পার্স-টুডে-মহানবী হযরত মুহাম্মাদ-সা. বলেছেন, মজলুমের অভিশাপকে ভয় কর যদি সে কাফিরও হয়ে থাকে। কারণ মজলুমের অভিশাপ সরাসরি আল্লাহর কাছে পৌঁছায়।
জুলুম অর্থ অত্যাচার বা সীমা লঙ্ঘন তথা নিজের বা অন্যের অধিকারের ওপর জুলুম করা। জুলুম কখনও অন্যদের ওপর হয় কখনও নিজের ওপরও ঘটে। যে মন্দ কাজ করে সে নিজের ওপরও জুলুম করে; কারণ সে নিজের পবিত্র থাকার ও পূর্ণতার দিকে যাওয়াকে পদদলন করল। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা জুলুম করবে তাদেরকে কঠোর শাস্তি আস্বাদন করাব। (সুরা ফুরক্বান, আয়াত-১৯)
মহান আল্লাহর সঙ্গে খোদায়িত্বের যে কোনো বিষয়ে কাউকে অংশীদার করাও বড় ধরনের জুলুম। পবিত্র কুরআনে এসেছে: যখন লোকমান তাঁর ছেলেকে বলেছিল তাকে উপদেশ দেয়ার জন্য: ‘হে বৎস! আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। প্রকৃতপক্ষে শিরক একটি বড় অন্যায়’। পবিত্র কুরআন আমাদের নির্দেশ দেয় যে 'জুলুম করো না এবং জুলুম মেনেও নিও না (লা তুযলিমুউনা ওয়া লা তুযলামুউনা)'। এ পর্যায়ে জুলুম সম্পর্কে কয়েকটি হাদিস তুলে ধরছি:
১. তিন ধরনের জুলুম
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ-সা. বলেছেন, জুলুম তিন ধরনের: প্রথমত এমন কিছু জুলুম আছে যেগুলো দয়াময় আল্লাহ ক্ষমা করেন না, দ্বিতীয়ত এমন কিছু জুলুম আছে যেগুলো দয়াময় আল্লাহ ক্ষমা করেন ও তৃতীয়ত এমন কিছু জুলুম আছে যেগুলো আল্লাহ পার পেয়ে যেতে দেন না। মহান আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয়ই শির্ক বড় জুলুম। আল্লাহ সেইসব জুলুম ক্ষমা করেন যা বান্দাহরা করে নিজেদের ও তাদের প্রতিপালকের মধ্যে, আর বান্দাহরা তাদের পরস্পরের প্রতি যে জুলুম করে আল্লাহ তা ক্ষমা করেন না।
২. মজলুমের অভিশাপের শক্তি
মহানবী-সা. বলেছেন, মজলুমের অভিশাপকে ভয় কর যদি সে কাফেরও হয়ে থাকে। কারণ মজলুমের অভিশাপ সরাসরি আল্লাহর কাছে পৌঁছায়।
৩. জালিমের সঙ্গে সংগ্রামকারী বেহেশতে মহানবীর (সা) সঙ্গে থাকবেন
মহানবী-সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি মজলুমের পক্ষ থেকে জালিমের ওপর প্রতিশোধ নেবেন সে বেহেশতে আমার বন্ধু ও একত্রে বসবাসকারী হবে।
৪. জুলুমের মোকাবেলায় নীরবতা পালনকারীরা শাস্তি পাবে
মহানবী-সা. বলেছেন, মানুষ যখন জালিমকে দেখবে ও তাকে বাধা দিবে না, আল্লাহ তাদের সবাইকে শাস্তির শিকার করবেন বলে আশা করা হয়।
৫. মজলুমকে সাহায্যকারী নয় এমন ব্যক্তি ও জালিমরা আল্লাহর প্রতিশোধের শিকার হবে
মহানবী-সা. বলেছেন, মহান আল্লাহ তাঁর সম্মান ও জালালের কসম খেয়ে বলেছেন যে তিনি জালিমের কাছ থেকে ইহকালে ও পরকালে প্রতিশোধ নেবেন। আর যে মজলুমকে দেখে তাকে সাহায্য করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাকে সাহায্য না করলে নিঃসন্দেহে তার কাছ থেকেও প্রতিশোধ নেবেন মহান আল্লাহ।
৬. জুলুম করো না ও জুলুম মেনেও নিও না
মহানবী-সা. বলেছেন, মহান আল্লাহর কাছ থেকে জুলুম করা ও জুলুম মেনে নেয়া হতে আশ্রয় চাও।
৭. মজলুমের সহায়তা করা শ্রেষ্ঠ ন্যায়বিচার
আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী-আ. বলেছেন, মজলুমকে সহায়তা দেয়া সবচেয়ে বড় ন্যায়বিচার।
৮. বিশ্বে জুলুমের বিরুদ্ধে বিপ্লব করবেন ইমাম মাহদি-আ.
মহানবী-সা. বলেছেন,মাহদি হচ্ছেন আমার উম্মতের এমন ব্যক্তি যিনি গোটা পৃথিবী জুলুম ও অন্যায়ে ভরে যাওয়ার সময় গোটা পৃথিবীতে ন্যায়বিচার ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করবেন।
আপনার মতামত লিখুন :