আল্লাহ মানুষকে দুভাবে পরীক্ষা করেন। বিপদ দিয়ে এবং নিয়ামত দিয়ে। নিয়ামতের পরীক্ষা বিপদের পরীক্ষার চেয়ে কঠিন। বিপদের সময় মানুষ আল্লাহর স্মরণ করে; তার সাহায্য প্রার্থনা করে। তবে নিয়ামত পেলে খুব কম লোকই আল্লাহর কথা মনে রাখে এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞ হয়। তাই নিয়ামতের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া কঠিন। মানুষের বিবেক-বুদ্ধি, অর্থ-সম্মান ও সন্তানসন্ততি আল্লাহর নিয়ামত। এসবের মোহে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জেনে রেখো, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি তোমাদের জন্য পরীক্ষা। আর আল্লাহরই কাছে রয়েছে মহা পুরস্কার।’ (সুরা আনফাল: ২৮)
যার প্রাচুর্য যত বেশি, তার দায়িত্ব তত বেশি। তাকে জবাবও দিতে হবে বেশি। তাই অর্থ-বিত্তে উল্লসিত হওয়ার সুযোগ নেই। আলী (রা.) বলেন, ‘হে আদমসন্তান, ধন-ঐশ্বর্যে খুশি হইয়ো না। দারিদ্র্যে হতাশ হইয়ো না। বিপদ-আপদে পেরেশান হইয়ো না। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে উন্মত্ত হইয়ো না। স্বর্ণ কিন্তু আগুন দিয়েই পরখ করা হয়।’ (রিসালাতুল মুসতারশিদিন, পৃষ্ঠা ৮৫)
দুনিয়ার প্রাচুর্যে মত্ত হয়ে আল্লাহকে অস্বীকার করে বসা কঠিন অপরাধ। ক্ষণিকের ক্ষমতা হাতের মুঠোয় পেয়ে মৃত্যু ও পুনরুত্থানের অস্বীকৃতি জ্ঞাপন কুফরি। আল্লাহ এসব অপরাধীকে কঠিন সাজা দেবেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের দারিদ্র্য নিয়ে আমি আশঙ্কা করি না। বরং আমার আশঙ্কা হয়, তোমরা দুনিয়ার প্রাচুর্যের অধিকারী হবে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীরা হয়েছিল আর তোমরা প্রতিযোগিতা শুরু করবে, যেমন তারা করেছিল; তখন দুনিয়া তোমাদের ধ্বংস করবে, যেমন তাদের করেছিল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩১৫৮)
মুমিন বিপদেও আল্লাহর আনুগত্য করে, প্রাচুর্যেও আল্লাহর আনুগত্য করে। কোনো অবস্থাতেই তার পথ থেকে বিচ্যুত হয় না। তাই তার জন্য বিপদও যেমন কল্যাণকর, নিয়ামতও কল্যাণকর। সূত্র: আজকের পত্রিকা
আপনার মতামত লিখুন :