ভারতের পশ্চিমবঙ্গের টেলিভিশন চ্যানেল রিপাবলিক বাংলার অন্যতম পরিচিত মুখ ময়ুখ রঞ্জন ঘোষ। তার সংবাদ উপস্থাপনার অদ্ভুত এবং ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ ধরন নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ময়ুখের সংবাদ পরিবেশনের ধরন অনেকেই একে মলম বিক্রেতাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ফলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
মলম বিক্রেতা ও জোকার উপমা
বাংলাদেশে অনেক দর্শক ময়ুখের কণ্ঠস্বরের উচ্চতা এবং তার অঙ্গভঙ্গিকে ‘মলম বিক্রেতা’ বা ‘জোকার’-এর সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাকে নিয়ে ট্রল, সমালোচনা এবং চর্চা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশে ময়ুখের সংবাদ পরিবেশনকে ‘অতিরঞ্জিত’ এবং ‘নাটকীয়’ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। বিশেষত, তার চিৎকার-চেঁচামেচি ও অঙ্গভঙ্গি অনেকের কাছে বিরক্তিকর ও অতিরঞ্জিত বলে মনে হয়েছে।
টিআরপি কৌশল নাকি প্রকৃত সাংবাদিকতা?
ময়ুখ রঞ্জনের এই উগ্র উপস্থাপনার পেছনে মূলত টিআরপি (টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট) বাড়ানোর একটি কৌশল রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। রিপাবলিক বাংলা চ্যানেলটি বিজেপি-পন্থী সংবাদ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত এবং তাদের মূল উদ্দেশ্য হল যে কোন উপায়ে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ময়ুখ রঞ্জন এই কৌশলকে কাজে লাগিয়ে তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ও চ্যানেলের টিআরপি বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেন বলে অনেকের ধারণা।
বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশে রিপাবলিক বাংলা এবং ময়ুখ রঞ্জনের জনপ্রিয়তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে তাকে শুধুমাত্র বিনোদনের উপকরণ হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ আবার তার সাংবাদিকতার প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করছেন। ময়ুখের এই অস্বাভাবিক কণ্ঠস্বর এবং চিৎকার-চেঁচামেচি অনেক দর্শকের কাছে অযাচিত এবং সংবাদের গুরুত্বকে ক্ষুণ্ণ করে বলে মনে করা হয়। কেউ কেউ তো তাকে ‘মৃগীরোগী’ বলেও উপহাস করেছেন।
সংবাদ উপস্থাপনায় নতুন ধারা নাকি বিরক্তিকর প্রবণতা?
ময়ুখ রঞ্জন ঘোষের এই অভিনব উপস্থাপনা পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যমের বর্তমান অবস্থার প্রতিফলন বলে মনে করছে বাংলাদেশের অনেক দর্শক। যেখানে উত্তেজনা এবং বিনোদনমূলক উপাদানকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদকে নাটকীয়ভাবে পরিবেশন করা হয়। তবে এ ধরনের উপস্থাপনা কতটা কার্যকরী বা সাংবাদিকতার নৈতিকতার সাথে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্য মে এ নিয়ে রয়ে বিস্তর আলোচনা।
ময়ুখ রঞ্জন ঘোষের উপস্থাপনা দর্শকদের একাংশের কাছে বিনোদনমূলক হলেও, অনেকের মতে এটি সাংবাদিকতার প্রকৃত মান ও গুরুত্বকে ক্ষুণ্ণ করে। তার অস্বাভাবিক উপস্থাপনাশৈলী পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সংবাদজগতে একটি হাস্যকর নতুন ধারার সৃষ্টি করেছে। এটি মূলত চমকপ্রদ এবং অস্বাভাবিক সংবাদ পরিবেশনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি বলে মনে করছেন দর্শকরা। সূত্র : এটিএন নিউজ, ভোরের কাগজ
আপনার মতামত লিখুন :