শিরোনাম
◈ শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করছে ছাত্রদের নতুন দল ◈ দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করা দরকার: তারেক রহমান ◈ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আসায় ক্ষতির মুখে দেশীয় টেক্সটাইল মিলস ◈ সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অনিশ্চয়তা! ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের আন্দোলনে আমাদের সংহতি রয়েছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ বিএনপির বর্ধিত সভায় চার হাজার লোকের সমাগম হবে, তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন : এ্যানী ◈ নিউজিল্যান্ডকে ২৩৭ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ ◈ কক্সবাজারে বিমানবাহিনীর গুলিতে যুবকের মৃত্যুর তথ্য অপপ্রচার: আইএসপিআর ◈ ৪০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ◈ তুরস্কের ক্ষমতাসীন দলে যোগ দিলেন প্রাক্তন ফুটবলার মেসুত ওজিল

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০১:৩২ দুপুর
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে চাকরির সুযোগ

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও জাপানের মিয়াজাকি ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে নর্থ সাউথ ক্যাম্পাসে কাজ করছে বি-জেট সেন্টারছবি: সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল নিয়ে পড়েছেন রাবাব সায়েরা। স্নাতক শেষে আর সব বন্ধুর মতোই চাকরিতে যোগ দেন তিনি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ–জাপান আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ট্রেনিং (বি-জেট) নামে একটি প্রোগ্রামের খোঁজ পেয়ে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন। কয়েক মাসের প্রশিক্ষণ শেষে বিভিন্ন জাপানি প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য ইন্টারভিউ দেন। অবশেষে চাকরি নিয়ে ২০২২ সালে জাপানে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপে রাবাব বলেন, ‘আমি এখন জাপানে আছি। সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছি। জাপানের কর্মবাজারের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছিলাম বি-জেট থেকে। দেশে বসেই জাপানি ভাষা ও কাজের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছিলাম। এখন জাপানের কাওয়াসাকি সিটিতে ডেটা সায়েন্স ও এআই সফটওয়্যার ফার্মে সিস্টেম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছি।’

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও জাপানের মিয়াজাকি ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে নর্থ সাউথ ক্যাম্পাসে কাজ করছে বি-জেট সেন্টার। অনেক তরুণই এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভাগ্য গড়ছেন। এ প্রসঙ্গে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক কর্মবাজারের জন্য তৈরি হচ্ছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-জেট সেন্টার দেশের কম্পিউটার প্রকৌশল ও আইসিটি নিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জাপানের মতো উন্নত দেশের কর্মবাজারের জন্য তৈরি করছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জাপানের বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক মান অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে তৈরির জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

বি-জেট সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাপানে পাড়ি দিয়েছেন—এমন আরও এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ হলো। নাম এস এম ইশতিয়াক আহমেদ। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে ২০২১ সালে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক হয়েছেন তিনি। বলছিলেন, ‘জাপানের মিয়াজাকিতে আছি প্রায় তিন বছর। একজন ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপার হিসেবে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনের ফ্রন্টএন্ড ও ব্যাকএন্ড নিয়ে কাজ করি। বি-জেট ট্রেনিং থেকে আমি মূলত জাপানে বসবাস ও কর্মজীবনের মৌলিক দিকগুলো শিখেছিলাম। যেমন প্রাথমিক ভাষাগত দক্ষতা, ব্যবসায়িক যোগাযোগের শিষ্টাচার, জাপানি কর্মসংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উপায় ইত্যাদি। বিশেষ করে জাপানের অফিসের পরিবেশ, সময়নিষ্ঠা ও পেশাদারির ব্যাপারে যে ধারণা পেয়েছিলাম, তা এখন আমার বেশ কাজে লাগছে।’

যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে চান
জাপানের কর্মবাজারে যুক্ত হতে হলে ন্যূনতম যেটুকু জাপানি ভাষাশিক্ষা দরকার, তা বি-জেট থেকেই গ্রহণ করতে পারেন দেশের প্রকৌশলীরা। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতিবছর ৮০ জন বাংলাদেশি প্রকৌশলী ৮ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারেন। প্রথম পাঁচ মাসের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরের তিন মাসের উন্নত প্রশিক্ষণ (অ্যাডভান্সড ট্রেনিং) পরিচালিত হয় জাপানের মিয়াজাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

বি-জেট প্রোগ্রামের সমন্বয়ক ইউকি মরিশিতা বলেন, ‘জাপানের বড় বড় শহরের আইটি প্রতিষ্ঠানে তরুণ পেশাজীবীর সংকট আছে। বাংলাদেশে যাঁরা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি নিয়ে পড়েন, তাঁদের জন্য জাপানের কর্মবাজারে অনেক সুযোগ আছে। আমরা শিক্ষার্থীদের জাপানি ভাষা শেখানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।’ এ বছর বি-জেট প্রোগ্রামের আবেদন গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি। তবে গত বছরের বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে পারেন এই লিংকে।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ক্যারিয়ার অ্যান্ড প্লেসমেন্ট সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মো. তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রকৌশলীরা অনেক ক্ষেত্রেই বেশ দক্ষ। দেশের কর্মবাজারের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন কর্মবাজারে তাদের সম্ভাবনা আছে। আমরা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে সেই সুযোগ করে দিচ্ছি।’

বি-জেট ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মীর ফায়েক হোসেন বলেন, ‘জাপানি সংস্কৃতির ব্যাপারে আগ্রহ ছিল একদম ছোটবেলা থেকে। ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলে পড়াশোনা শেষে তাই বি-জেট থেকে প্রশিক্ষণ নিই। এখন জাপানের স্কাইকম নামের একটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছি।’

আহ্‌ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. জাহিদ হকও ২০২৩ সালের অক্টোবরে বি-জেট প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এখন জাপানের টোকিও শহরে কিকুয়া বিশোডো নামে একটি প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। বললেন, ‘জাপানি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন থেকে শুরু করে কীভাবে সিভি তৈরি করব, সবটাই শিখেছিলাম বি-জেট থেকে।’

বি-জেট সেন্টারের ক্লাস অনলাইন ও অফলাইন—উভয় মাধ্যমেই হয়। কম্পিউটার প্রকৌশলে স্নাতক থেকে শুরু করে প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, এআই বা মেশিন লার্নিং–সংক্রান্ত বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে, তাঁরা আবেদন করতে পারেন। এ ছাড়া আধুনিক প্রোগ্রামিং ভাষা সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা ও সমস্যা সমাধানের আগ্রহ থাকা চাই। ইংরেজি ভাষার ওপর দখলের পাশাপাশি জাপানি ভাষা শেখার আগ্রহও থাকতে হবে।

সূত্র: প্রথমআলো

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়