ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় যে স্বাধীন মুসলিমের কাছে নেসাব পরিমাণ অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী, ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, বাসগৃহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে ও ঋণমুক্ত, সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার সমমূল্য পরিমাণ অন্য কোনো সম্পদ থাকে তার ওপর সাদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব। (তাতারখানিয়া :৩/ ৪৫৩)
বাসগৃহ, ঘরের ব্যবহারের বাসন-কোসন ,চুলা, পরিধানের কাপড়, পড়ার বই-পুস্তক, ব্যবহারের গাড়ি, যুদ্ধের সামগ্রী ও অন্যান্য আবশ্যকীয় জিনিসটপত্র ইত্যাদি। অন্যের ঋণ বাবদ পাওনা টাকাও প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত।
এ ছাড়া যে সব জিনিস বছরে একবারও কাজে আসে না এবং গুনাহের আসবাবপত্র প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়; সদকার নিসাবের ক্ষেত্রে তার হিসাব করা হবে।
অতএব টিভি, গিটার, শোপিজ, সৌখিনতার জিনিসপত্র ইত্যাদি অতিরিক্ত বলে গণ্য হবে। উলামায়ে কিরামের জন্য কিতাব প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অন্তর্ভুক্ত।(বাদায়েয়ুস ছনায়ে:২/২৯৭, দুররুল মুখতার ৩/১৭৪-৭৯)
জাকাত ও সাদকায়ে ফিতরের নেসাবে পার্থক্য
১. জাকাতের নেসাবের জন্য স্বর্ণ, রূপা, নগদ টাকা ও ব্যবসায়িক মালামাল হওয়া শর্ত। কিন্তু সদকাতুল ফিতরের জন্য এগুলো শর্ত নয়। বরং আবশ্যকীয় প্রয়োজন ও ঋণ অতিরিক্ত যে কোনো সম্পদ নেসাব পরিমাণ হলে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব।( লামায়াতুত তানকিহ: ৪/২৮১)
২. জাকাতের মধ্যে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত, কিন্তু সদকাতুল ফিতরের মধ্যে এটি শর্ত নয়। বরং শুধু ঈদুল ফিতরের দিনে সুবহে সাদেকের সময় নেসাবের মালিক থাকলেই ফিতরা ওয়াজিব হবে। (মারাকিউল ফালাহ:৫৯৫)
মাসয়ালা: সামর্থবান হলে রোযা রাখতে না পারলেও সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। তাই রোযা না রাখলে বা না রাখতে পারলে সামর্থ্যবান হলে তার উপরও সদকাতুল ফিতর দেয়া ওয়াজিব। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯২ )