রাশিদুল ইসলাম : ইউবিআইয়ের অভিযোগ, ২০১০ সাল পর্যন্ত ডিএইচএফএলকে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এখনও তারা ৩৪,৬১৫ কোটি টাকা ঋণ শোধ করেনি। ভারতের বৃহত্তম ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে দেওয়ান হাউসিং ফিনান্স কর্পোরেশন লিমিটেড বা ডিএইচএফএলের প্রাক্তন প্রোমোটার কপিল ওয়াধাওয়ানকে অভিযুক্ত করেছে সিবিআই।
এই মামলায় ভারত জুড়ে ১১টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালাচ্ছেন সিবিআই কর্তারা। কপিল ওয়াধাওয়ানের সঙ্গেই ধীরাজ ওয়াধাওয়ানকে এই মামলায় অভিযুক্ত করেছেন সিবিআই কর্তারা। সঙ্গে আরও ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতের ১৭টি ব্যাংককে ৩৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে নীরব মোদির ১৩ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপ বা এবিজি শিপওয়ার্ডের ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণখেলাপকেই সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতারণা হিসেবে ধরা হত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জানিয়েছেন তাদের কাছে এই ঋণখেলাপের অভিযোগ দায়ের করেছে ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া বা ইউবিআই।
এই ঋণখেলাপের মামলায় তারাই সবচেয়ে বেশি আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছে। ইউবিআইয়ের অভিযোগ, ২০১০ সাল পর্যন্ত ডিএইচএফএলকে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, এখনও তারা ৩৪,৬১৫ কোটি টাকা ঋণ শোধ করেনি। এই ঋণের বকেয়া টাকা ২০১৯ সালে অনুৎপাদিত সম্পদ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। ২০২০ সালে তা ঋণখেলাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
২০২০-২১ সালে কেপিএমজির অডিটে ধরা পড়েছে যে ডিএইচএফএলের নেওয়া ওই ঋণের টাকা ওই সংস্থার সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু ছোট সংস্থাকে অগ্রিম ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। যা দিয়ে শেয়ার এবং ডিবেঞ্চার কেনা হয়েছে। ওই সব অর্থ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জমি এবং সম্পত্তিগত শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে বলেই ধরা পড়েছে অডিট রিপোর্টে।
আর, সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সুহানা গ্রুপের সুধাকর রেড্ডি-সহ ১০টি অন্যান্য রিয়েল এস্টেট সংস্থাকে এই মামলায় অভিযুক্ত করেছে সিবিআই। ইউবিআইয়ের অভিযোগ, তাদের দেওয়া ঋণের অর্থ অন্য খাতে ব্যয় করেছে অভিযুক্তরা। সেই ব্যয়ের আর্থিক লেনদেনেও কোনও স্বচ্ছতা নেই। যা আসলে ওই ঋণের টাকা লোপ করে দেওয়ার চেষ্টারই শামিল। আর, সেই উদ্দেশ্যেই দীর্ঘ ১২ বছর ঋণের বকেয়া অর্থ শোধ করেনি অভিযুক্ত ডিএইচএফএলের ঋণখেলাপিরা।
আপনার মতামত লিখুন :