দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজ মারা গেছেন। হোস্টেলের ওয়াশরুমে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন বলে জানা যাচ্ছে। আজ শুক্রবার শাহবাগের সুপার হোম হোস্টেলে তিনি মারা গেছেন। এখন তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, সুপার হোস্টেলের ওয়াশরুমের দরজা খুলে মৃত অবস্থায় দেখতে পাওয়া গেছে হেলাল হাফিজকে। সোয়া ২টার দিকে ওয়াশরুমের দরজা খোলা হয়। পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন, ব্লিডিং হয়েছে।
ওই হোস্টেলের আবাসিক বর্ডার শিক্ষার্থী কনক সরকার, তিনি হেলাল হাফিজের পাশের রুমেই থাকেন। কনক বলেন, আমরা ৩০ মিনিট ধরে চেষ্টার পর দরজা ভেঙে দেখি উনি পড়ে আছেন। উনার মাথায় আঘাত লেগেছিল, রক্ত বেরিয়েছিল।
কবি হেলাল হাফিজ ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। উত্তাল ষাটের দশক হয়ে ওঠে তার কবিতার উপকরণ। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। তার কবিতা হয়ে উঠেছিল মিছিলের স্লোগান।
‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ কালজয়ী কবিতার এ লাইন দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পরবর্তীতে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময়ও কবিতাটি মানুষের মাঝে তুমুল সাড়া জাগায়।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ কবিকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরপর বইটির ৩৩টির বেশি সংস্করণ বেরিয়েছে।
দীর্ঘসময় নিজেকে অনেকটা আড়ালে সরিয়ে নিয়েছিলেন হেলাল হাফিজ। আড়াই দশক পর ২০১২ সালে তিনি পাঠকদের জন্য আনেন দ্বিতীয় বই ‘কবিতা ৭১’। তৃতীয় এবং সর্বশেষ বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদোনা’ প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। উৎস: দেশ রুপান্তর।
আপনার মতামত লিখুন :