শিরোনাম
◈ রাজধানীর শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি গ্রেফতার ◈ টাকা না পেয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে তালা দিলেন গ্রাহকরা ◈ দেখে মনে হয় স্কুল পড়ুয়া কিশোর, বয়স ২২, করেন মাদক ব্যবসা ◈ ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ চার ঘণ্টা করে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকবে ৭০০ যুবক: উপদেষ্টা আসিফ (ভিডিও) ◈ ‘তোমরা রাস্তা বন্ধ করবা, আমরা কি আঙ্গুল চুষবো’ সাধারণ মানুষের আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ (ভিডিও) ◈ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ◈ অলিম্পিক ক্রিকেট সরে যাচ্ছে নিউ ইয়র্কে ◈ শান্তকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে রেখে টি-টোয়েন্টিতে সোহানকে অধিনায়ক করা য়ায়: আশরাফুল ◈ বিদ্যুৎ, পানি এবং অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্পের ক্ষেত্রে দিল্লির সমর্থনের অভাব রয়েছে : ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৪:০২ দুপুর
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০২২, ০৫:৫৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় সাড়ে ১১ কোটি ফলজ চারা রোপন করেছে গ্রামীণ ব্যাংক: চেয়ারম্যান  

অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ

এম এম লিংকন: গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা দেশের পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১১ কোটি ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫১ টি ফলজ চারা রোপন করেছে। এছাড়া ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ভিক্ষুকদের ঋণ কর্মসুচি নিয়ে কাজ করছে ব্যাংকটি। এ পর্যন্ত ৮৩,৩১৪ জন সদস্যকে ( ভিক্ষুক) ১৮.৬৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। এ ঋণ পেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায় জড়িত হয়ে ৪১ হাজার ৩৮৩ জন ত্যাগ করেছে ভিক্ষাবৃত্তি। এছাড়া  চলতি বছরে সবকটি সূচকে সফলতা অর্জন করেছে ব্যাংকটি। গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ একান্ত সাক্ষাতকারে আমাদের সময়.কমকে এ কথা বলেন। 

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকিঁ মোকাবেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় চলতি বছরের আক্টোবর পর্যন্ত ১১ কোটি ৬২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫১ টি ফলজ চারা রোপন করেছে ব্যাংকটির সদস্যরা । এতে করে সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটাবে এবং ভবিষ্যতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে তারা। আমাদের এক কোটি দুই লক্ষ সদস্যকেই বিভিন্ন ফলজ গাছের চারা লাগানোর জন্য উব্ধুদ্ধ করা হয়েছে। অন্ততপক্ষে মোট ২০ কোটি গাছ লাগানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছি আমরা। 

অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, সংগ্রামী সদস্য ( ভিক্ষুক) ঋণ কর্মসূচির আওতায় আরো সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলছে আমাদের। দেশের প্রতিটি জেলা- উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার লক্ষ আমাদের। 

দেশের শিক্ষা প্রসারে গ্রামীণ ব্যাংক কি অবদান রাখছে এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, এই পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৮০৫ জন শিক্ষার্থীকে মোট ৩৯৮.৫১ কোটি টাকার ঋণ। উচ্চ শিক্ষায় ৬ বছরের জন্য ঋণ দেওয়া হয়। এই ৬ বছর ঋণের টাকার কোন সুধ নেওয়া হয় না। তারা যখন চাকরী পাই তখন থেকে তাদের কাছে শতকরা ৫ ভাগ সার্ভিস চার্জে টাকা ফেরত নেওয়া হয়। তবে, এই ঋণরে কোন ইনস্টলমেন্ট ধরা হয় না । আমরা চাই তারা টাকাটা ফেরত দিলেই হবে।  

এছাড়া আমাদের সদস্যদের মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করে গ্রামীণ ব্যাংক। এ পর্যন্ত ৬৫. ৩৯ কোটি টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এই সব মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বৃত্তির টাকা পেয়ে আরো আনন্দিত হয় এবং তাদের উচ্চ শিক্ষিত হতে মনোবল বাড়িয়ে দেয়। 

শিক্ষিত বেকারদের নবীণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করছে গ্রামীণ ব্যাংক উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, ১৮২৭ জনকে নবীণ উদ্যোক্তার ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৬৫.৩৯ কোটি টাকা। নবীণ উদ্যোক্তাদের শুরুতেই কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। আরো নবীণ উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ নিয়ে কাজ করছে গ্রামীণ ব্যাংক। 

এ সব উদ্যোক্তাদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে কোন বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা বেশ কিছু টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার তৈরির বিষয় নিয়ে ভাবছি। এটি বিশেষ করে গ্রামীণ শিক্ষিত নারীদের নিয়ে কাজ করা হবে। ২০২৩ সালের মধ্যেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে গ্রামীণ ব্যাংকের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের সদস্যরা ৫/১০/ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ক্ষৃদ্র ব্যবসা শুরু করলেও অনেকের পুঁজি ১ - ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত মূলধন সম্প্রসারিত করেছে। এ সব নারী উদ্যোক্তা অনেক বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন। অজস্র নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি হওয়াতে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে। এছাড়া তাদের পরিবারে নারীদের মূল্যায়ন অনেক বেড়ে যাচ্ছে। সংসারে উন্নতির ক্ষেত্র নারীদের অপরিসীম ভূমিকা থাকায় তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। অনেক নারী সুনামের সহিত স্থানীয় সরকার পরিষদে প্রতিনিধিত্বও করছে। 

গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা দারিদ্র বিমোচনে কতটা অগ্রসর হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি জরিপে দেখা গেছে গ্রামীণ ব্যাংকে আসার পর ঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে সদস্যদের অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে এক কোটি দুই লাখ সদস্যদের মধ্যে ৬৯ ভাগ সদস্যই দারিদ্র বিমোচন করতে সক্ষম হয়েছে। 

২১ হাজার গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের কি কি সুযোগ- সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সহকর্মীদের আবাসন খাতে ৮৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ সব ঋণ থেকে শতকরা মাত্র ৭ ভাগ সুদ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তারা আাগে মূল টাকা ফেরত দিবে এবং সুদের টাকা দিবে পরে। এরআগে এই খাতে তাদের ঋণের পরিমাণ ছিল অনেক কম এবং সুদের পরিমান দেওয়া লাগতো শতকরা ৮ ভাগ।এছাড়া জ্বালানী তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়েছি যাতায়াত ভাড়া এবং প্রশিক্ষণ ভাতা। 

দীর্ঘদিন পদোন্নতি আটকে থাকায় অনেক কর্মকর্তা- কর্মচারী হতাশার মধ্যে ছিলেন উল্লেখ করে অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ বলেন, চলতি বছরসহ গত দুই বছরে আমাদের ৬ হাজার জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। 

প্রত্যান্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের লক্ষে কাজ করবে গ্রামীণ ব্যাংক মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে মধ্যম এবং উন্নত দেশ গড়তে আমাদের ব্যাংক পালন করবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।     

এমএল/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়