রাশিদুল ইসলাম : ইসলামাবাদে একটি অনুষ্ঠানে প্রয়াত পাক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির পুত্র বিলওয়াল ভুট্টো বলেন, কাশ্মীর নিয়ে বিবাদ, ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের আস্ফালনের মতো বিষয় নিয়ে পড়ে থেকে আমাদের কী লাভ হয়েছে। কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন থাকার ফলে হিন্দুস্থানের যে কোনও পদক্ষেপকেই পাকিস্তান প্রভাবিত করার সুযোগ হারিয়ে ফেলেছে। বরং দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও পাকিস্তান অনেক ভাল অবস্থায় থাকত আজ। দি ওয়াল/ ডন
প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর ৫ আগস্ট ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিষয়ক সংবিধানের ৩৭০ নন্বর অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর পাকিস্তান কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয়। তার ফল ভোগ করতে হয় যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকেও। ভারত আফগানিস্তানে গম পাঠাতে চাইলে পাকিস্তানের ভূ-খণ্ড ব্যবহারের অনুমতি পেতেই কয়েকমাস লেগে যায়। এছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার ফলে দুই দেশই বৈদেশিক বাণিজ্যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
মাস কয়েক আগে বরখাস্ত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাক জাতীয় সংসদে ঘোষণা করেন, যতদিন না হিন্দুস্থান কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দিচ্ছে, ততদিন দুই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্নই থাকবে। কিন্তু বর্তমান সরকার পরিস্থিতিকে অন্যভাবে মোকাবিলা করার পক্ষপাতী। বিলওয়াল মনে করেন, সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকার অর্থ হয় না। বিবাদকে পাশ কাটিয়ে তিনি তাই হিন্দুস্থান-পাকিস্তান সম্পর্ক পুনরায় স্থাপনের পক্ষে সওয়াল করেছেন। তার বক্তব্য, কাশ্মীর দীর্ঘকালীন সমস্যা। সেই বিবাদ মেটাতে হলেও দুই দেশের মধ্যে কথা বলার সম্পর্ক থাকা জরুরি। তার মতে, কাশ্মীর নিয়ে আপস না করেও সম্পর্ক রাখা যায়।
শুধু ভারতের সঙ্গেই নয়, ইমরান বিদায় নেওয়ার আগে রাশিয়া সফর করে যুক্তরাষ্ট্রকে চটিয়ে দিয়ে যান। তার অভিযোগ ছিল, তার সরকারের অকাল পতনের পিছনে বাইডেন প্রশাসনের হাত আছে। যুক্তরাষ্ট্র ওই অভিযোগের জোরালো প্রতিবাদের পাশাপাশি কঠোর পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেয়।
বিলওয়াল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়া লাগিয়েছেন। গত মাসে তিনি ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বর্তমান পাক সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়ে এসেছেন। কারও কারও ধারণা, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপনেও যুক্তরাষ্ট্র পরামর্শ দিয়ে থাকতে পারে বর্তমান পাক সরকারকে। কারণ, এই উপমহাদেশে চীনের প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চিন্তিত। ভারত-পাক সুসম্পর্ক চীনকে চাপে রাখবে, মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।
আপনার মতামত লিখুন :