শিরোনাম
◈ "কেজিপ্রতি বিশ টাকা খরচ করে আলু ফলায়ে এখন আট টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে, আমরা বাঁচবো কী করে?" ◈ ৬০ মাইল ওপর থেকে মানুষের চেহারা শনাক্ত করবে চীনের গোয়েন্দা স্যাটেলাইট ◈ ভিসার উচ্চ চাহিদার কারণে যাত্রার ৪৫ দিন আগে ভিসার আবেদন করতে বলল থাই দূতাবাস ◈ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ ◈ ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ: যা বলছে পুলিশ ◈ গাজীপুরের আবাসিক হোটেলে অভিযান, আট নারীসহ ৯ জনকে আটক ◈ মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানে ‘কিল সুইচ’! ◈ বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় হচ্ছে বিশেষ বাহিনী ◈ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পিএসজি ◈ বেনফিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনা

প্রকাশিত : ১১ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল
আপডেট : ১২ মার্চ, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এ বছর ফিতরার হার কমল কেন, যা জানাগেল

‘জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটি’ এ বছরের ফিতরা জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করেছে।

এতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এবার সর্বনিম্ন ফিতরার ক্ষেত্রে ৫ টাকা, আর সর্বোচ্চ ফিতরার ক্ষেত্রে ১৬৫ টাকা কমেছে।

ইসলামি শরিয়াহমতে, আটা, যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনির—এই পণ্যগুলোর যেকোনো একটি দিয়ে ফিতরা দেওয়া যায়। এই পাঁচটি পণ্যের মধ্যে গম বা আটাকে সর্বনিম্ন ধরা হয়।

গম বা আটা দিয়ে দিলে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য যা হয়, তা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে। আর যব, খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হয়।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভায় এই পাঁচ পণ্যের বাজারদর যাচাই করে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। ১৪ সদস্যের এই কমিটির সভায় ১০ জন উপস্থিত ছিলেন।

সাদাকাতুল ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গম বা আটা দিয়ে এবারের ফিতরা সর্বনিম্ন ১১০ টাকা, যব দিয়ে ৫৩০ টাকা, খেজুর দিয়ে ২ হাজার ৩১০ টাকা, কিশমিশ দিয়ে ১ হাজার ৯৮০ টাকা ও পনির দিয়ে ২ হাজার ৮০৫ টাকা।

ব্যক্তি নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী, এই পণ্যগুলোর যেকোনো একটি বা এর বাজারমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করতে পারবেন।

হিসাবে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় শুধু ‘যব’-এর ক্ষেত্রে ফিতরা ১৩০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া বাকি চার পণ্যের ক্ষেত্রে ফিতরা কমেছে।

গম বা আটার ক্ষেত্রে ফিতরা ৫ টাকা এবং খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের ক্ষেত্রে ১৬৫ টাকা করে কমেছে।

কেন ফিতরার হার কমে গেল, তা নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ‘জাতীয় সাদাকাতুল ফিতরা নির্ধারণ কমিটি’র একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

সদস্যদের একজন ঢাকার শায়খ জাকারিয়া (রা.) রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ইসলামি বক্তা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ। তিনি বলেন, ‘আমরা যা করেছি, প্রতিটি পণ্যের বর্তমান বাজারমূল্য যাচাই করে করেছি। গরিব-মিসকিনের যাতে উপকার হয় এবং ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এ কাজটি করতে হয়।’

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, গত বছর রমজানে ফিতরা নির্ধারণের সময়ে প্রতি কেজি আটার গড় দাম ছিল ৭০ টাকা। এ বছর ৫ টাকা কমে তা ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে গত বছর ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম আটার দাম অনুযায়ী সর্বনিম্ন ফিতরা ছিল ১১৫ টাকা। এবার সেটি কমে ১১০ টাকা দাঁড়ায়।

মুফতি মিজান জানান, এবার তাঁরা বাজারে প্রতি কেজি আটা ৫৫ থেকে ৬০–৬৫ টাকা পর্যন্ত পান। এর মধ্যে বেশি চাহিদাসম্পন্ন কয়েকটি ব্র্যান্ডের আটাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। তাঁরা ৬৫ টাকা কেজি ধরে ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম আটার বাজারমূল্য পান ১০৭ টাকা। সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সভায় ফকিহরা অধিক সতর্কতা হিসেবে আরও বাড়তি ৩ টাকা যুক্ত করে এবার ১১০ টাকা ফিতরা নির্ধারণ (আটার ভিত্তিতে) করেন।

২০২৪ সালে ফিতরা নির্ধারণের সময় এক কেজি ‘যব’-এর বাজারমূল্য ছিল ১২১ টাকা। এ বছর তা ১৬০ টাকা। গত বছর ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম যবের বাজারমূল্য অনুযায়ী ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০০ টাকা। এ বছর ১৩০ টাকা বেড়ে ৫৩০ টাকা দাঁড়িয়েছে।

একইভাবে গত বছর কিশমিশের কেজি ছিল ৬৫০ টাকা। সে অনুযায়ী, ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিশমিশের দাম ২ হাজার ১৪৫ টাকা ধরে ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এবার কিশমিশের দাম প্রতি কেজি ৬০০ টাকা হারে ফিতরা ১ হাজার ৯৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারের নানা জাতের খেজুর পাওয়া যায়। ফিতরার জন্য তাঁরা বাজারে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘মরিয়ম খেজুর’ বিবেচনায় নেন। গত বছর মরিয়ম (নির্দিষ্ট মান) খেজুরের কেজি ছিল ৭৫০ টাকা। এ বছর তা ৭০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তিন কেজি ৩০০ গ্রাম খেজুরের দাম পড়ে ২ হাজার ৩১০। সে অনুযায়ী, এবার খেজুর দিয়ে কেউ ফিতরা আদায় করতে চাইলে ২ হাজার ৩১০ টাকা দিতে হবে।

ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে পনির সবচেয়ে দামি পণ্য। গত বছর প্রতি কেজি পনিরের দাম ছিল ৯০০ টাকা। সে অনুযায়ী, তিন কেজি ৩০০ গ্রাম পনিরের দাম হিসাব করে ২ হাজার ৯৭০ টাকা ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ বছর পনিরের দাম ৫০ টাকা কমে প্রতি কেজি ৮৫০ টাকায় বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

সাদাকাতুল ফিতরা নির্ধারণ কমিটির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, পনির বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও মালিবাগ এলাকার কয়েকটি দোকানে দাম যাচাই করা হয়েছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের একজন ইমাম এ উপলক্ষে মালিবাগ থেকে পনির কেনেন।

এক কেজি পনিরের বর্তমান বাজারমূল্য ৮৫০ টাকা ধরে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম পনিরের দাম অনুযায়ী এবার সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতীয় সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির সদস্য ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম মুহিব্বুল্লাহ হিল বাকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফিতরা নির্ধারণ কমিটি যে ফিতরা নির্ধারণ করছে, এটাই চূড়ান্ত বা এটা বাধ্যতামূলক নয়। আমরা ঢাকার বাজারদর যাচাই করে ফিতরা নির্ধারণ করেছি। এসব পণ্যের স্থানীয় বাজারমূল্যে তারতম্য রয়েছে। তাই স্থানীয় বাজারদর যাচাই করে নিজেরা নির্ধারণ করে ফিতরা দিলে আদায় হয়ে যাবে।’ উৎস: প্রথম আলো।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়