উদ্যোগের ফলে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারকে এখন সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায়। এজন্য শিল্পের কাঁচামাল আমদানির পথ অবারিত রাখতে হবে। উৎপাদন খাতে টাকার জোগান বাড়াতে হবে।
সরবরাহ ব্যবস্থায় সব ধরনের বাধা অপসারণ করতে হবে। যেসব ব্যবসায়ী সন্দেহভাজন বা পলাতক তাদের বিশেষ তদারকির আওতায় আনতে হবে। যাতে বাজারে পণ্যে মূল্য বাড়াতে তারা কারসাজি করতে না পারে। পাশাপাশি বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে হবে।
তারা আরও বলেছেন, সরকার পণ্যমূল্য কমাতে আমদানি শুল্ক কমাচ্ছে। শুধু আমদানি পণ্যের শুল্ক কমিয়ে পণ্যের দাম কমানো সম্ভব নয়। অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপ বাজারে কোনো সুফল বয়ে আনেনি। শুল্ক কমানোর সুফল পেতে হলে প্রয়োজন যথাযথভাবে বাজার তদারকি।
সমকাল : দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম ‘সাজা দিয়েও সামলাতে হিমশিম বিএনপি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দল ও নেতাদের ভাবর্মূতি আরও বাড়িয়ে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। তবে দলের হাইকমান্ডের এ আশা পূরণে ‘পথে কাঁটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন মাঠপর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী। তাদের দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দলের ভাবমূর্তি।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না দলটি। আড়াই মাসে সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কারসহ নানা সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েও লাগাম টানা যাচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে কতিপয় নেতাকর্মী দলের কঠোর অবস্থানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। এ পরিস্থিতিতে কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে দলটির হাইকমান্ড। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়ে লাগাম টানার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের ‘জিরো টলারেন্সে’র কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ অপকর্ম ও বিরোধে জড়িয়ে এরই মধ্যে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী দল থেকে বাদ পড়ছেন। একইসঙ্গে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব–কোন্দল থাকলেও প্রকাশ্যে বিরোধে জড়াতে ভয় পাচ্ছেন কেউ কেউ।
আবার অনেকে নিজের এবং দলের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে ‘গোপনীয়তা ও সর্তকতা’ অবলম্বনের মাধ্যমে নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছেন। দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মনে করেন, সারাদেশের মুষ্টিমেয় নেতাকর্মীর নেতিবাচক কাজের দায় দলের সবাইকে নিতে হচ্ছে। নানা কায়দায় যারা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধা নিয়েছেন এখনও তারাই চাঁদাবাজি ও দখলদারিতে জড়িয়ে পড়ছেন।
কালের কণ্ঠ : দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘আগামী বছরই জাতীয় নির্বাচন!’। খবরে বলা হয়, নির্বাচন কবে? বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতার পালাবদলের পর কোটি মানুষের এখন এই প্রশ্ন। ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতা নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই স্পষ্ট করছে না। তবে সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল নির্বাচন আগামী বছর নাগাদ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন। এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন।
নির্বাচন কি আগামী বছরের মধ্যেই হতে যাচ্ছে? ঘোষণা না দিলেও সরকার কি ওই পথেই হাঁটছে? দেশজুড়ে এখন এটিই আলোচনার কেন্দ্রে। আগামী বছরের মধ্যে নির্বাচন করা নিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তবে নির্বাচনের ‘সময়’ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আশ্বস্ত হতে পারছে না বিএনপি। আইন উপদেষ্টার বক্তব্যের সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি জামায়াত।
অন্য দলগুলোর মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন কখন হবে, কিভাবে হবে, নির্বাচন করার আগে কী কী কাজ সম্পন্ন করতে হবে—তা অর্ন্তবর্তী সরকারের বিবেচনার বিষয়।
টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা ওই সরকারের বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগ।
বিনা ভোটে নির্বাচন, হত্যা, গুম, খুন, ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমন, দুর্নীতি, অনিয়ম, দখলবাজি, সন্ত্রাসসহ বিস্তর অভিযোগের চূড়ান্ত পরিণতি হলো জনরোষে ক্ষমতা থেকে অপসারণ।
বণিক বার্তা : ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প নিয়ে দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর ‘কাজ বন্ধ রেখে সিঙ্গাপুরের আদালতে তিন ঠিকাদার’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঠিকাদারদের মধ্যে ‘মেজরিটি’ শেয়ারের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রকল্পের তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
যদিও গত ১ সেপ্টেম্বর এ সম্পর্কিত লিভ টু আপিল অকার্যকর মর্মে নিষ্পত্তি করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন একটি আপিল বেঞ্চ। বাংলাদেশে সালিশি মামলাটি অকার্যকর হলেও সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারে এ সম্পর্কিত একটি মামলা এখনো চলমান রয়েছে। কাজ বন্ধ রেখে এখন সিঙ্গাপুরের আদালতে মামলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রকল্পের তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮ অক্টোবর সিঙ্গাপুর আরবিট্রেশন সেন্টারে সালিশি মামলাটি নিয়ে একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার একই আদালতে একই বিষয়ে আরেকটি শুনানি হলেও মালিকানার বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদারদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে আংশিক চালু হওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অবশিষ্ট কাজ শেষ করা নিয়েও দেখা দিয়েছে জটিলতা।
‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি) মডেলে ঢাকার প্রথম দ্রুতগতির উড়ালসড়ক নির্মাণ করছে ‘ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেড’। যৌথভাবে এ কোম্পানির মালিক থাইল্যান্ডভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই, চীনের শ্যাংডং সিএসআই ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক ইতাল-থাই। যদিও চীনের দুই ঠিকাদার ইতাল-থাইয়ের বিরুদ্ধে ঋণ চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে এবং কোম্পানির আরো শেয়ার দাবি করেছে। আর তাদের দাবি মেনে শেয়ার হস্তান্তরে রাজি নয় ইতাল-থাই।
নিউ এজ : দৈনিক নিউজ এজ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ‘Little efforts to reclaim grabbed forest land in Bangladesh’, অর্থাৎ ‘বনভূমির বিস্তীর্ণ এলাকা গত কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন মহলের দখলে রয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলে চলতি বছরের অগাস্টের শুরুতে সরকার পরিবর্তনের পরও দখলে থাকা জমি পুনরুদ্ধারের জন্য কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর বিভিন্ন মহল থেকে বারবার এ বিষয়টি সম্পর্কে তাদেরকে জানানো সত্ত্বেও তারা দখলদারদের উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমিন হোসেন অবশ্য দাবি করেন, দখল হয়ে যাওয়া বনভূমি পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আগের চেয়ে বেশি চেষ্টা করছেন।
দেশ রূপান্তর : দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর ‘পরোয়ানার পর শেখ হাসিনাকে কি ফেরত আনা সহজ হবে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি এখন নতুন করে আলোচনায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে তিনি দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন। এরই মধ্যে তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বা ‘লাল পাসপোর্ট’ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সম্প্রতি ভারত সরকার তার ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে দিল্লির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি। এমনকি শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে কি না, তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
ভারত ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়ায় বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে না। প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও ভারত সরকার না চাইলে তাকে বাংলাদেশে আনা যাবে না। এটাও প্রত্যর্পণ চুক্তিতেই রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে চলা হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শুরু করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রথম দিনই আলাদা দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনার পরই পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আদালত এক মাস সময় দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে তাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত আনার জন্য যা যা প্রয়োজন, সেটি অবশ্যই আমরা করব।’
কোন প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনাকে ফেরত আনা হবে এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কীভাবে আনা হবে সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো কোর্ট বলেছেন তাদের গ্রেপ্তার করতে। পরোয়ানা তো আমার কাছে আসেনি, এসেছে পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশ সেটি পারবে না। কারণ তিনি দেশে নেই। যখন আমাদের কাছে আসবে তখন দেখা যাবে।’
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, শেখ হাসিনা ইস্যুতে এখনো দুপক্ষই চুপচাপ। তাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত দিল্লির কাছে কোনো অনুরোধ জানানো হয়নি। তাছাড়া শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক অনেক বেশি শীতল যাচ্ছে। ভারতের ভিসা কার্যক্রম অনেকটা বন্ধ রয়েছে। সীমান্তেও কিছুটা অস্থিরতা আছে। ফলে এ নিয়ে আলোচনা এগোয়নি।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ফলে এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে বলে মনে হয় না। তাছাড়া ভারত এর আগেও এমন ব্যক্তিকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে।
ইত্তেফাক : দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘বিচারপতি অপসারণের পথ উন্মুক্ত হচ্ছে’। খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অপসারনের পথ উন্মুক্ত হচ্ছে। দীর্ঘ আট বছর পর ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ শুনানির উদ্যোগ নেওয়ায় এমন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার মামলাটি আপিল বিভাগের দৈনন্দিন কার্যতালিকার এক নম্বর এমিকে রয়েছে। ওইদিন মামলাটি নিষ্পত্তি হলে সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারপতিদের বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ বদান্তর বাধা দূর হবে বলে জানিয়েছেন আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার রিভিউ শুনানির উদ্যোগ না নেওয়ায় দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠার পরও হাইকোটের তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত ঝুলে রয়েছে পাঁচ বছর ববে। এখন রিভিউ নিষ্পত্তি হলেই ওই তিন বিচারপতিসহ মোট ১৫ বিচারপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক-আর হক ইত্তেফাককে বলেন, আপিল বিভাগের বায়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি পুন:র্বহাল করা হয়েছে। এই রায়ের উপর কোন স্থগিতাদেশ নাই। রবিবার আপিল বিভাগে রিভিউ নিষ্পত্তির পর বিচারপতি অপসারনের পথ পরিষ্কার হবে বলেও জানান তিনি।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, রিভিউ পিটিশন প্রত্যাহার করে নিলে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পদ্ধতি পুনরুজ্জীবিত হবে। যখন ওই পদ্ধতি পুনরুজ্জীবিত হবে এখন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের কাউন্সিল গঠন করতে কোন বাধা থাকবে না।
নয়া দিগন্ত : ‘পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্র’ এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের আহ্বানে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচী আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা এ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা দেয়ার পর সারা দেশে সমিতির অধীনস্থ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
আন্দোলনের সমন্বয়ক, পল্লী বিদ্যুতের এজিএম আব্দুল হাকিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী দাবির বিষয়ে আলোচনার জন্য সময় চেয়েছেন। মামলা প্রত্যাহার এবং আটকদের ছেড়ে দেয়াসহ কোনো প্রকার হয়রানি না করার আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাহফুজ আলম বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতের শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। আমরা বলব আমাদের সাথে আলোচনায় আসতে।’
বাসস জানিয়েছে, বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার অভিযোগে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় দায়েরকৃত পৃথক দুটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) ছয় কর্মকর্তার তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন-মুন্সীগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, কুমিল্লার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দীপক কুমার সিংহ, মাগুরার শ্রীপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাহাত, নেত্রকোনার সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বেলাল হোসেন। এদের মধ্যে বেলাল হোসেন এক মামলার আসামি। অপর পাঁচজন আরেক মামলার আসামি।
গতকাল তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক আশিকুর রহমান দেওয়ান তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আপনার মতামত লিখুন :