আমরা মনে করি অন্যের উপকার করলে মনে হয় নিজের সময় ও অর্থ লোকসান হয়। বিষয়টি এমন না, বরং অন্যের উপকারে যা করা হয় সবই ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। যদি নিয়ত ঠিক থাকে।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন হাদিসে পরোপকারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। এখানে পরোপকারের ফজিলত সম্পর্কিত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হলো:
পরোপকার সম্পর্কে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিজি ১৮৪৭)
অপর হাদিসে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। তাই পরোপকারের চেতনায় কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত ৫৭৮৭)
আরেক হাদিসে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়াবি সমস্যাগুলোর একটি সমাধান করে দেয়, আল্লাহ তাআলা তার আখিরাতের সংকটগুলোর একটি মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহ তাআলাও তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (মুসলিম ২৬৯৯)
পরোপকারের জন্য সাহাবিরা একে-অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতেন। এক হাদিসে জায়দ ইবনে আসলাম (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, উমর (রা.)-কে আমি বলতে শুনেছি,
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (তাবুকের যুদ্ধের সময়) আমাদেরকে দান-সদকা করার নির্দেশ দেন। সৌভাগ্যক্রমে ওই সময় আমার সম্পদও ছিল। আমি (মনে মনে) বললাম, যদি আমি কোন দিন আবু বকর (রা.)-কে অতিক্রম করে যেতে পারি, তাহলে আজই সেই সুযোগ।
উমর (রা.) বলেন, আমি আমার অর্ধেক সম্পদ নিয়ে আসলাম। রসুল (সা.) বললেন, তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য তুমি কি রেখে এসেছ? আমি বললাম, এর সমপরিমাণ। আর আবু বকর (রা.) তার পুরো সম্পদ নিয়ে এলেন। তিনি বললেন, হে আবু বকর, তোমার পরিবার-পরিজনদের জন্য তুমি কি রেখে এসেছ?
তিনি বললেন, তাদের জন্য আল্লাহ ও তার রসুলকেই রেখে এসেছি। আমি (মনে মনে) বললাম, আমি কখনও আবু বাকর (রা.)-কে অতিক্রম করতে পারব না। (তিরমিজি ৩৬৭৫) সূত্র : সময়টিভি
আপনার মতামত লিখুন :