শিরোনাম
◈ ঢাবিতে শিবিরের ইফতারির পাশাপাশি ৫০০ টাকা করে পেলেন শিক্ষার্থীরা ◈ বাংলাদেশের বর্তমান সংস্কার ও পরিবর্তনে জাতিসংঘ সবসময় পাশে থাকবে: গুতেরেস ◈ ফের ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচার, ভিত্তিহীন এসব খবরে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান ◈ জুমার দিনে যে পাঁচ ভুল কোনোভাবেই কাম্য নয় ◈ ৩ সংবাদমাধ্যমসহ জেমকন গ্রুপের ৩৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার জব্দ ◈ অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু, কোন তারিখে ট্রেনের কোন টিকিট এর বিষয়ে যা জানাগেল ◈ ইরানকে আঘাত করলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে, আমেরিকা বিশ্বকে ধোঁকা দিচ্ছে: ইমাম খামেনেয়ী ◈ আমি জানি না, ওরা কেনো মাঠ থেকে অবসর নিলো না : খালেদ মাহমুদ সুজন ◈ হান্ড্রেড বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৯ ক্রিকেটারের কেউই দল পেলেন না ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব

প্রকাশিত : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোথায় যাবে অমর একুশে বইমেলা?

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] কয়েক মাস ধরেই শোনা যাচ্ছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আর হচ্ছেনা বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। এর মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে,আগামী বছর অর্থ্যাৎ ২০২৫ সালের বইমেলার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জায়গা বরাদ্দ দেবে না মন্ত্রণালয়। এতে খানিকটা সংশয় তৈরি হয়েছে প্রকাশক, লেখক, পাঠকদের মনে।

[৩] প্রশ্ন উঠেছে, চার দশকের অমর একুশে বইমেলা আগামী বছর বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করা যাবে কি না। গুঞ্জন রটেছে, বইমেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে সরিয়ে পূর্বাচলে নিয়ে যাওয়া হবে। বইমেলার মাঠে আর চায়ের আড্ডায় সে আলাপ নানা রকম ডালপালা মেলছে। মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো চূড়ান্ত কিছু জানানো হয়নি। তবে একাডেমির কর্মকর্তারা বক্তিগত মতামত দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।

[৪] তারা বলছেন, বর্তমানে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় বইমেলা হচ্ছে। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির অংশ হিসেবে মার্চ মাস থেকে কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আগামী বছর তারা বইমেলার জন্য উদ্যানের জায়গা বরাদ্দ দেবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েও দিয়েছে। সে কারণেই প্রশ্ন উঠছে, বইমেলা কোথায় হবে।

[৫] এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘গণপূর্ত তো এবারও মেলার আগে জায়গাটি বরাদ্দ দিতে আপত্তি করেছিল। পরে বইমেলার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে অনুমতি দিয়েছে। আগামী বছর অনুমতি দেবে না বলছে, পরে হয়ত দিতেও পারে। এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।’

[৬] তিনি আরো বলেন, ‘আগামী বছর যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি না পাওয়া যায়, তখন মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে চাইব, বইমেলা বাংলা একাডেমিতেই থাকুক। এই বইমেলার সঙ্গে একুশের চেতনা, শহীদ মিনার এবং বাংলা একাডেমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বইমেলার স্থানিক দূরত্ব কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

[৭] বইমেলা সরিয়ে নেয়ার কোনো নির্দেশনা সরকারের দিক থেকে আছে কিনা জানতে চাইলে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেন, এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে নান্দনিকতা বৃদ্ধিসহ অনেক ধরনের প্রকল্পের কাজ চলছে। তার বাস্তবায়ন শুরু হলে, ওই জায়গাটি আগামী বছর হয়ত আর ব্যবহার করা যাবে না। এরকম একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে। তবে প্রধানমন্ত্রী বইমেলার ব্যাপারে ভীষণ আন্তরিক। তিনি চাইছেন, বইমেলার জন্য একটা স্থায়ী জায়গা কীভাবে দেওয়া যায়? এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

[৮] লেখক-প্রকাশকসহ বইমেলা সংশ্লিষ্টরা চান বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহাওয়ার্দী উদ্যানেই হোক। পূর্বাচলে যদি বইমেলা নেওয়া হয়, তবে প্রকাশরা সেখানে যেতে আগ্রহী নন। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘বইমেলা বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হতে হবে। পূর্বাচলে হলে আমাদের প্রকাশকদের কেউই অংশগ্রহণ করবে না। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বরাদ্দ দিতে সমস্যা তো হওয়ার কথা নয়।

[৯] কবি শাহেদ কায়েস বলেন, ‘চিত্তরঞ্জন সাহা একুশের চেতনাকে ধারণ করে কিন্তু বাংলা একাডেমিতে এই বইমেলা শুরু করেছিলেন। ফলে এখান থেকে মেলা সরিয়ে নেওয়া কোনোভাবেই যৌক্তিক হবে না। বাংলা একাডেমির পাশেই পরমাণু শক্তি কমিশন। শুনেছি এ প্রতিষ্ঠানের কাজের ব্যপ্তি অনুযায়ী তাদের আরও বড় জায়গা প্রয়োজন। যতদূর জেনেছি, তারা সেটা পেয়েছেও। পরমাণু শক্তি কমিশনের এখনকার জায়গাটি বইমেলার জন্য স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে। বাংলা একাডেমি এবং পরমাণু শক্তি কমিশনের মাঝের দেয়ালটি ভেঙে দিয়ে এখানে সারা বছরই উন্মুক্ত উৎসবসহ নানা রকম সাংস্কৃতিক আয়োজন করা যেতে পারে।’

[১০] বাংলাদেশের বই ও বইমেলা নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র চলছে’ মন্তব্য করে কয়েকটি দাবি নিয়ে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছন লেখক মাহবুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, ‘বইমেলা আয়োজনের স্থান একুশের স্মৃতি বিজড়িত বাংলা একডেমি ও সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই রাখতে হবে। কোনো অজুহাতেই এটা স্থানান্তর বা বন্ধ করা যাবে না। একুশে বই মেলার জাতীয় চরিত্র ক্ষুন্ন করা যাবে না।’

[১১] এদিকে এবারের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে নির্মাতা ও অভিনেতা মুক্তি মাহমুদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যাতনা প্লাবন’। বলাকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৩০৫ নম্বর স্টলে। কবি পরিচয়ের অনেক আগে থেকেই মুক্তি মাহমুদের বিচরণ সংস্কৃতির নানান ক্ষেত্রে। চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলার ছাত্র ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ এবং চিত্রনাট্য লিখন বিভাগেও প্রশিক্ষণ নেন মুক্তি মাহমুদ। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী

এসসিডি/এসসি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়