আনোয়ার হক: সেই ক্লাস সেভেন এইটে পড়ার সময়েই বিতর্ক, বক্তৃতা করিতা-গল্প পাঠের সুযোগ পাওয়ায় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছিল। সেই অভ্যাস এখনো বায়োস্কোপের নেশার মতোই জড়িয়ে আছে আষ্টেপৃষ্ঠে। ঢাকায় আসার পর বই পড়ার সুযোগ বেড়ে যায় বহুগুণে।
লাইব্রেরী থেকে আনা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়-এর "হঠাৎ নীরার জন্য" বই থেকে শিরোনামের কবিতাটিসহ দুই তিনটি কবিতা নোটবুকে লিখে রেখেছিলাম আবৃত্তি করার জন্য।
নতুন বউ আমার বুক সেলফ থেকে পড়ার জন্য বই নিতে গিয়ে নোটবুক পেয়ে বইয়ের বদলে নোটবুকটিই বেছে নেয়। নোটবুকে কবিতাটি দেখে সে ভেবে নেয় ওটা আমার লেখা কবিতা।
অফিস থেকে ফিরে দেখি বউয়ের মুখ বেদনাহত এবং চোখ দুটো ফোলাফোলা।
যথারীতি চা নাস্তা পরিবেশন করার ফাঁকে ছলছল চোখে জিজ্ঞেস করে বসলো, "নীরা কে?"
টেবিলে নোট বুক দেখে খুব সহজেই কেস ধরে ফেললাম। বললাম, "চলো নিরা'র সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো। জলদী রেডি হয়ে এসো।"
খুব চমৎকার সাজগোজ করে এসে বললো, "চলো।"
তার সাজগোজ দেখে মনে হলো তার মনে এই চেতনা কাজ করেছে যে নিরাকে যেন তার পাশে খুব ম্লান দেখায়।
(হায়রে মেয়ে মানুষের হিংসা পরায়ণ বুদ্ধি!)
যথাস্থানে রিক্সা থেকে নেমে লাইব্রেরীতে ঢুকে জিজ্ঞাসা করলাম "হঠাৎ নিরার জন্য" আছে?"
আঁড় চোখে তাকিয়ে দেখলাম নিজের বোকামি বুঝতে পারায় ফর্সা মুখখানা তার নীল হয়ে গেছে। কানে মুখ ঠিকিয়ে ফিসফিস করে বললো, "সরি...! এটা কেনার দরকার নাই, তারচেয়ে চলো বেইলী রোড গিয়ে ফুচকা খেয়ে মহিলা সমিতিতে নাটক দেখি।"
আপনার মতামত লিখুন :