শিরোনাম
◈ নির্বাচনী সংস্কার: ৯ সুপারিশের ওপর ইসির কাছে প্রস্তাব চাইলো সরকার ◈ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের আশঙ্কা রয়েছে, এই সংকটময় সময়ে সবাইকে শান্ত থাকতে হবে: সেনাপ্রধান ◈ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞে জাতি আজও শোকাহত: প্রধান উপদেষ্টা ◈ কারামুক্ত হলেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী ◈ মাসউদের পথসভায় হামলার প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ আজ ভয়াল ২৫ মার্চ ◈ নতুন টাকার রমরমা ব্যবসা, খোলাবাজারে দামও চড়া ◈ তামিমের জন্য আপনার দোয়াই হবে, আমার জন্মদিনের সেরা উপহার: সাকিব আল হাসান ◈ ৩০ টাকা কেজিতে দিনে চার টন চাল বিক্রি করবে সরকার ◈ দুই অতিরিক্ত ডিআইজি ও ১৭ পুলিশ সুপারকে বদলি

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৪৩ দুপুর
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে আট শ্রেণির ব্যক্তিদের মধ্যে যাকাত বণ্টন করতে হয়

আল্লাহতায়ালা যাকাত কোন শ্রেণির মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে তা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। আল্লাহর নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী যাকাত আট শ্রেণির ব্যক্তিদের মধ্যে বণ্টন করতে হয়। (সুরা তাওবা : আয়াত ৬০)

যাকাত যে আট শ্রেণির ব্যক্তিদের মধ্যে দিতে হয়:

১। ফকির, যাদের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই।

২। মিসকিন, যাদের কোনো সম্পদ নেই।

৩। যারা ইসলামি রাষ্ট্রের সরকারকর্তৃক যাকাত, সদকা, ওশর ইত্যাদি উসুল করার কাজে নিয়োজিত।

৪। ইসলামের দিকে ধাবিত করার জন্য যাকাত প্রদান । তবে এ খাতটি বর্তমান সময়ের জন্য নয়।

৫। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ দাস-দাসী।

৬। পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল না থাকার দরুণ ঋণ পরিশোধে অক্ষম ঋণী ব্যক্তি।

৭। মুজাহিদ, যারা যুদ্ধের অস্ত্র যোগাতে অক্ষম অথবা টাকার কারণে হজের কাজ পূর্ণ করতে অক্ষম বা ইলম হাসিল ও দ্বীনি দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত গরীব মানুষ।

৮। সফর অবস্থায় অভাবগ্রস্ত মানুষ।

মাসয়ালা: কোনো ধনী ব্যক্তি যদি তার যাকাতের টাকা দিয়ে কোনো গরীবকে শিক্ষা অর্জন ও তাবলিগ ইত্যাদি দ্বীনি কাজে পাঠায়- তাহলে তার যাকাত আদায় হয়ে যাবে। অনেক আলেম বলেন, এসব ক্ষেত্রে বরং সে দ্বিগুণ সওয়াবের অধিকারী হবে।

উল্লেখ্য, বর্ণিত খাতগুলোর মধ্যে যাকাত ইত্যাদি উসুলে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া সব ধরনের লোক গরীব হওয়ার কারণেই যাকাত খাওয়ার উপযুক্ত। আর গরীবকে শর্তহীনভাবে যাকাতের অর্থ প্রদান জরুরি এবং সম্পূর্ণ মালিক বানিয়ে দেওয়া যাকাত আদায়ের পূর্বশর্ত। অতএব কাউকে কোনো কাজের জন্য যাকাতের টাকা দিয়ে বাধ্য করা উচিত নয়। বরং শর্ত করাও শরিয়তসম্মত নয়। -বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৫, ফাতহুল কাদির: ২/২০৫

মাসয়ালা: যাকাতের টাকা পাওয়ার উপযুক্ত কোনো গরীবকে বিনা শর্তে ও বিনা স্বার্থে মালিক বানিয়ে দেওয়া- যাকাত আদায় হওয়ার জরুরি শর্ত। -তাবয়িনুল হাকায়েক: ১/৩০০

মাসয়ালা: শরিয়তের বিধানমতে যাকাতের উপযোগী গরীব-অসহায় ব্যক্তিকে যাকাতের টাকার নিঃশর্তে মালিক বানিয়ে দেওয়া যাকাত আদায়ের পূর্বশর্ত। মালিক বানানো ছাড়া যাকাতের টাকা ব্যয় করা হলে যাকাত আদায় হবে না এবং ব্যয়কারী গোনাহগার ও দায়ী হবে। -ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৮৮, মাজমাউল আনহুর: ১/৩২৮

মাসয়ালা: শরিয়তের দৃষ্টিতে যাকাত আদায় হওয়ার জন্য যাকাত পাওয়ার উপযোগী ফকির-মিসকিনকে নিঃস্বার্থে মালিক বানিয়ে দেওয়া পূর্বশর্ত। তাই যাকাতের টাকা দিয়ে গরীবদের ভরণ-পোষণ বাবদ খরচ করা যাবে। আর যে সমস্ত খাতে খরচ করলে গরীবদের মালিকানায় যায় না, যেমন- ঘর বানানো, পানি ও বিদ্যুৎ বিল, শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি খাতে যাকাতের টাকা খরচ করা যাবে না। -ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৭০, আদ দুররুল মুখতার: ২/৩৪৪

মাসয়ালা: কোনো সংগঠনকে দেওয়ার দ্বারা যাকাত আদায়ের শর্ত পূরণ হয় না, তাই যাকাত আদায় হবে না। -আদ দুররুল মুখতার: ২/৩৪৪, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/১৮৮

মাসয়ালা: যাকাত আদায় হওয়ার জন্য যাকাতগ্রহীতা বালেগ হওয়া শর্ত নয়, বরং স্বেচ্ছায় খরচ করার বুঝ হয়েছে- এমন হলেই তাকে যাকাত দিলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, নাবালেগ ছেলের পিতা ধনী হলে ছেলেকে যাকাত দিলে যাকাত আদায় হবে না। -রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪৯, ২/৩৫৬

মাসয়ালা: নিজের ঊর্ধ্বতন যথা বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ও তাদের বরাবর উপরে এবং অধঃস্তন যথা ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি ও তাদের বরাবর নীচে কাউকে যাকাত দেওয়া যাবে না। স্বামী-স্ত্রী একে-অপরকে দিতে পারবে না। - ফাতহুল কাদির: ২/২০৮

মাসয়ালা: নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হলে ভাই-বোন, চাচা, মামা, ফুফু, খালা ও তাদের সন্তানদেরকে যাকাতের টাকা দিতে পারবে। -ফাতহুল কাদির: ২/২০৯, রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪২

মাসয়ালা: মেয়ের জামাই ও ভগ্নিপতিকে যাকাত দেওয়া যাবে, যদি সে যাকাতের উপযুক্ত হয়। -রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৬

মাসয়ালা: যাকাতের টাকা দিয়ে ক্রয়কৃত জিনিষ পরবর্তিতে নিজে নিসাবের মালিক হয়ে যাওয়ার পরও নিজে ব্যবহার করতে পারবে। -ফাতহুল কাদির: ২/২০৫

মাসয়ালা: যাকাতের টাকার মালিক বানিয়ে দেওয়া যাকাত আদায়ের শর্ত। তাই মালিক না বানিয়ে দাওয়াত খাওয়ানোর দ্বারা যাকাত আদায় হবে না। -রদ্দুল মুহতার: ২/২৫৭

মাসয়ালা: দোকান, কারখানা বা বাড়ির কর্মচারী যদি গরিব ও যাকাত নেওয়ার উপযুক্ত হয় তাহলে তাদের নিঃস্বার্থ যাকাত দেওয়া জায়েয হবে, অন্যথায় জায়েয হবে না। তবে তাদের যাকাত দেওয়ার কারণে তাদের প্রাপ্য নিয়মিত পারিশ্রমিকের মধ্যে কোনো ব্যাঘাত যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ যাকাত দ্বারা কারো হক আদায় করা যায় না। বেতন যেহেতু চাকরিজীবীর প্রাপ্য হক, তাই যাকাত দ্বারা বেতনের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হবে না। -মুলতাকাল আবহুর: ১/২৮৪, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম: ৬/২৪৫।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়