পছন্দের কাজের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের চেয়ে সেরা উপায় আর নেই। কারণ কোনো কাজ উপভোগ না করলে তা আরোপিত হবে এবং তাতে আনন্দ পাওয়া যায় না। ঘুম থেকে উঠে উদ্যমী হয়ে পছন্দের কাজে নিবেদিত হতে পারবেন এমন শখের কাজ করে ঘরে বসেই আয় করা সম্ভব।
তেমন কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই শখের কাজ দিয়ে লাখ টাকা আয় সম্ভব—এমন তিনটি আয়ের উৎস তুলে ধরা হলো:
১. ফটোগ্রাফি থেকে আয় করুন
আপনি অভিজ্ঞ বা উৎসাহী ফটোগ্রাফার হলেই ছবি তোলার মাধ্যমে খুব সহজেই আয় করতে পারেন।
স্টক ফটোগ্রাফি: বর্তমানে অনেক স্টক ওয়েবসাইট বিনা মূল্যে ছবি সংগ্রহ করার সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে অনেক সময় প্রয়োজনমাফিক আকর্ষণীয় ছবি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এসব ওয়েবসাইটে নিজের তোলা ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, প্রকৃতি বা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ছবি তুলে সেগুলো সংবাদমাধ্যম, মিডিয়া বা শাটারস্টক, অ্যাডোব স্টক ও গেটি ইমেজের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিক্রি করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফি: আপনি বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য ছবি তুলে দিতে পারেন। এর জন্য নিজের সময়ের সঙ্গে ক্লায়েন্টের সময়ের সামঞ্জস্য করে ছবি তুলতে পারবেন। ফলে নিজের মতো করে দিনের কাজ সাজাতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার হিসেবে বিয়ে, জন্মদিন, প্রাইভেট ও করপোরেট অনুষ্ঠানের ছবি তুলে আয় করতে পারেন। তবে ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারের জন্য নেটওয়ার্কিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ জন্য এলাকার স্থানীয়দের খোঁজ-খবর রাখা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত হওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া অন্যান্য ফ্রিল্যান্সদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে নিজের পেজটি আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে।
২. সৃজনশীল লেখা
যদি লেখালেখির মাধ্যমে আপনি নিজের চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেন এবং এর মাধ্যমে স্বস্তি পান, তাহলে এই হাতিয়ার কাজে লাগিয়েও আয় করতে পারবেন। আপনার সৃজনশীল লেখা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে বা পোস্ট করে নিজের আয়ের উৎস বাড়াতে পারেন।
ফ্রিল্যান্স রাইটিং: বিভিন্ন শিল্পে ক্লায়েন্টদের জন্য নিবন্ধ, ব্লগ পোস্ট লিখে বা প্রযুক্তিগত ও পণ্য সম্পর্কে লেখালেখির মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে, ভিডিও ক্রিপ্ট, প্রেস রিলিজ লিখেও আয় করা যায়।
ব্লগিং: শখের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের আরেকটি চমৎকার উপায় হল ব্লগিং। যে বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে বা যেসব বিষয় পছন্দ করেন, সে সম্পর্কে ব্লগে লিখুন। এ জন্য নিজস্ব ব্লগ তৈরি করতে পারেন। নিজের ব্লগিং সাইটে বিজ্ঞাপন, অংশীদারত্ব ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মতো বিভিন্ন মাধ্যমে আয় করা যায়। এ ছাড়া অন্যদের ব্লগিং ওয়েবসাইটের জন্য লিখতে পারেন। বিষয়ভিত্তিক ব্লগ লিখে প্রতিটি প্রতিবেদন বা আর্টিকেলে ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত পাওয়া সম্ভব।
৩. গানে গানে আয়
যদি আপনি গান গাইতে পছন্দ করেন বা এ বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা থাকে, তাহলে এই শখ কাজে লাগিয়েও আয় করতে পারবেন।
অনলাইন টিউটোরিয়াল: অনলাইনে মিউজিক কম্পোজ করার দক্ষতা শেখাতে পারেন। অনেক সংগীতশিক্ষক বা সংগীতজ্ঞ আছেন, যাঁরা নিজেদের এ বিষয়ে দক্ষ হতে বছরের পর বছর পরিশ্রম করছেন। সেই সব জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেন। কণ্ঠসংগীতের পাশাপাশি পিয়ানো, গান, গিটারের মতো বাদ্যযন্ত্র শেখানোর জন্য অনলাইন কোর্স তৈরি করতে পারেন। আর কোর্সের জন্য ফি নির্ধারণ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্স কম্পোজিশন: কোনো কোম্পানি, বিজ্ঞাপনদাতা, মুভি ও নাটকের জন্য মিউজিক বা গান কম্পোজ করেও অর্থ উপার্জন সম্ভব। এক্ষেত্রেও অবশ্য ভালো নেটওয়ার্কিংয়ের দক্ষতা লাগবে।
স্ট্রিমিং সার্ভিস: স্পটিফাই, অ্যাপল মিউজিক বা ইউটিউব মিউজিকে গান আপলোড করেও অর্থ উপার্জন করা যায়। শ্রোতাদের শোনার ওপর নির্ভর করে কোম্পানির নীতিমালা অনুযায়ী প্ল্যাটফর্মগুলো আপনাকে অর্থ দেবে।
সরাসরি শেখানো: মিউজিক প্রোডাকশন বা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে সামনাসামনি শেখানোর মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারেন। এর জন্য নিজের ঘরেই শিক্ষার্থীদের শেখানোর পরিবেশ তৈরি করতে পারেন।
এ ছাড়া গেম বা অ্যাপ তৈরি করে, অনলাইনে হাতের তৈরি পণ্য বা ছবি বিক্রি করেও আয় করা যায়। তথ্যসূত্র: ফোর্বস
আপনার মতামত লিখুন :