হাসান আল বান্না: কতদিন পথের ধারে, ভরদুপুরের সূর্যালোকে অথবা অন্ধকার রাতে বিনিদ্র রজনীতে দাঁড়িতে বহু প্রতীক্ষা করেছি কিন্তু বলা হয়নি। অনেক দিন চোখের সামনেই দৃশ্যমান ছিলে আর তা হয়তো রোবটের মতো কেবলই আমার চোখের মাঝে। তখনও বলতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি।
মানবসভ্যতার শুরু থেকে এই পর্যন্ত পৃথিবীতে বিচরণকারী কিছু মানুষ তার অব্যক্ত কিছু কথা বলতে পারেনি। এভাবে হৃদয়ের কোনে জমাকৃত কথা নিয়ে হয়তো কেউ কেউ শতবর্ষও পার করে পাড়ি জমিয়েছে ওপাড়ে। কিন্তু তার কথা অধরাই রয়ে গেছে। বলবে কাকে? কীভাবে বলবে? কেউ বলার মানুষটিকে পেয়ে খেই হারিয়ে আর বলেনি অথবা কেউ কেউ বলার মানুষটিকেই পাইনি। অপেক্ষায় কেটেছে বহু বসন্ত।
আচ্ছা এই অব্যক্ত কথা গুলো বলতে পারলে কি হতো? আর যদি বলা না হইত তবেও বা কি হইতো! কিংবা এ জীবন বহিতো বা কীসে? জীবন তার নিজস্ব ছন্দ রয়েছে। যে ছন্দ প্রকৃতির সাথে গাঁথা। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মেই জীবন কাটে। হৃদয়ের সাথে জীবনের সম্পর্ক একেবারেই নেই।
পৃথিবীতে সূর্য উঠা আর অস্তমিত হওয়ার সাথে জীবনও একসময় এভাবেই পাড়ি জমায় অনন্তকালের যাত্রায়। কিন্তু হৃদয়ে থাকা সদা বিরহের যন্ত্রণায় যখন অব্যক্ত কথা গুলো বলতে পারেনি।
আর আমি “বসে আছি পথ চেয়ে, ফাগুনেরও গান গেয়ে, যত ভাবি ভুলে যাব, মনও মানে না”
তবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে কোন একসময় সেই মানুষটিও চলে আসে চোখের ভিতর যে রেটিনা আছে সেখানে। হঠাৎ দেখে চমকে নির্বাক হয়ে থমকে গেছি , মনে হলো দেখে তারে অনেক দিনের চেনা।
বহু বছর পর হঠাৎ দেখলে এমনটি মনে হয়। হবে না কেন বহু বছর আগে শেষ হয়ে যাওয়া সে যে হৃদয়চ্ছেদ করে মুহূর্তেই মনের দুয়ারে এসে হাজির হলো। কিন্তু আমি তো নির্বাক হতভম্ব। আজও কেন জানি পারছিনা। তাই তো বলি : যে কথা যায় না বলা শুধু বোঝা যায়, মনের গভীরে শুধু আলো হয়ে রয়ে যায়.....
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
এইচএ/ এসএ
আপনার মতামত লিখুন :