আমাদের দেশে সাধারণত আলেম-ওলামাদের সম্মান করে ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করা হয়। তবে বেশির ভাগ মানুষই ‘হুজুর’ শব্দের সঠিক অর্থ জানে না।
আমাদের দেশে সাধারণত আলেম-ওলামাদের সম্মান করে ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করা হয়। তবে বেশির ভাগ মানুষই ‘হুজুর’ শব্দের সঠিক অর্থ জানে না। এর ফলে আবার এই শব্দ নিয়ে ভুল ধারণাও ছড়ানো হয়।
কিছু মানুষ মনে করে, ‘হুজুর’ শব্দটি শুধু আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.)-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্য কারো ক্ষেত্রে এই শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। এই ধারণা থেকে তারা বলে, ‘হুজুর একজন!’ ফলে তারা কোনো আলেমকে ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করাকে সমর্থন করে না। মূলত ‘হুজুর’ শব্দের অর্থ হলো, উপস্থিতি, জনাব ইত্যাদি । (ফরহাঙ্গে জাদিদ, পৃ: ৩৭৯)
মানুষকে সম্মান করে যেমন ‘স্যার’ সম্বোধন করা হয়। তেমনি আলেমদের ক্ষেত্রে ‘হুজুর’ শব্দ ব্যবহার করে। দুটো শব্দের অর্থ একই। তাই আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) ছাড়া আর কাউকে হুজুর বলা যাবে না —এ ধারণাটি ভুল। এর পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। (জামিউল ফাতাওয়া : ১/৫৪৫, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১২/১৭১)
অনেক ক্ষেত্রে আবার কিছু কিছু দুষ্ট লোক অন্যকে উপহাস করার জন্য তাচ্ছিল্যের সুরে ‘হুজুর’ শব্দটি ব্যবহার করে। এটা আলেমদের ক্ষেত্রে যেমন করে, তেমনি সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদেরও করে। কেউ সুন্নত মোতাবেক পোশাক পরিধান করলে তাকে উপহার করার জন্য ঠাট্টাচ্ছলে ‘হুজুর’ বলে সম্বোধন করে। এটা নিষিদ্ধ। কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহর বিধান মেনে চলার কারণে উপহাস করে, ইসলামের সাথে উপহাস করার নামান্তর। যা ঈমানের জন্য হুমকি স্বরূপ।
পবিত্র কোরআনে এ ধরনের কাজের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রূপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রূপকারীদের চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ উপনামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নাম কতইনা নিকৃষ্ট! আর যারা তাওবা করে না, তারাই তো জালিম। (সুরা হুজরাত, আয়াত : ১১)
তাই মুমিনের উচিত, দুষ্টমির ছলেও এ ধরনের কাজে লিপ্ত না হওয়া। মহান আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন। উৎস: ডেইলি সান।
আপনার মতামত লিখুন :