শিরোনাম
◈ বাবা রাজনৈতিক মামলায় কারাবন্দি, মা নেই : শিশুদের দেখভাল করতে হাইকোর্টের নির্দেশ ◈ লন্ডনে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ (ভিডিও) ◈ রশিদ লতিফের প্রস্তাব, আইসিসির উচিত পাকিস্তান ও ভারতকে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না দেয়া ◈ চলতি মাসেই শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল ◈ এনসিএল টি-টোয়েন্টি দিয়ে খেলায় তামিম ইকবাল ◈ জাতীয় নির্বাচন নির্ভর করছে সংস্কারের গতির ওপর: এএফপিকে ড. ইউনূস ◈ হাজী সেলিমের ছেলে সাবেক এমপি সোলাইমান আটক ◈ আসিফ নজরুলকে হেনস্তা: চুপ থাকা জেনেভা মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ ◈ ‘ইজতেমার নিয়ন্ত্রণ’ নাকি ‘সাদ কান্দালভি’- তাবলীগ সংকটের কারণ আসলে কী ◈  আমরা কিংস পার্টি নই, আমরা কিংস মেকার:  হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:১২ রাত
আপডেট : ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কাবাঘর ধ্বংস করতে আসা হস্তিবাহিনীকে যেভাবে পরাস্ত করেছিল আবাবিল পাখি

কাবাঘর ধ্বংস করতে আসা হস্তিবাহিনীকে যেভাবে পরাস্ত করেছিল আবাবিল পাখি

আনুমানিক ৫২৫ খ্রিষ্টাব্দে লোহিত সাগর, এডেন উপসাগর ও আরব সাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ইয়েমেন ছিল মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র। সে সময় ইয়েমেনের শাসক ছিলেন ইহুদি সম্রাট জুনাওয়াস। আর আবিসিনিয়ার (বর্তমানে ইথিওপিয়া) তৎকালীন শাসক ছিলেন খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী। অন্যদিকে রোমানরাও খ্রিস্টান ধর্মে বিশ্বাসী ছিল।

ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে, খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীদের ওপর ইয়েমেনের ইহুদি সম্রাট জুনাওয়াস নির্মম নির্যাতন করতেন। এমনকি একপর্যায়ে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীদের আগুনে পুড়িয়েও হত্যা করা হয়। নির্মম এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তৎকালীন আবিসিনিয়ার সরকার রোমান সাম্রাজ্যের সহায়তায় ইয়েমেনে আক্রমণ চালায়। পরবর্তীতে রোমান নৌ বাহিনীর সহায়তায় আবিসিনিয়া নিজেদের ৭০ হাজার সৈন্য তৈরি করে ইয়েমেনের উপকূলে পাঠায়।

সে সময় ইয়েমেনের সঙ্গে আবিসিনিয়ার যে সৈন্যবাহিনী যুদ্ধ করে তার সেনাপ্রধান ছিলেন আরইয়াত। অন্যদিকে সেই বাহিনীরই সাহসী একজন যোদ্ধা ছিলেন আবরাহা। তবে ক্ষমতা দখল নিয়ে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাঁধলে যুদ্ধে আরইয়াত নিহত হয়। শেষ পর্যন্ত আবরাহা পুরো ইয়েমেন দখলে নিয়ে নিজেকে ইয়েমেনে নিযুক্ত আবিসিনিয়া সরকারের গভর্নর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এরপর প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বর্তমান সৌদি আরবের বড় একটি অংশ শাসন করে আবরাহা।

অন্যদিকে শত শত বছর ধরে ভারতবর্ষ ছাড়াও পূর্ব আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার দূর প্রাচ্যের সঙ্গে চলমান ব্যবসায় আরবদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। অন্যদিকে মক্কায় অবস্থিত কাবা ঘর কুরাইশদের কাছেও পবিত্র স্থান ছিল। আবার ইয়েমেনবাসীরাও প্রতিবছর হজ করার জন্য মক্কায় আসতেন।

তবে একসময় ইয়েমেনের শাসক আবরাহা রাজধানী সানাতে কাবার মতো একটি ধর্মীয় স্থাপনা (গির্জা) নির্মাণ করেন। তার ইচ্ছা ছিল মক্কার পরিবর্তে রাজধানী সানা ঘিরে বিশ্ববাসীর প্রার্থনা আবর্তিত হবে। তবে ধর্মপ্রাণ মানুষ কাবা ত্যাগের কথা কোনোভাবেই ভাবতে পারেন না। পরবর্তীতে ক্ষুব্ধ হয়ে আবরাহা কাবাঘর গুঁড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পরবর্তীতে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর জন্মগ্রহণের বছরেই কাবাঘর গুঁড়িয়ে দিতে মক্কার দিকে রওয়ানা হয় আবরাহার বিশাল সৈন্যবহর। ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে, সে সময় ৬০ হাজার সৈন্য ও ৯-১৩টি হাতি নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে আবরাহার সৈন্যবাহিনী।

কিছু কিছু বর্ণনায় পাওয়া যায়, কুরাইশদের একদল যুবক আবরাহার নির্মিত ওই গির্জায় ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে সেই গির্জা পুড়ে ধূলিসাৎ হয়ে গেলে প্রতিশোধ হিসেবে কাবাঘর ধ্বংসে আবরাহা বিশাল বাহিনী প্রস্তুত করে। পথিমধ্যে বেশ কয়েকটি আরব গোত্র আবরাহার বাহিনীর গতিরোধের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে এই সেনাদল মক্কার কাছাকাছি পৌঁছে একটি অগ্রবর্তী দল প্রেরণ করে।

পরবর্তীতে আবরাহা যখন মক্কা অভিমুখে রওনা হওয়ার উদ্যোগ নেন, তখন সামনে থাকা হাতির বহরকে মক্কার দিকে হাঁকাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু সে সময় হাতি না এগিয়ে উল্টো বসে পড়ে। পরে শতচেষ্টার পরও হাতিকে মক্কার দিয়ে নেয়া যায়নি। আবার ইয়ামেনের দিকে নেয়ার চেষ্টা করলে রীতিমতো সেদিকে দৌড়াতে শুরু করে। কিন্তু মক্কার দিকে ফিরলেই আবার বসে পড়ে। এরমধ্যেই মহান আল্লাহর হুকুমে মধ্য সাগরের দিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অচেনা পাখি আসতে শুরু করে, যাদের মুখে ও পায়ে ছিল ছোট ছোট পাথর।

ইতিহাসে এসেছে, ওই সময় প্রতিটি পাখি মুখে একটি এবং দুই পায়ে দুইটি করে কঙ্কর নিয়ে এসেছিল, যা দেখতে ছিল ডাল ও গমের মতো। এই কঙ্কর যার মাথায় পড়েছে, সেই ধ্বংস হয়েছে। এই অবস্থায় আহত হয়ে কয়েকজনকে মারা যেতে দেখে বাকি সবাই দিগ্বিদিক ছুটে পালাতে শুরু করে। বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, এভাবে পালাতে পালাতে আবরাহার বাহিনী মক্কা থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত যেতে থাকে এবং আবাবিল পাখির উপর থেকে ফেলা কঙ্করের আঘাতে মারা যেতে থাকে। ঐতিহাসিক এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে পবিত্র কুরআনের ১০৫ নম্বর সুরায়, যেটি সুরা ফিল নামে পরিচিত। সূত্র : চ্যানেল 24 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়