শিরোনাম
◈ ‘মারছে, ভাত খাওয়াইছে, এরপর আবার মারছে, ভাত খাওয়াইছে : তোফাজ্জলের মামাতো বোন (ভিডিও) ◈ ঢাবিতে পিটিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী আটক ◈ শামীম ওসমানের পুরোনো ভিডিওটি ভাইরাল : ‘ফিরব কি না জানি না’ ◈ জাদেজা-অশ্বিনের জুটিতে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ ◈ দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে : ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট ◈ ফের নেতাকর্মীদের জন্য আওয়ামী লীগের জরুরি নির্দেশনা ◈ মণিপুরের সহিংসতায় মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসাচ্ছে ভারত ◈ খালেদা জিয়া হাসিনার দেশ ছাড়ার দৃশ্য দেখে সেদিন যা বলেছিলেন  ◈ বারবার আবরারের কথা মনে পড়েছে মানুষটার শরীর দেখে : সারজিস ◈ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনির ঘটনায় এবার মুখ খুললেন নাহিদ ইসলাম

প্রকাশিত : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৯:৪৮ রাত
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৯:৫৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সোজা নয়, বরং রোজ কিছুক্ষণ উল্টো দিকে হাঁটলে পাবেন অবাক করা সব উপকার : অনিক মজুমদার

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য যে নিয়মিত হাঁটা অত্যন্ত উপকারী, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু নতুন গবেষণা বলছে, রোজ কিছুক্ষণ উল্টো দিকে হাঁটলে মিলবে অবাক করা কিছু উপকার।

প্রত্যেকদিন মাত্র ৩০ মিনিট হাঁটাহাটি আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর কার্যকরী প্রভাব ফেলে। যেমন হাড়ের গঠন শক্ত হওয়া, অক্সিজেন লেভেল ঠিক রাখা, প্রয়োজনীয় হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখা, শরীরের অতিরিক্ত ক্ষতিকর চর্বি কমানো, শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ পেশির গড়ন ঠিক রাখা, স্ট্যামিনা বাড়ানো, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সঠিক রাখার জন্য নিয়মিত হাঁটার বিকল্প নেই। এছাড়া টাইপ টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এমনকি ডিপ্রেশনের মতো কঠিন রোগ প্রতিরোধ আর উপশম করতে পারে রোজ হাঁটার অভ্যাস। তাই  সুস্থভাবে বাঁচতে হলে সবচেয়ে সহজ উপায় প্রতিদিনের রুটিনে কিছু সময় হাঁটাহাটি যুক্ত করা।

হাঁটা বলতে আমরা বুঝি মেরুদন্ড সোঁজা রেখে নির্দিষ্ট গতিতে সামনে এগিয়ে চলা। তবে ছোটবেলায় খেলার ছলে কমবেশি সবাই আমরা হয়তো উল্টোদিকে হাঁটাহাটি করেছি। কিংবদন্তি পপ গানের রাজা মাইকেল জ্যাকসন তো এই উল্টো দিকে হেঁটে মুনওয়াক নামের সিগনেচার নাচের স্টেপ দেখিয়ে দিয়ে গেছেন, যা আমাদের সকলের খুব চেনা।কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণা বলছে,  এই উল্টোদিকে হাঁটা আমাদের এই বড়বেলায় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। শুধু তাই নয়, হাড়ের জয়েন্ট ঠিক রাখা আর মেরুদন্ডের গঠন সোজা রাখতেও এই উল্টোদিকে হাঁটার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই বিশেষ ধরনের হাঁটা সম্পর্কে। পেছনের দিকে হাঁটা বা ব্যাকওয়ার্ড ওয়াকিংকে রেট্রো ওয়াকিংও বলা হয়। এ  এক অত্যন্ত উত্তম ব্যায়াম, যার সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। এলোপাতাড়ি নয়, বরঞ্চ সঠিক ভঙ্গিমা ও ভারসাম্য বজায় রেখে পেছনের দিকে হাঁটাই ব্যাকওয়ার্ড ওয়াকিং। প্রতিদিনের রুটিনে এই হাঁটা যুক্ত করলে পাবেন অবাক করা সব উপকারিতা।

কেন কিছুক্ষণ উল্টো দিকে হাঁটবেন রোজ এতে মন ও শরীরের সামঞ্জস্য ও সাবলীলতা রক্ষা হয়। তবে শুরুর দিকে এটি হতে পারে একেবারে চ্যালেঞ্জিং কিছু। কারণ সবসময় সোজা দিকে হাঁটার স্বাভাবিক সিগনাল দেওয়া মস্তিষ্কের জন্য এ এক নতুন ও অচেনা কাজ। কিন্তু  বয়স হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ক সচল রাখতে এবং এর কার্যকারিতা বাড়াতে হলে অবশ্যই আমাদের  এমন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জিং কাজের সম্মুখীন হওয়া উচিত।শুধু মস্তিষ্ক নয়, আমাদের পায়ের পেশির সুগঠনেও এই উল্টো দিকে হাঁটা ভূমিকা রাখতে পারে। স্পোর্টস মেডিসিন ফিজিশিয়ান ডা.রান্ড ম্যাক্লেইনের মতে, ব্যাকওয়ার্ড ওয়াকিং কোনো সিক্রেট ফর্মুলার বা জাদুকরী ব্যায়াম নয়। কিন্ত এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। সামনে হাঁটা আর উল্টো হাঁটার মধ্যে বিশেষ পার্থক্য হচ্ছে, উল্টো দিকে হাঁটতে হলে দরকার বেশি মনোসংযোগ আর ভারসাম্য রক্ষা করার দক্ষতা, যা আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীরের জন্য চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। অনেকগুলো পেশি এক্ষেত্রে এক সঙ্গে কাজ করে, যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সচল রাখে। আরেকটি গবেষণায় জানা যায়, যারা হৃদরোগে ভুগছেন, ট্রেডমিলে উল্টো দিকে হাঁটা তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আর সেই সঙ্গে হাঁটার গতি বাড়াতেও সাহায্য করে। সাধারণভাবে সামনের দিকে হাঁটার চেয়ে এই হাঁটাতে ক্যালোরি বেশি খরচ হয়। যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদের জন্যও  এই ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী। শুধু তাই নয়; হাড়ের জয়েন্টে যাদের প্রদাহ, তাদের জন্যে এই ব্যায়াম হতে পারে অন্যতম কার্যকর ওষুধ।

কীভাবে নিয়মিত ব্যায়াম হিসেবে উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করেবেন

১. স্বাভাবিক ভাবেই আমরা এই হাঁটার সাথে খুব বেশি একটা পরিচিত না। তাই শুরুটা হতে পারে আপনার ঘরেই। প্রথমে মেরুদন্ড সোজা রেখে অল্প সময় নিয়ে এই হাঁটা অনুশীলন করতে পারেন। ধরুন, ঘরের বসার ঘর থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত গেলেন। আবার রান্নাঘর থেকে শোবার ঘরে বা বারান্দায় চলে আসলেন। আস্তে আস্তে পরবর্তীতে মাঠে কিংবা পার্কে যেয়ে উল্টো দিকে হাঁটার সময় আর গতি বাড়াতে পারেন।  

২. প্রতিদিনের হাঁটার রুটিনে যুক্ত করতে পারেন এভাবে হাঁটা। এই ধরুন পাঁচ মিনিট সামনে হাঁটছেন, আবার একটু থেমে এক মিনিট উল্টো দিকে হাঁটা অভ্যাস করতে পারেন। এটাই একটু পরপর পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। পরবর্তীতে এক মিনিট সামনে হাঁটতে পারেন এবং এক মিনিট উল্টোদিকে হাঁটতে পারেন।  
৩. বাড়িতে কিংবা জিমে ট্রেডমিল থাকলে, সেখানেও প্র্যাকটিস করতে পারেন উল্টো হাঁটা। ট্রেডমিলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নিজের ক্ষমতা বুঝে আস্তে আস্তে গতি বাড়াতে কিংবা কমাতে পারবেন। শুরুতে কম গতিতেই প্র্যাকটিস করা উচিত।  

আমাদের বয়স যত বাড়ছে, শরীরের কার্যকারিতা তত ঝিমিয়ে পড়ছে। রোগব্যাধিও বাসা বাঁধছে দেহে। এর প্রতিকার হচ্ছে রুটিনমাফিক জীবনযাপন আর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ। প্রয়োজনের বেশি বা কম খাবার আমাদের শরীরকে ক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেয়। এর জন্যই প্রয়োজন সঙ্গে শারীরিক ব্যায়াম। যারা অত্যন্ত ব্যস্ত থাকেন, সময় কম পাচ্ছেন তাঁরাও অবশ্যই অন্তত দিনে পাঁচ মিনিট এভাবে এই উল্টো হাঁটার জন্য ব্যয় করুন। দেখবেন, শরীর ও মনে ঠিকঠাক ব্যালেন্স থাকছে।

সূত্র: নিউজ টুডে, হেলথলাইন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়