শিরোনাম
◈ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: জানালেন আইন উপদেষ্টা ◈ জাহাঙ্গীরনগরে ‘গণপিটুনিতে’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য ◈ তমা মির্জার সঙ্গে সম্পর্ক ফাটলের গুঞ্জন, যা বললেন রাফি (ভিডিও) ◈ ‘মারছে, ভাত খাওয়াইছে, এরপর আবার মারছে, ভাত খাওয়াইছে : তোফাজ্জলের মামাতো বোন (ভিডিও) ◈ ঢাবিতে পিটিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী আটক ◈ শামীম ওসমানের পুরোনো ভিডিওটি ভাইরাল : ‘ফিরব কি না জানি না’ ◈ জাদেজা-অশ্বিনের জুটিতে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ ◈ দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে : ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট ◈ ফের নেতাকর্মীদের জন্য আওয়ামী লীগের জরুরি নির্দেশনা ◈ মণিপুরের সহিংসতায় মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসাচ্ছে ভারত

প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ০৬:২৬ বিকাল
আপডেট : ১২ অক্টোবর, ২০২২, ০৬:২৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাবির ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা

রাশিদ রিয়াজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের  ১৬তম ব্যাচের নবীন বরণ এবং ১১তম ব্যাচের বিদায় সংবর্ধনা  অনুষ্ঠান মঙ্গলবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।দুই পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্ব শুরু হয় সকাল সাড়ে এগারোটায়। উদ্বোধনী পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামী প্রজাতন্ত্র  ইরান দূতাবাসের মাননীয় রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভুশি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান সাংসস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত। উপস্থিত ছিলেন নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা-২০২২ আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা এবং সহযোগী অধ্যাপক আহসানুল হাদী। এছাড়াও বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং নবীন ও বিদায়ী শিক্ষার্থীসহ বিশিষ্ট সুধীজনদের উপস্থিতিতে আলোচনা অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠেছিলো মনোজ্ঞ ও প্রাণবন্ত।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও আহ্বায়ক মহোদয় সম্মানিত অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেন। স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন- “ইরান থেকে যখনি কোন নতুন রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসেন, তখন তাকে আমরা শুধু সেই দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে দেখি না। বরং তাকে হাফিজ, সাদি, রুমি, খৈয়্যামের মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের সাহিত্য জগতের প্রতিনিধি হিসেবেও জ্ঞান করি। আর যেহেতু জাতিগতভাবে ফারসি ভাষার সাথে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে, তাই সেই ভাষাভাষী ব্যক্তিদের সংস্পর্শ আমাদের জন্য গর্বের ও ভালোলাগার একটি বিষয়।” ফারসি সাহিত্যে আধ্যাত্মিকতার অভিনব উপস্থাপনার  বিষয়ে ইঙ্গিত করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত বলেন- “ফারসি সাহিত্যের বড় বড় কবিদের কাব্যে শরাব, যৌবন, নারীর সুন্দর মুখশ্রীর মতো বিষয়গুলোর পুনঃপুন ব্যবহার দেখে আমরা যেনো বিভ্রান্ত না হই। কেননা এই প্রতিটি উপকরণই আধ্যাত্মিকতা ও ঐশীপ্রেমের জাগতিক নিদর্শন হিসেবে ফারসি সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়েছে।” তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন- “দিনে দিনে যত বেশি তোমরা ফারসি সাহিত্যের সাথে পরিচিত হবে, তত বেশি তোমরা জানতে পারবে  যে এই সাহিত্যে কি পরিমাণ রূপক, কাহিনী ও ভাষার অলংকার ব্যবহৃত হয়েছে।” তিনি নবীন শিক্ষার্থীসহ ফারসিপ্রেমী সকলকে ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ব্যবহারের আহ্বান জানান এবং যেকোন প্রয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতার নিশ্চয়তা প্রদান করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেন- “ যেকোন নতুন ভাষা শেখা মানে সেই ভাষার দেশ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার নতুন দ্বার উন্মোচিত হওয়া। তোমরা যারা ফারসি ভাষা শিখেছো এবং নতুন যারা শিখতে এসেছো, তারা প্রত্যেকেই একসময় এই ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠবে এবং এর ফলে শুধু যে তোমরা বর্তমান ফারসিভাষী দেশগুলোর সংস্কৃতি ও জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে পারবে তা নয়; বরং হাজার বছরের প্রাচীন একটি ভাষা ও  সাহিত্যের গৌরবময় দিকগুলোও তোমরা এর মধ্য দিয়ে আবিষ্কার করতে পারবে।” রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে জানান বিগত কয়েকবছর করোনা মহামারির জন্য ইরান থেকে ভিজিটিং প্রফেসর আসা বন্ধ থাকলেও শীঘ্রই ইরান থেকে স্বনামধন্য ফারসি শিক্ষকেরা ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফারসি ভাষায় পাঠদান করতে আসবেন। তিনি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খানের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে বলেন দিন দিন ইরান ও ফারসির সাথে বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার সম্পর্ক আরো জোরদার হয়ে উঠবে এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সবশেষে সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন প্রধান ও বিশেষ অতিথিসহ অনুষ্ঠানে আগত সকল সম্মানিত সুধীকে শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি নবীন শিক্ষার্থীদেরকে প্রাচ্যের এই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠের শতবর্ষী ফারসি বিভাগে স্বাগত জানান এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ও সাফল্যমণ্ডিত ভবিষ্যত কামনা করেন। তিনি তাদেরকে বিনয়ী ও সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে দেশসেবা করার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ও বিভাগের নাম উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১১ অক্টোবর সকাল সাড়ে দশটায় বিভাগীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র পর্যন্ত একটি আনন্দ র‌্যালি বের হয়। সাড়ে এগারোটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আবদুল ফাতির। না’তে রাসূল (সা) পরিবেশন করেন বিভাগীয় শিক্ষার্থী মাহবুবা জাফিরা। নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মেহের নিগার ও বিদায়ী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মহিউদ্দিন বক্তব্য রাখেন। সম্মানিত অতিথিরা বিদায়ী শিক্ষার্থীদের হাতে বিভাগের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন। সবশেষে সকলের গ্রুপ ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে আয়োজনের উদ্বোধনী পর্ব শেষ হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টিএসসি মিলনায়তনে বিভাগীয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়