শিরোনাম
◈ দেশি-বিদেশি মাস্টারপ্ল্যান আওয়ামী লীগকে মাঠে নামানোর পেছনে ◈ পারভেজ হত্যাকাণ্ড: ছাত্রদল বিভ্রান্তিকর প্রচারণা শুরু করেছে: উমামা ফাতেমা (ভিডিও) ◈ নাটোরে ছাত্রলীগ কর্মীকে রিকশায় পিঠে পা চেপে ঘোরানো, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় তোলপাড় ◈ ‘আমরা একটি কঠিন কিন্তু অপরিহার্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি’  ◈ বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সময় জীবননাশের শঙ্কায় ছিলাম: দাবি হাথুরুসিংহের ◈ জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসেই বদলাবেন যেভাবে ◈ বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত ◈ ‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি, তা ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’ ◈ নারী সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ কোরআন-হাদিসের লঙ্ঘন, বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ◈ রামপালের চেয়ে ৬০% কম: মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮.৪৫ টাকা

প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:২৮ বিকাল
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আবদুল গফুরের মৃত্যুতে বিএফইউজে ও ডিইউজের শোক

মনিরুল ইসলাম  ঃ  ভাষা সৈনিক প্রবীণ সাংবাদিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। 
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে এক যৌথ বিবৃতিতে এ শোক প্রকাশ করেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল এবং ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম। 

বিবৃতিতে নেতারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করাসহ এদেশে সাংবাদিকতা বিকাশে অধ্যাপক আবদুল গফুরের অবদানের কথা স্মরণ করেন। 

তারা বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই তমদ্দুনস মজলিস বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলনও শুরু করে। ’৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠা লাভ করলে তাতে যোগ দিয়ে ছাত্রাবস্থায় অধ্যাপক আবদুল গফুর এই আন্দোলনে জড়িত হয়ে পড়েন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে তিনি সৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব পালন করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ঘটনা নিয়ে পরের দিন সৈনিক পত্রিকার তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল তার সম্পাদনাতেই। 

তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের সফলতার পথ ধরেই পরবর্তীতে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হয় এবং বাংলা ভাষা রাষ্ট্রাভাষার মর্যাদা পায়। পরবর্তী প্রতিটি আন্দোলনই ছিল এই ভাষা আন্দোলনের সফলতা থেকে উৎসারিত প্রেরণা-শক্তি দ্বারা সঞ্চালিত। যার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে।

তারা বলেন, ভাষা আন্দোলনের পরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে গিয়ে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন অধ্যাপক আবদুল গফুর। এক পর্যায়ে ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করার পর প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন। পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতা পেশা বেছে নেন। তিনি ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে (১৯৬৩-১৯৭০) ও ঢাকার আবুজর গিফারী কলেজে (১৯৭২-১৯৭৯) অধ্যাপনা করেছেন ১৭ বছর। স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর পূর্বসূরী সংস্থা দারুল উলুম (ইসলামিক একাডেমি)-এর সুপারিন্টেন্ডেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ থেকে ‘৮৯ সাল পর্যন্ত ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রকাশনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তারা বলেন, তার সাংবাদিকতার শুরু হয়েছিলো ১৯৪৭ সালে পাক্ষিক জিন্দেগীতে। এরপর সাপ্তাহিক সৈনিক (১৯৪৮-১৯৫৬) পত্রিকায় প্রথমে সহ-সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে দৈনিক মিল্লাত এবং ১৯৫৮ সালে দৈনিক নাজাত-এ সহকারী সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দৈনিক আজাদ-এর বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর ইংরেজি ডেইলি পিপল (১৯৭২-১৯৭৫)-এ এবং দৈনিক দেশ (১৯৭৯ - ১৯৮০)-এ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফিচার সম্পাদক হিসেবে তিনি কর্মরত আছেন।

তারা বলেন, এই বিশাল কর্মময় জীবনে তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে অনেক বই লিখেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও ইসলাম, বিপ্লবী উমর, কর্মবীর সোলায়মান, Social Welfare, Social Services,, কোরআনী সমাজের রূপরেখা, ইসলাম কি এ যুগে অচল, ইসলামের জীবন দৃষ্টি, রমজানের সাধনা, ইসলামের রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য, আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, শাশ্বত নবী অন্যতম। তাঁর রচিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, খোদার রাজ্য, স্বাধীনতার গল্প শোনো ও আসমান জমিনের মালিক। এ ছাড়াও তার আত্মজৈবনিক গ্রন্থ আমার কালের কথা-১ প্রকাশিত হয়েছে। এখনো অনেক লেখাই অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।

তারা শোক বাণীতে মরহুমের মৃত্যুতে জাতি এক সূর্যসন্তানকে হারালো উল্লেখ করে বলেন, তার এ স্থান পূরণ হওয়ার নয়। 

তারা অধ্যাপক আবদুল গফুরের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকশন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। 

উল্লেখ্য, মরহুমের ছেলে তারিক আল বান্না জানান, অধ্যাপক আবদুল গফুর (৯৫) শুক্রবার ২টা ৪৩ মিনিটে পুরনো ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে আগের দিন বৃহস্পতিবার তাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। 

মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে ও তিন মেয়েসহ নাতিনাতনি ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। রাত ৮ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার নামাজে  জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। অধ্যাপক আবদুল গফুরকে মীরপুর বুদ্ধিজীবী গোরস্তানে দাফন করার কথা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়